অতিবৃষ্টির কারণে টিলা ধসের আশংকা : ঝুঁকিতে হাজারো পরিবার
প্রকাশিত হয়েছে : ১৬ জুলাই ২০১৯, ৬:৪৪:৫৫ অপরাহ্ন
নিজাম উদ্দিন সালেহ ::
সিলেট নগরীর কয়েক হাজার পরিবার অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ পরিবেশে পাহাড় ও টিলার পাদদেশে বসবাস করছে। অবাধে পাহাড় ও টিলা কর্তন এবং বৃষ্টির পানিতে ভূমিক্ষয় ভূমিধসের ঝুঁকি বৃদ্ধি করছে। দেখা যাচ্ছে, সিলেট নগরী, নগরীর উপকণ্ঠ এবং জেলার বেশ কিছু উপজেলায় সহ¯্রাধিক পরিবার পাহাড় ও টিলার পাদদেশে কাঁচা ঘরবাড়ি তৈরী করে বাস করছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে প্রভাবশালী লোকজন পাহাড় ও টিলায় কাঁচা ঘরবাড়ি বানিয়ে ভূমিহীন লোকজনকে ভাড়া দিচ্ছে।
জাহাঙ্গীরনগর, গোয়াবাড়ি, হাওলাদার পাড়া, দলিয়া ও বড়োগুল এলাকায় শতাধিক পরিবার এভাবে ঝুঁকি নিয়ে পাহাড় ও টিলার ঢালুতে ঘর বানিয়ে বসবাস করছে। গত কয়েক দিনের বর্ষণে কিছু পাহাড়-টিলা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠেছে। স্থানীয় লোকজন যে কোন সময় দুর্ঘটনার আশংকা করছেন।
জাহাঙ্গীরনগর এলাকার টিলার পাদদেশে বসবাসকারী গৃহবধূ আছমা বেগম বলেন, আমার স্বামী বাড়িটির ব্যবস্থা করেছেন। আমরা জানি যে, বর্ষাকালে এখানে বাস করা ঝুঁকিপূর্ণ। কিন্তু এখানে থাকা ছাড়া তো আমাদের আর কোন জায়গা নেই। একই এলাকার অপর বাসিন্দা মরিয়ম বেগম বলেন, কোথায় যাবো আমরা ? আমি জানি যে, যখন বৃষ্টিপাত হয় তখন এখানে পাহাড় ধসে পড়ার ঝুঁকি রয়েছে। কিন্তু আমাদের যাওয়ার আর কোন জায়গা নেই। তাই ঝুঁকি নিয়েই আমরা এখানে বাস করছি।
এছাড়া নগরীর বালুচর, বিমানবন্দর সড়ক, খাদিম নগর, জোনাকী, ইসলামপুর মেজরটিলা ও মংলির পাড়া এলাকায় আরো কয়েকশ’ পরিবার এভাবে ঝুঁকিপূর্ণ পরিবেশে পাহাড় ও টিলার পাদদেশে বাস করছে। নগরীর বাইরে বিভিন্ন উপজেলায়ও একইভাবে বহু পরিবার ঝুঁকি নিয়ে বাস করছেন। জৈন্তাপুর উপজেলার নয়াখেলা, অঞ্জগ্রাম, ফেঞ্চুগঞ্জ, গোলাপগঞ্জ ও বিয়ানী বাজারেও বহু পরিবার এভাবে ভূমিধসের ঝুঁকি নিয়ে পাহাড়-টিলার ঢালুতে বাস করছে। সিলেট নগরীসহ বিভাগে এভাবে কতো পরিবার ঝুঁকিপূর্ণ পরিবেশে পাহাড়-টিলার পাদদেশে বাস করছে, এর কোন সুনির্দিষ্ট পরিসংখ্যান নেই জেলা প্রশাসনের কাছে। প্রশাসনের জনৈক দায়িত্বশীল কর্মকর্তা বলেন, আমরা পাহাড় ও টিলার বেসরকারী মালিকানার ক্ষেত্রে হস্তক্ষেপ করতে পারি না। তবে জনগণের মাঝে ভূমিধসের ব্যাপারে সচেতনতা সৃষ্টির চেষ্টা চালাচ্ছি। এদিকে চট্টগ্রামের পাশাপাশি সমানতালে বৃষ্টিপাত হচ্ছে সিলেট বিভাগেও। অন্যদিকে বৃষ্টি ও উজান থেকে আসা পাহাড়ি ঢলের কারণে এ বিভাগের বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এ রকম পরিপ্রেক্ষিতে সোমবার চট্টগ্রামের পাশাপাশি সিলেট বিভাগের পাহাড়ি এলাকায় ভূমিধসের পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদফতর।
সোমবার ভারী বৃষ্টিপাতের সতর্কবার্তায় আবহাওয়া অধিদফতর বলেছে, ‘বাংলাদেশে মৌসুমী বায়ু সক্রিয় থাকার কারণ সোমবার সকাল ১০টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে রংপুর, ময়মনসিংহ, সিলেট এবং চট্টগ্রাম বিভাগের কোথাও কোথাও ভারী (৪৪ থেকে ৮৮ মিলিমিটার) থেকে অতি ভারী (৮৯ মিলিমিটারের বেশি) বৃষ্টিপাত হতে পারে। অতি ভারী বৃষ্টির কারণে চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের পাহাড়ি এলাকায় কোথাও কোথাও ভূমিধসের আশংকা রয়েছে।’