তাহিরপুরে বন্যা কবলিত এলাকায় ত্রাণের জন্য হাকাকার
প্রকাশিত হয়েছে : ১৬ জুলাই ২০১৯, ১২:০৭:৪০ অপরাহ্ন
সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলায় টানা বৃষ্টিপাত ও পাহাড়ি ঢলের পানিতে বন্দী হয়ে পড়েছেন হাজার হাজার মানুষ। যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে বিশুদ্ধ পানি ও খাবার সংকট দেখা দিয়েছে পানিবন্দী পরিবারগুলোতে। বন্যা কবলিত গ্রামগুলোতে অবস্থানকারী মানুষজন ত্রাণের জন্য অপেক্ষায় আছে। ত্রাণ না পাওয়ায় হাহাকার বিরাজ করছে। এদিকে, কিছু কিছু গ্রামে সরকারীভাবে, ব্যক্তিগত উদ্যোগে অর্থ, শুকনো খাবার বিতরন করা হচ্ছে, তা চাহিদার তুলনায় খুবই সামান্য। অন্যদিকে সরকারী ত্রাণ দিচ্ছে এমন খবর পেলেই ছুটে আসছে দলে দলে ক্ষতিগ্রস্তরা।
কথা হয় তাহিরপুর উপজেলা সদরে সরকারী সহযোগিতা নিতে আসা বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত রতনশ্রী গ্রামের বাসিন্দা ফিরোজা বেগমের সাথে। তিনি জানান, অনেকের বসতভিটা ঢেউয়ের কবলে ভেঙ্গে পড়ায় তারা সবাই প্রতিবেশী ও নিকটাত্মীয়দের ঘরে আশ্রয় নিয়েছে। ২ সপ্তাহ ধরে স্বামীর বাড়ি বন্যায় পানিতে ডুবে যাওয়ায় তিনিও এখন বাবার বাড়িতে উঠেছেন। কিন্তু কোন সরকারী সহযোগিতা পাচ্ছেন না। ছেলে মেয়ে নিয়ে বড় বেশী অসহায় হয়ে পড়েছেন তিনি।
উপজেলার হাওরপাড়ের বিভিন্ন গ্রামগুলোতে দেখা যায়, হাওরের প্রবল ঢেউয়ের আঘাতে তাদের বসত বাড়ি ভেঙ্গে নিশ্চিহ্ন হবার পথে। পরিবার পরিজন নিয়ে বন্যাশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছেন। কিন্তু প্রয়োজনীয় ত্রাণ পাচ্ছেন না।
তাহিরপুর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মিলন কান্তি তালুকদার জানান, উপজেলার শ্রীপুর দক্ষিণ ইউনিয়নে ৩টি, শ্রীপুর উত্তর ইউনিয়নে ৩টি, বালিজুড়ি ইউনিয়নে ১টি ও বাদাঘাট ইউনিয়নের সোহালা গ্রামে ১টি বন্যাশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে।
তাহিরপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান করুণাসিন্ধু চৌধুরী বাবুল বলেন, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পরিমান বেশী। ত্রাণ বিতরণ করা হচ্ছে তা পরিমানে কম। এ ব্যাপারে তিনি প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করে বলেন, তাহিরপুরের মানুষ বারবার ফসল হারিয়ে দিশেহারা এবং সাম্প্রতিক বন্যায় মানুষের বসতভিটা, রাস্তাঘাট ভেঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ায় সকলেই দিশেহারা। ত্রাণের পরিমান বাড়ানো খুবই প্রয়োজন।
তাহিরপুর সদর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান বোরহান উদ্দিন জানান, তার ইউনিয়নে দু-শতাধিক পরিবার এখনও পানি বন্দী রয়েছে। এসব পরিবারে যে পরিমান চাহিদা তার ২ পার্সেন্ট সরকারী সহযোগিতা করা হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্তরা প্রতিদিনই আমার কাছে এসে সহায়তা চাচ্ছে, আমি দিতে পারছি না। আমি জেলা প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্ট উর্ধবর্তন কর্তৃপক্ষের কাছে দাবী জানাই যেন যত দ্রুত সম্ভব আমার ইউনিয়নের ক্ষতি গ্রস্তদের সহায়তা করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করে বরাদ্দ দেন।