সিলেটের বাজারে বেড়ে গেছে নিত্যপণ্যের দাম
প্রকাশিত হয়েছে : ২০ জুলাই ২০১৯, ৩:৪০:১৪ অপরাহ্ন
বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বন্যা অতিবৃষ্টি আর খরার কারণে উৎপাদন
ও সরবরাহ কম থাকায় গত দু’সপ্তাহ থেকে হু হু করে বাড়ছে কাঁচামালের দাম
রাজু আহমেদ ::
‘গত সপ্তাহে যে পিয়াজ ৩০ টাকা কেজি দরে ক্রয় করেছি সেই পিয়াজের কেজি আজ শুক্রবার ৪০ টাকা হয়ে গেছে। রসুন আর কাঁচা মরিচের বাজারে তো রীতিমত আগুন লেগেছে বলা চলে। মাত্র এক সপ্তাহের ব্যবধানে রসুনের কেজি প্রতি দাম বেড়েছে ১৫ থেকে ২০ টাকা করে। আর ৬০ টাকার কাঁচা মরিচ ১৬০ টাকা থেকে ১৮০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে আজ। রসুনের কেজি ১৯০ টাকায় গিয়ে পৌচেছে। এমন পরিস্থিতে বাজারে গিয়ে রীতিমত হিমশীম খেতে হচ্ছে আমাদের’।
গতকাল শুক্রবার সিলেট শহরের আম্বরখানায় নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য ক্রয় করতে গিয়ে বনশ্রী আবাসিক এলাকার বাসিন্দা মুরাদের বক্তব্য ছিল এটি। চার সদস্যের পরিবারের কর্তা ব্যক্তি মুরাদ পেশায় অটোরিক্সা চালক। বাজার দর কঠোর ভাবে মনিটরিং করা জরুরী বলে মনে করেন তিনি। তার মতে এভাবে লাফিয়ে লাফিয়ে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বাড়তে থাকলে মধ্যবিত্ত আর নি¤œবিত্তরা চরম বিপাকে পড়বেন।
মাত্র এক সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতিদিনের নিত্য প্রয়োজনীয় সব কটি পন্যের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। নগরীর লাল বাজারের কাচামাল ব্যবসায়ী আব্দুল লতিফ জানালেন তার কাছে ৪০ টাকার নীচে মাত্র দুটি তরকারী রয়েছে। কাচা পেপে প্রতি কেজি ২৫ থেকে ৩০ টাকা আর চাল কুমড়া যেটা প্রতিপিস ২৫ থেকে ৪০ টাকা দরে বিক্রি করছেন। অন্যান্য সবকটি সবজির কেজি ৫০ থেকে ৬০/৭০ টাকা দরে বিক্রি করতে হচ্ছে। কারন কি জানতে চাইলে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী আব্দুল লতিফ জানালেন তারা পাইকারী বাজার থেকে বেশি দামে তরকারী ক্রয় করছেন। পাইকারী বাজার থেকে দু এক টাকা বেশি দরে তাদের বিক্রি করতেই হয়। আর বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বন্যা অতিবৃষ্টি আর খরার কারণে উৎপাদন ও সরবরাহ কম থাকায় গত দু সপ্তাহ থেকে হুহু করে বাড়ছে কাচামালের দাম।
সিলেট মহানগরীর কয়েকটি কাঁচা বাজার আর নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দোকান ঘুরে দেখা যায়, সবকটি পণ্যের মূল্যই বাড়তির দিকে। মাত্র ৬ দিনের মাথায় পিয়াজের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে কেজিতে ১০ টাকা। দেশী পিয়াজ ৪০ টাকা আর চায়না পিয়াজ ৩৫ টাকায় বিক্রি হয় গতকাল। রসুনের কেজি ছিলো গত সপ্তাহে ১৫০ টাকা থেকে ১৬০ টাকা। সেই রসুন গতকাল শুক্রবার বিক্রি হয় ১৮০ থেকে ১৯০ টাকায়। আদার দাম কেজি প্রতি ১০ টাকা বৃদ্ধি পেয়ে ১৪০ টাকায় বিক্রি হয়। আর মাত্র দুদিন আগেও যে কাঁচা মরিচের কেজি মাত্র ৬০ টাকা ছিলো সেই কাচা মরিচ গতকাল বিক্রি হয়েছে ১৭০ টাকা থেকে ১৮০ টাকা কেজি হিসেবে। বেড়েছে শসা, বেগুণ আর টমেটোর দামও। ৩০ টাকার শসা ৬০ থেকে ৭০ টাকা, ৪০ টাকার বেগুণ ৬০ টাকা, ৭০/৮০ টাকার টমেটো গতকাল ১০০ থেকে ১২০ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়। বাড়ছে দারুচিনি এলাচি জিরাসহ অন্যন্য পন্যের দামও।
মাছের বাজার কিছুটা স্থিতিশীল থাকলেও মোরগ আর মাংসের বাজার অস্থির। বয়লার মুরগির কেজি ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা, লেয়ার মুরগির কেজি ২০০ থেকে ২২০ টাকা আর গরুর মাংসের কেজি ৪৮০ থেকে ৫০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। মুল্য বৃদ্ধির এই প্রবণতা নিয়ে কেউ কেউ আবার বলছেন আসছে কোরবানীর ঈদকে সামনে রেখে কোন কোন ব্যবসায়ী মূল্যবৃদ্ধির পাঁয়তারা করছেন। যার খেসারত দিতে হচ্ছে সাধারন জনগণকে। জোরালো ভাবে বাজার মনিটরিং এর দাবী ভুক্তভোগীদের।