গোলাপগঞ্জবাসীর দুর্ভোগ
প্রকাশিত হয়েছে : ০৮ জুলাই ২০১৯, ৩:৫৫:৩২ অপরাহ্ন
গতকাল দৈনিক জালালাবাদে ‘সামান্য বৃষ্টিতে ডুবে যায় গোলাপগঞ্জের হাট-বাজার’ শীর্ষক একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। এতে বলা হয়েছে দেশের প্রথম সারির একটি উপজেলা হওয়া সত্বেও গোলাপগঞ্জের হাট-বাজারগুলো অনেকটা ব্যবসা বাণিজ্যের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। উপজেলা সদর থেকে শুরু করে বড়ো বাজারসহ গ্রামীন পর্যায়ে ছোট ছোট হাট বাজারগুলো বর্ষাকালে ময়লা আবর্জনায় ভরে আছে। ময়লা আবর্জনার দরুণ পানির নালাগুলো বন্ধ হয়ে যায়। তাই বর্ষা শুরু হলেই বাজারগুলোতে দেখা দেয় জলাবদ্ধতা।
গোলাপগঞ্জের ঢাকা দক্ষিণ বাজার একটি প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী ব্যবসা কেন্দ্র। দেখা যাচ্ছে, ঢাকা দক্ষিণ বাজারসহ আশপাশ এলাকার পানি নিষ্কাশনের একমাত্র পথ কাকেশ্বরী ছড়াটি আজ দখলদারদের কবলে। অবৈধ দখলের দরুন পানি নিষ্কাশনের পথ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ঢাকা দক্ষিণ বাজারের ব্যবসায়ীরা বড়ো ধরণের ক্ষতির শিকার হচ্ছেন। ব্যবসায়ীরা জানান, এক নাগাড়ে কয়েক ঘন্টা বৃষ্টি হলে ছড়া প্লাবিত হয়ে রাস্তা ও দোকানপাট তলিয়ে যায়।
উপরের চিত্রটি দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতির বিপরীত। দেশের প্রবাসী বহুল একটি উপজেলা শহরের অবস্থা যদি এমন হয় তবে বাকীগুলোর অবস্থা সহজেই অনুমেয়। সিলেট নগরীসহ উপজেলা শহরগুলোতে ময়লা আবর্জনা ও জলাবদ্ধতা সমস্যা দীর্ঘদিনের। এতে সংশ্লিষ্ট বাসিন্দাদের যেমন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে, তেমনি পর্যটক দর্শনার্থীদের কাছে পর্যটন জেলা হিসেবে এর মর্যাদা ক্ষুন্ন হচ্ছে। অনেক দেশী ও বিদেশী পর্যটক সিলেটে আসতে নিরুৎসাহিতবোধ করছেন। হিন্দু সম্প্রদায়ের তীর্থস্থান শ্রী চৈতন্যদেবের পৈতৃক নিবাস ঢাকা দক্ষিণে হওয়ায় বাংলাদেশ ও ভারতের হিন্দু সমাজের কাছে ঢাকা দক্ষিণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি এলাকা হিসেবে পরিচিত। কিন্তু অপরিষ্কার-অপরিচ্ছন্নতা এই ঐতিহ্যবাহী ও ঐতিহাসিক স্থানের জন্য দুর্নামের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ঢাকা দক্ষিণসহ গোলাপগঞ্জের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানকে আবর্জনা ও জলাবদ্ধতামুক্ত পরিচ্ছন্ন স্থান গড়ে তোলা হলে স্থানীয় জনগণের দুর্ভোগ লাঘবের পাশাপাশি দেশী বিদেশী দর্শনার্থী ও পর্যটকের আকর্ষনীয় ও জনপ্রিয় স্থান হয়ে ওঠার সকল সম্ভাবনা বিদ্যমান।
যেহেতু অঞ্চলটি প্রবাসী বহুল তাই বেসরকারি বিনিয়োগ বিশেষভাবে প্রবাসীদের বিনিয়োগ ও আর্থিক সহায়তায় এখানকার অবকাঠামোগত উন্নয়ন সম্ভব। পর্যটনের স্থান গুলোতে উন্নত যোগাযোগ ও অন্যান্য সুযোগ সুবিধার ব্যবস্থা করা হলে গোটা অঞ্চলের চেহারা পাল্টে যেতে বাধ্য। আমরা এদিকে স্থানীয় সরকার কর্তৃপক্ষ ও দায়িত্বশীল নেতানেত্রীসহ সচেতন মহলের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। আশা করি, শীঘ্রই তারা এ ব্যাপারে সময়োপযোগী কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন।