তাহিরপুর-বাদাঘাট সড়ক উপজেলাবাসীর গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে
প্রকাশিত হয়েছে : ১০ জুলাই ২০১৯, ২:৪০:০৬ অপরাহ্ন
তাহিরপুর সংবাদদাতা::
সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ তাহিরপুর-বাদাঘাট সড়কটি স্বাধীনতার ৪৮ বছর পার হলেও চলাচলের উপযোগী না হওয়ায় উপজেলাবাসীর গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ সড়কে প্রয়োজনীয় সংস্কার না হওয়ায় ভাঙ্গাচোরা থাকায় যানবাহন চলাচল করতে গেলেই প্রতিদিনেই ঘটছে নানা রকমের দুর্ঘটনা। গত বছর এ সড়কে প্রায় ৪ কোটি টাকা বরাদ্দ হলেও এই সড়কে কাজের নামে লুটপাট করা হয়েছে বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর। এই গুরুত্বপূর্ণ সড়কটি দ্রুত সংস্কারে বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বার বার তাগিদ দেবার পরও কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। ফলে সবার মাঝে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী অধিদপ্তর (এলজিইডি) তাহিরপুর উপজেলা কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার তাহিরপুর-বাদাঘাট সড়কের দূরত্ব ৮ কিলোমিটার। উপজেলার ব্যবসা বাণিজ্যের প্রাণকেন্দ্র বাদাঘাট বাজার, ৪টি ইউনিয়ন, ৩টি শুল্ক ষ্টেশনে যেতে ও উপজেলা সদর, হাসপাতালে আসতে হলে এই সড়কটি ব্যবহার করতে হয়। ১৯৯৩ সালে এলজিইডি সড়কটি নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহন করেন। পরে বিভিন্ন চড়াই উতরাই পেরিয়ে ২০১১-১২ অর্থ বছর পর্যন্ত সড়কের ৬ কিলোমিটার কাজ পাকা করা হয়েছে। এর পর গত ২০১৮ সালের শুরুর দিকে এই সড়কটিতে তিনটি ভাগ করে মেরামতের জন্য প্রায় ৪ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয় সরকার।
কিন্তু অর্থ বরাদ্দ দিলেও এই সড়কের বৌলাই নদীর উপর নির্মিত ব্রীজ থেকে সূর্যেরগাঁও ৪০-৪৫ ফুট পাকা সড়ক নির্মান কাজ হয়, যা একবারেই নি¤œ মানের। ব্রীজ থেকে টাকাটুকিয়া গ্রাম পর্যন্ত কাজ করার কথা ছিল কিন্তু কোন কাজ হয় নি। টাকাটুকিয়া ব্রীজে দুই পাশে মিলিয়ে বল্ক দিয়ে ২৫ ফুট সড়কের কাজ হয়েছে একবারেই নি¤œ মানের। টাকাটুকিয়ার ব্রীজ থেকে পাতারগাঁও (ইসলামপুর) পর্যন্ত সড়কের কাজ করার কথা কিন্তু কোন কাজ হয় নি এবং পাতারগাঁও (ইসলামপুর) থেকে বাদাঘাট পর্যন্ত ৩ কিলোমিটার সড়কে যা ঢালাইয়ে কাজ হয়েছে তাও একবারেই নি¤œমানের বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর। ফলে ভাঙ্গা অংশে কাজ না হওয়ায় বিভিন্ন ধরনের যানবাহন চলাচল করছে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে। আর বর্ষায় নৌকার উপরেই ভরসা করতে হচ্ছে সর্বস্তরের জনসাধারনকে।
উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের গ্রাম থেকে তাহিরপুর উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, কলেজ আসা শিক্ষক, ছাত্র-ছাত্রী, অভিভাবক ও তাহিরপুর বাজারের ব্যবসায়ী রফিকুল, ইসলাম, সাজিদসহ স্থানীয় এলাকাবাসী জানান, তাহিরপুর-বাদাঘাট রাস্তাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই রাস্তা ভাঙ্গা চোরা থাকায় যাতায়াতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। সাথে পরিবহনে অতিরিক্ত টাকা দিতে হচ্ছে। আর বৃষ্টি হলে চলাচল করা যায় না।
এলজিইডি প্রকৌশলী অধিদপ্তর সাইদুল্লাহ মিয়া জানান, এই সড়কে কাজ হয়েছে তার অনুমোদন পূর্বে হয়েছিল। আমি এখানে নতুন যোগদান করে সেই কাজের তদারকি করেছি। এই সড়কের টাকাটুকিয়ার ব্রীজ থেকে পাতারগাঁও (ইসলামপুর) পর্যন্ত সড়কের কাজ করার কথা ছিল তা এখন বন্ধ রয়েছে। এই অংশে বড়ো প্রকল্পের মাধ্যমে উড়াল সড়ক হবে বলে কাজ হচ্ছে না।
তাহিরপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান করুনা সিন্ধু চৌধুরী বাবুল জানান, তাহিরপুর-বাদাঘাট সড়ক একটি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক। এ সড়কে কয়েকটি স্থানে বেহাল দশার কারণে চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছে ৪ টি ইউনিয়নবাসীকে। আর প্রতিদিন বিভিন্ন ধরনের যানবাহন চলাচল করেছে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে। জনস্বার্থে দ্রুত মেরামত করা খুবেই প্রয়োজন।