সুরমা তীরের অর্ধশতাধিক অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ
প্রকাশিত হয়েছে : ০৮ জুলাই ২০১৯, ৪:২৫:৫৯ অপরাহ্ন
রোববার সকাল ১১টা। নগরীর কাজির বাজারস্থ সুরমা নদীর তীরে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে বুল্ডোজার, হাতুড়ি আর ভারি যন্ত্র নিয়ে হাজির প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং পুলিশ সদস্যরা। সাধারণ পথচারীরা না বুঝলেও অবৈধ স্থাপনার মালিক শ্রমিকরা বুঝে গেছেন কী ঘটতে যাচ্ছে আজ। তাই তোড়জোড় শুরু হয় মালামাল সরিয়ে নেয়ার। মোবাইল ফোনে একে অন্যকে অবহিত করতে থাকেন স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান শুরু হয়েছে। অনেকেই নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের পণ্য বা স্থাপনার গুরুত্বপূর্ণ সরঞ্জাম সরিয়ে নিতে সক্ষম হলেও সেই স্থাপনার আর নেই। কাজিরবাজার খেয়াঘাট থেকে কাজিরবাজার ব্রীজের নিচের মাছবাজার পর্যন্ত প্রায় ৬৩ টি স্থাপনা গুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। নদীর তীর এখন খুপড়ি ঘরহীন।
স্থানীয় ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, তিন দিন আগেই অবৈধ স্থাপনা থেকে মালামাল এবং লোকজনকে অন্যত্র চলে যেতে শেষবারের মতো নোটিশ দেয়া হয়েছিল। কিছু হবেনা ভেবে হয়তো ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছিলেন স্থাপনার মালিক শ্রমিকরা।
কিন্তু এবার সব গুড়িয়ে দেয়া হলো। বুল্ডোজার আর হাতুড়ির আঘাতে কয়েক ঘন্টার অভিযানে কাজির বাজারের সুরমা তীরের সব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, জেলা প্রশাসন, সিটি করপোরেশন ও পানি উন্নয়ন বোর্ডেও স্থানীয় কর্তৃপক্ষ যৌথভাবে এই অভিযান পরিচালনা করে অবৈধ স্থাপনাগুলো উচ্ছেদ করে। অভিযানে নেতৃত্বদানকারী নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট খৃস্টফার হিমেল রিচিল জানিয়েছেন, উচ্ছেদের আগে অবৈধ স্থাপনা চিহ্নিত করে এর আগে বারবার মাইকিং ও নোটিশ দেয়ার পরও স্বেচ্ছায় সরিয়ে না নেয়ায় স্থাপনাগুলো গুড়িয়ে দেয়া হয়েছে।
সিলেট নগরীর কিন ব্রিজ থেকে কাজিরবাজার সেতু পর্যন্ত সুরমা নদীরপাড়ে কয়েক শত অবৈধ স্থাপনা রয়েছে। বেশিরভাগ ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান ছিল সুপারি, সাদা পাতা, পুরাতন টিন, দরজা জানালা, মুদির দোকান, রেস্টুরেন্টসহ ছোট ছোট দোকান। প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় দীর্ঘদিন থেকে নদীর তীর দখল করে এসব স্থাপনাগু নির্মান করে ব্যবসা চালিয়ে আসছিলেন ব্যবসায়ীরা। অভিযানে নেতৃত্বদানকারী নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট খৃস্টফার হিমেল রিচিল সংবাদ মাধ্যমকে জানান, ‘বারবার নোটিশ দেয়ার পরও অবৈধ দখলদাররা স্থাপনাগুলো সরিয়ে নেয়নি। তাই অভিযান চালিয়ে প্রায় ৬০টি স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে। এই অভিযান চলমান থাকবে।’
জানা গেছে শেখঘাট মসজিদ পর্যন্ত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কোথাও সম্পূর্ণ স্থাপনা কোথাও দেয়াল ভেঙ্গে সরকারি জমি ছেড়ে দিতে প্রশাসন চিহ্নিত করে দিয়েছে। শীঘ্রই সেই সব এলাকায় অভিযান পরিচালনা করা হবে।