‘গোপালের কপাল’ রোহিংগা শরণার্থীদের !
প্রকাশিত হয়েছে : ০৯ জুলাই ২০১৯, ১:৩৮:৫৮ অপরাহ্ন
বর্ষাঋতু আসতেই বাংলাদেশে আশ্রয়গ্রহণকারী লাখ লাখ রোহিংগা শরণার্থীর জীবন বিপর্যয় নেমে এসেছে। অনেকটা ‘গোপালের কপালে’র ন্যায়। প্রবল বর্ষণ, ঝড় ও বর্ষণের ফলে ভয়াবহ ভূমিধসের কবলে পড়েছেন এসব হতভাগ্য শরণার্থী। ভূমি ধসের ফলে ইতোমধ্যে ৪ হাজারেরও বেশী রোহিংগা আশ্রয়হীন হয়ে পড়েছেন। ১ জন মারাও গেছেন। গত শনিবার ৭২ ঘন্টায় ৩৫ সেন্টিমিটার বৃষ্টিপাত হলে কক্সবাজারের শরণার্থী শিবিরে ভূমিধসের ঘটনা ঘটে।
গত ক’দিনে শরণার্থী শিবির এলাকায় ২৬ টি ভূমিধস সংঘটিত হয়েছে। এসময় তুফানে অসংখ্য গাছপালা উপড়ে পড়ে। এতে গৃহ নির্মাণ ও জ্বালানী কাঠ সংগ্রহে শরণার্থীদের সমস্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থার কর্মকর্তা আরিজ রহমান জানান, ঘূর্নিঝড়ে প্রায় ৩০টি ক্যাম্প ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। দেয়াল ধসে মারা যান এক প্রৌঢ় মহিলা। মূল কুতুপালং ক্যাম্পের ৪০ বছর বয়সী রোহিংগা নূর মোহাম্মদ বলেন, তার ১২ জন আত্মীয় তারপুলিনে ছাওয়া কুটির ছেড়ে পাহাড়ে আশ্রয় নিয়েছে। তিনি বলেন, আমার ঘর ইতোমধ্যে জনাকীর্ণ। আমি উদ্বিগ্ন, কীভাবে এসব লোকের খাবার যোগাড় করবো। এছাড়া ‘নো ম্যানস ল্যান্ডে’ আশ্রয় নেয়া ৬ হাজার রোহিংগাও ঝড়ে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্যাম্পের নেতা দিল মোহাম্মদ বলেন, শিশুরা ডায়রিয়ায় আক্রান্ত। পানীয় জলের তীব্র সংকট বিরাজ করছে। নিকটবর্তী নদীতে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের বাঁধ নির্মানের ফলে অধিকাংশ ক্যাম্প বা শিবিরে হাঁটুপরিমান পানি জমেছে।
বাংলাদেশের শরণার্থী কমিশনার মোহাম্মদ আবুল কালাম গত রোববার বলেন, জরুরী ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। ২০১৭ সালে মৌসুমী ঝড়তুফানে শরণার্থী শিবিরে ১৭০ ব্যক্তির প্রাণহানি ঘটে। গত বছর ভূমি ধস ও বন্যার আশংকায় ৩০ হাজার রোহিংগাকে অন্যত্র সরিয়ে নেয়া হয়।
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের আগষ্ট মাসে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সশস্ত্র সামরিক অভিযানের ফলে ৭ লাখ ৪০ হাজার রোহিংগা পালিয়ে যায়। তারা যোগ দেয় ইতোমধ্যে সীমান্ত জুড়ে বসবাসকারী প্রায় ২ লাখ শরণার্থীর সাথে। বাংলাদেশ ১ লাখ রোহিংগা শরণার্থীকে বঙ্গোপসাগরের একটি দূরবর্তী দ্বীপে পুনর্বাসিত করতে চায়। কিন্তু শরণার্থীরা ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো এর বিরোধিতা করছে।
অনুবাদ : নিজাম উদ্দীন সালেহ
সূত্র : ডেইলী সাবাহ