শোলাকিয়ায় জঙ্গি হামলা : ২৪ আসামির ১৯ জন এনকাউন্টারে
প্রকাশিত হয়েছে : ০৭ জুলাই ২০১৯, ২:০৬:৫২ অপরাহ্ন
জালালাবাদ ডেস্ক ::
আজ রোববার ৭ জুলাই শোলাকিয়া হামলার ঘটনার তিন বছর। ২০১৬ সালের ওই দিনে দেশের ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানে ঈদুল ফিতরের জামাতের আগে মাঠে প্রবেশপথের সবুজবাগ সংযোগ সড়কে মুফতি মোহাম্মদ আলী জামে মসজিদের সামনের তল্লাশি চৌকিতে ভয়ঙ্কর জঙ্গি হামলার ঘটনা ঘটে। এ সময় জঙ্গিদের ছোঁড়া গ্রেনেড, গুলি ও চাপাতির আঘাতে দু’জন পুলিশ কনস্টেবল, একজন গৃহবধূ নিহত হন। এ ছাড়া পুলিশ ও মুসল্লিসহ অন্তত ১৬ ব্যক্তি গুরুতর আহত হন।
সেদিনের স্বজন হারানোর দুঃসহ স্মৃতি আর দেশ কাঁপানো বীভৎস ঘটনা আজও তাড়িয়ে বেড়ায় এ এলাকার মানুষকে। এ ধরণের নৃশংস ও বর্বরোচিত ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়ার পাশাপাশি জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেছেন কিশোরগঞ্জবাসী। সংশ্লিষ্ট আইন কর্মকর্তারা জানান, ইতিমধ্যেই এ মামলার চার্জ গঠন করা হয়েছে এবং সাক্ষীর জন্য দিন ধার্য আছে। কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপারের দাবি, এ ঘটনাটি সফলভাবে তদন্ত শেষে আদালতে চার্জশিট দাখিল করা হয়েছে।
এ মামলার সব আসামির সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদন্ড প্রত্যাশা করছি। ২০১৬ সালের ৭ জুলাই ওই ভয়াবহ জঙ্গি হামলায় কর্তব্যরত পুলিশ কনস্টেবল আনছারুল হক ও জহিরুল ইসলাম এবং সবুজবাগ এলাকার গৃহবধূ ঝর্ণা রাণী ভৌমিক ও আবির হোসেন নামে এক জঙ্গি ঘটনাস্থলে নিহত হয়। এ ছাড়া ১২ পুলিশ সদস্য এবং চার মুসল্লি গুরুতর আহত হন। এ সময় পুলিশ ও র্যাবের অভিযানে গুরুতর আহত অবস্থায় শফিউল ইসলাম ডন নামে এক জঙ্গি এবং তানিম নামে স্থানীয় এক সন্দেহভাজন যুবক আটক হয়। আর এ ঘটনায় কিশোরগঞ্জ সদর মডেল থানায় দায়েরকৃত মামলায় সর্বশেষ মোট ২৪ জঙ্গিকে আসামি করা হয়। এদের প্রায় সবাই হলি আর্টিজান রোস্তোরাঁয় হামলারও আসামি। এসব আসামির মধ্যে ১৯ জনই বিভিন্ন সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে এনকাউন্টারে নিহত হয়।
এ কারণে বেঁচে থাকা পাঁচজনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দেয়া সম্ভব হয়।
এ আসামিরা হলেন, কিশোরগঞ্জ শহরের পশ্চিম তারাপাশা গ্রামের জাহিদুল হক তানিম, গাইবান্ধার রাঘবপুর গ্রামের জাহাঙ্গীর চলম ওরফে রাজীব গান্ধী, চাপাইনবাবগঞ্জের হাজারদীঘা গ্রামের মিজানুর রহমান ওরফে বড় মিজান, গাইবান্ধার গান্ধারপাড়া গ্রামের আনোয়ার হোসেন ও কুষ্টিয়ার সাদীপুর কাবলীপাড়া গ্রামের আব্দুস সবুর খান হাসান ওরফে সোহেল মাহফুজ।
কিশোরগঞ্জের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট শাহ আজিজুল হক জানান, ইতিমধ্যেই এ চাঞ্চল্যকর মামলাটির চার্জ গঠন সম্পন্ন হয়েছে। রাষ্ট্রপক্ষ ও আদালত সাক্ষীর জন্য প্রস্তুত। সাক্ষীর জন্য ২২ জুলাই তারিখ ধার্য্য আছে। তবে এ মামলার আসামিদের প্রায় সবাই ঢাকার হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁয় হামলার মামলারও আসামি এবং এদের মধ্যে ১৯ জন ইতিমধ্যেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে ‘এনকাউন্টারে’ নিহত হয়েছে। তাই অবশিষ্ট পাঁচজনের বিরুদ্ধে পুলিশ চার্জশিট দিতে পেরেছে। কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার মাশরুকুর রহমান খালেদ বিপিএম (বার) বলেন, পুলিশ সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে সফল তদন্ত শেষে মামলাটির চার্জশিট দিয়েছে। এ দেশ কাপাঁনো জঙ্গি হামলা আমাদের জন্যও বিশেষ বার্তা ছিল। আজকে আমরা সর্বোচ্চ সতর্কবস্থা গ্রহণ করে এদের নির্মূল করতে পারছি। এ মামলার সব আসামিরই সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদন্ড প্রত্যাশা করি।