তায়েফ : ঐতিহ্য ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্যমন্ডিত অঞ্চল
প্রকাশিত হয়েছে : ১১ জুলাই ২০১৯, ২:২৩:১৩ অপরাহ্ন
সৌদী আরবের তাবুক অঞ্চলটি ইসলামের ইতিহাসে এক গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে আছে। এখানে সংঘটিত হয় ঐতিহাসিক তাবুক যুদ্ধ। মহানবী (সাঃ) এ যুদ্ধে অংশ নেন। এছাড়াও পর্যটনের অনেক আকর্ষণীয় বিষয় রয়েছে এই তাবুক অঞ্চলে। এখানে লোহিত সাগর, বিস্তৃত সমতলভূমি এবং সুউচ্চ পর্বতমালাসহ অনেক প্রাচীন ঐতিহাসিক স্থাপনা বিদ্যমান।
এ অঞ্চলে অনেকগুলো উৎসবের আয়োজন করা হয়। এর জলবায়ূ চমৎকার। গ্রীষ্মকালে এই স্থান পর্যটক ও দর্শনার্থীদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে ওঠে। তাবুক পশ্চিমে লোহিত সাগর এবং পূর্বে আল নাফুজ মরুভূমির মধ্যবর্তী স্থানে অবস্থিত। এর সমুদ্রোপকূলবর্তী ৫টি প্রদেশ হচ্ছে, হাকল, দাব্বা, আল-ওয়াজিহ, আমলাজ ও আল-বাদা। তাবুক নগরী সৌদী আরবের উত্তরাঞ্চলীয় এলাকার সর্ববৃহৎ ও সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নগরীগুলোর একটি। খৃষ্টপূর্ব পঞ্চম শতাব্দি থেকে এর ঐতিহ্য সুবিদিত। এর অনেকগুলো ডাক নাম রয়েছে- যেমন ‘গোলাপের তাবুক’ এবং ‘উত্তরাঞ্চলীয় প্রবেশদ্বার’।
তাবুক অঞ্চলে পানির বিপুল মজুদ বিদ্যমান। এর মানে হচ্ছে এটা রাজ্যের বৃহত্তম কৃষি এলাকা। গম, ফলমূল ও শাকসবজী উৎপাদন ছাড়াও তাবুকে অজস্ত্র গোলাপফুল জন্মে- যা দেশের অভ্যন্তরে যেমন জনপ্রিয়, তেমনি বিদেশেও রফতানী হয়। তাবুক নগরীর উল্লেখযোগ্য ঐতিহ্য এলাকার মধ্যে আল তাওবা মসজিদ ও এর নিকটবর্তী তাবুক দুর্গ অন্তর্ভুক্ত। মহানবী (সাঃ) তাবুক অভিযানের সময় তাবুক দুর্গের স্থানে শিবির স্থাপন করেছিলেন। প্রাচীন আল তাওবা মসজিদটি নির্মাণ করেন উমাইয়া খলিফা উমর বিন আবদুল আজিজ। মসজিদটি মির্মিত হয় মহানবীর (সাঃ) প্রার্থনার স্থানে। তাবুক নগরীর ঐতিহাসিক ও আকর্ষণীয় রেলওয়ে স্টেশনটি ৮০ হাজার বর্গমিটার এলাকা জুড়ে প্রতিষ্ঠিত। এর নিকটে অবস্থিত তাবুক আঞ্চলিক জাদুঘর।
তাবুকে আকর্ষণীয় পর্যটনস্থলগুলোর মধ্যে আরো রয়েছে ‘শোয়াইব গুহা’ (মাঘাইর শোয়াইব) -যা নাবাতীয় আমলের। বিশাল তাবুক পর্বতমালায় অংকিত আছে তামুদ ও নাবাতীয় স্ক্রিপচার। তাইমার হাজ্জাজ কূপ হচ্ছে রাজ্যের গুরুত্বপূর্ণ কূপসমূহের একটি। এটা খৃষ্টপূর্ব হাজার বছর আগের। এছাড়া এখানে রয়েছে তাইমা দুর্গ, বাদশাহ আবদুল আজিজ দুর্গ ও আল-হামরা প্রাসাদ। সাম্প্রতিক কালে, তাবুকে চলেছে শাহুরিক ও সংস্কৃতিক পুনর্জাগরণ। নির্মিত হচ্ছে নতুন নতুন হোটেল। এ অঞ্চলের নতুন বিমান বন্দরে যাত্রীদের ভিড় বাড়ছে। বিমান বন্দরটি চালু হয় ২০১১ সালে। এক বছরে এর যাত্রী সংখ্যা উন্নীত হয়েছে ১৫ লাখে। বর্তমানে তাবুক নগরী তার গোলাপ ও ফল উৎসবের প্রস্তুত নিচ্ছে। এটা এ অঞ্চলের সর্ববৃহৎ উৎসব। এতে প্রায় ৫ লাখ দর্শনার্থীর আগমন ঘটবে বলে প্রত্যাশা।
অনুবাদ : নিজাম উদ্দীন সালেহ
সূত্র : আরব নিউজ