শহরের যানজট নিরসনে বিকল্প সড়কের নির্মাণ কাজ প্রক্রিয়াধীন—পৌর মেয়র কামরান
প্রকাশিত হয়েছে : ১২ জুলাই ২০১৯, ১:৩৬:২৬ অপরাহ্ন
আব্দুর রব, বড়লেখা থেকে ::
বড়লেখা পৌরসভার তৃতীয়বার নির্বাচিত পৌর মেয়র আবুল ইমাম মো. কামরান চৌধুরী বলেছেন, ১৮ লাখ টাকা বকেয়া বিদ্যুৎ বিলের বোঝা মাথায় নিয়ে সাড়ে ৩ বছর পূর্বে তিনি পৌর মেয়রের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। পৌরসভার নিয়মিত বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করেও বকেয়া বিদ্যুৎ বিলের পরিমান বর্তমানে তিনি পৌনে ৩ লাখ টাকায় নামিয়ে এনেছেন। পৌরসভার সীমানার মধ্যের প্রতিটি রাস্তাঘাট, ব্রিজ, কালভার্ট ও ড্রেনের বেহাল অবস্থা থেকে পৌরবাসীর চলাচলের উপযোগী করেছেন। পৌরসভার ভয়াবহ জলাবদ্ধতা সৃষ্টির কারণ চিহ্নিত করে তা দ্রুত সমাধানের ব্যবস্থা স্বরূপ পৌরবাসী ও প্রশাসনের সহযোগিতায় নিখড়ীছড়া ও ষাটমাছড়া খনন করেছেন। সড়ক ও জনপথের রাস্তার পাশের ভরাট করা খাল-নালা খনন করে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা নেয়ায় গত ২ বছর ধরে পৌরসভার উত্তর চৌমুহনী, হাটবন্দ, পানিধার, আইলাপুর, কলেজ রোডসহ ভুক্তভোগী এলাকার জনসাধারণ, ব্যবসায়ী ও কলোনিবাসীকে আর দুর্ভোগ পোহাতে হয়নি।
মাননীয় পবিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রী শাহাব উদ্দিন এমপির পরামর্শ ও সার্বিক সহযোগিতায় পৌরসভার অন্যান্য সকল সমস্যার সমাধান তার মেয়াদের মধ্যেই করতে সক্ষম হবেন। এজন্য তিনি প্রশাসন, ব্যবসায়ীসহ সকল শ্রেণীর জনসাধারণের সহযোগিতা চান। শহরের তীব্র যানজট নিরসনের লক্ষ্যে বিকল্প সড়ক নির্মাণের পরিকল্পনা অনেক আগেই নেয়া হয়। এ বিকল্প সড়ক নির্মাণের কাজ বাস্তবায়ন করবে সড়ক ও জনপথ বিভাগ। সম্প্রতি মন্ত্রী মহোদয় বিকল্প সড়ক নির্মাণের ব্যাপারে সড়ক ও জনপথ বিভাগের উর্ধ্বতন পর্যায়ে আলাপ আলোচনা করেছেন। ইতিমধ্যে এর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
বুধবার দুপুরে পৌরসভা আয়োজিত নাগরিক সমাবেশে উপস্থিত সুধী মহল পৌরসভার বিভিন্ন সমস্যা তুলে ধরলে এর জবাবে পৌরমেয়র আবুল ইমাম মো. কামরান চৌধুরী এসব কথা বলেন।
প্যানেল মেয়র আলী আহমদ চৌধুরী জাহিদের সভাপতিত্বে ও পৌর কাউন্সিলার রেহান পারভেজ রিপনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত নাগরিক সমাবেশে বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক ও পৌর বাসিন্দা মরিয়ম জামিলা বলেন, এ পৌরসভার যত্রতত্র ময়লা আবর্জনায় নোংরা পরিবেশ বিরাজ করে। পৌর কর্তৃপক্ষ এদিকে যেন নজর দেন। প্রতিদিন যেন ডাস্টবিনগুলো পরিস্কার করা হয়। ড্রেনেজ ব্যবস্থার যেন আরো উন্নতি করেন। শিশুসহ সব শ্রেণীর মানুষের অবসর সময় কাটানোর জন্য বিনোদন কেন্দ্র তৈরী করা হয়।
পৌরসভার বাসিন্দা ও সমাজ সেবক ধনঞ্জয় দে জানান, পৌরসভার অনেক রাস্তার বেহাল অবস্থায় মারাত্মক দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। কোন কোন রাস্তা সংস্কারের ৬ মাসের মধ্যেই ভেঙ্গে খানাখন্দে পরিণত হয়। তিনি দাবী করেন রাস্তা সংস্কারে কত টাকা বরাদ্দ হয় তা যেন অবহিত করা হয়। এতে ঠিকাদার কাজে অনিয়ম করলে তা প্রতিরোধ করা সহজ হবে। সাবেক পৌর কাউন্সিলার ফাতেমা বেগম জানান, তার বাড়ির রাস্তা দীর্ঘদিন ধরে এতোই বিধ্বস্ত, এটি পাকা রাস্তা না কাঁচা রাস্তা তা সনাক্ত করা কঠিন।
ব্যবসায়ী সাইফুল ইসলাম খোকন জানান, নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে পৌর সুপার মার্কেটে পাশাপাশি মোরগ, মাছ, শুটকি ও সবজির দোকান বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এতে মারাত্মকভাবে পরিবেশের ক্ষতি হচ্ছে।
গুরুত্বপুর্ণ রাস্তায় ষ্টীট লাইট স্থাপন, বখাটেদের উৎপাত ঠেকাতে নারীশিক্ষা একাডেমি ডিগ্রী কলেজ ও বালিকা স্কুলের সামনে সিসি ক্যামেরা স্থাপনের দাবীসহ পৌরবাসীর নানা সসম্যা তুলে ধরেন সিনিয়র শিক্ষক রিয়াজুল ইসলাম, সাংবাদিক ও সমাজসেবক নুরুল ইসলাম, ব্যবসায়ী জাকির হোসেন। নাগরিক সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন এনআরবি ব্যাংকের পরিচালক বিশিষ্ট শিল্পপতি আব্দুল করিম, উপজেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার উদ্দিন, বড়লেখা হাজীগঞ্জ বাজার বণিক সমিতির সভাপতি হাজী আলাউদ্দিন আলাই ডিলার, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান তাজ উদ্দিন প্রমুখ।