ছিলটি বয়ান
প্রকাশিত হয়েছে : ২১ জুলাই ২০১৯, ৬:১৮:৪০ অপরাহ্ন
ছিলটি বয়ান
।। নাজমুল ইসলাম মকবুল ।।
যে কুয়া কাটে হে ওউ কুয়াত পড়ি মরে। যারা খাইবার জিনিসো ভেজাল মিশাইন বেশি লাভর লাগি কথাখান তারারে কইরাম। এক বালতি পানির মাঝে বুলে মামলত ছাড়িদেইন আলগছ করি। আর অউ পানিত বুড়াইয়া তুলিলাইলে বুলে ই জিনিসর হায়াত বাড়িযায়। আর পছেনা। মাছিও বয়না। যেলা মনে অয় রাখিয়া বেছইন আর মাইনষর শরিলো বিষ ঢুকাইয়া মিঠা দুষমনি করইন। এর লাগিউতো দিন দিন নয়া নয়া কতো জাতর বেমারআজার আইয়া নাযিল অইতে আছে। আমরার মাইনষর এটএটি মেটমেটি হারা বছর যায়না। ডাখতর ছাবহকলর চেম্বারো গেলে দেখা যায় বেমারীহকলর কিজাত ভীড়। আর খালি টেখার খেলা।
অউযেনে কেউ মাছর মাঝে, কেউ ফল ফুরুটর মাঝে, কেউ তারকারীর মাঝে বিষ মিশাইন। ইতা বিশ বুলে বানানি অইছে লাশরে বেশি দিন তরতাজা রাখবার লাগি। লাশ যাতে না পচে এর লাগি। আইন কানুনর তোয়াক্কা না করিয়া অতা বিষ যেমনে মনে ছায় এমনে আনিয়া আমরারে মাছ তরকারী খানির জিনিষর মাঝে মিশাইয়া খাবানি অর।
আমরা জানিয়া বুঝিয়া নিরুপায় অইয়া আনামাতিয়া অতা বিষ খাইয়ার আর ডাখতরর গেছে খালি দৌড়িয়ার। আমরার কিতা কোনতা করার নাইনি। রাগ ছুক কিতা হকলরঅউ একবারে ভুতা অইগেলোনাকিতা।
হুনছিলাম এক বেটিয়ে বাজার থাকি বড়ো একটা রউ মাছ আনাইয়া বাসাত বড়ো ঠেংগি দা লইয়া বানানিত বইছইন। ওউ সময় মোবাইলো ফোন আইলো তানর বাপ মারা গেছইন। খবর হুনার লগে লগে তাইন বেউশ অইয়া কান্দিয়া বাসার গিরিলর তালাটা জাতামারি মারিয়া ফুরুতা লইয়া বাপর বাড়ী গেলাগি। একলা বাসাত আর কেউ নাই। মাছ আর ঠেংগি দা অউ জাগাতঅউ রইছে। হুশে দিছেনা ইতা আটাইয়া থইয়া যাইতা। বাপর দাফন কাফনর বাদে আরও পনরোদিন রইলা বাপর বাড়ী। পনরোদিন বাদে বাসাত গিয়া গিরিলর তালা খুলিয়া দেখইন ভাগ্য তানর যে ভালা। যেলা টাটকা তরতাজা মাছ থইয়া গেছলা অলাউ রইগেছে। একজরাতাউ পছিছেনা। তাইন দেখইয়া আছানখাত্তা লাগিগেলা।
আমি গতবার বাজারথাকি আঙ্গুর কিনছিলাম। পরীক্ষা করার লাগি ককটা আলাদা করি রাখলাম। এক সাপ্তা বাদেও দেখি যেলার অলা। একজরাতা আইলডিল অইছেনা।
অখনতো বাজারথাকি মাছ খাছ ফল ফুরুট তরকারী টারকারি নিতে ডর করে। আর না নিয়াউ কিতা করবা। খাইয়াতো মরা লাগবো। মাঝে মাঝে ভেজালর সরকারর মানষে দৌড়াদৌড়ি করইন এক। যেতা খাইয়া মানুষ বাঁছইন ইতার মাঝে বিষ মিশানির ঢাটা শাস্তি না অইলে ইতা আটকানি সম্ভব অইতোনায়। অনেকর দাবী মউতর সাজা অওয়া উচিত এর শাস্তি।
যেরা ভেজাল মিশাইয়া টু-পাইছ কামাইরা এরারও মনর মাঝে নীতিকীর্তি জাগানি দরকার। খানিত ভেজাল যেরা মিশাইন তারারে আমি কইরাম আপনারা অউযেনে খানির মাঝে ভেজাল মিশাইয়া বাজারো বেছইন ইতা জিনিস খরিদারর লাখান আপনারঅউতো খেশ কুটুমে কিনইয়া নিয়া খাইয়া শরিলো বিষ ঢুকাইরা। ডাকর কথা মছলমানর কুটুম ছাড়া নাই। ঘুরাই ঘুরাই একজন না আরজন আপনার কুটুম অইযাইন। এছাড়া আপনার পুয়ার লাগি কাইল বাদ ফরুদিন ওউতো আরকজনর পুড়ি আনবা নায় আফনার পুড়ি আরকজনর পুয়ারগেছে বিয়া দিবা। অউযে ভেজাল খাবাইয়া মাইনষর শরিলো বিষ ঢুকাইয়া নিজর পাওয়ো নিজে কুড়াল মাররা ইতা নিজর বানাইল কুয়াত নিজে পড়িয়া মরা নায়নি।
অখনতো আবার রাজনীতিতওবুলে ফরমালিন মিশানি অয়। বড় বড় নেতা নেতা হকলে একজনে আরজনরে বেজান কইতে আছইন তোমার দলরে ফরমালিন দিয়া জিতা রাখছি। জুয়াবে তারার পাল্টা আরবার কইরা আমরার মাঝে নায় তোমার পাটির মাঝে ফরমালিন। তুমি আস্তা ফরমালিনর মাঝে ডুবাইল। ভাবে বুঝা যায় ফরমালিন শব্দটা আস্তে আস্তে গাইল অইযারগি। আমি কাজ কইরাম ফরমালিনমুক্ত দেশ কিলা বানাইতা, সব জিনিসতনে ফরমালিন কিলা দুর করতা আফনারা দয়া করি ওউ ফিকির করউকা।
এবলা ডাখতর ভাই বইন লইয়া থুড়া বয়ান রাখতাম চাইরাম। হকলতনে যারা বেশি আকলমন্দ বেশি তারাউ ডাখতর অইবার সুযোগ পাইন। আকল আল্লাহপাকর বড়ো এক নিয়ামত। খালি আকল অইলেউ অয়না কঠিন পরীক্ষাত পাশ করা লাগে আর এর লগে বাপর টেখা লাগে কয়েক লাখ। তারা কষ্টও করইন বেশি। এরলাগি তারা রুজিও করতা বেশি। বেতনও অইতো বেশি। ইকটা আমরা মানি। আমার মতে বেশিরভাগ ডাখতরওউ ভালা। তারার আচার ব্যবহারও বালা। তারা মাইনষরে মায়াও করইন বেশি।
ডাখতর ভাই বইন তারারলগে আমার কোনু বিরোধ নাই। বেশির ভাগ ডাখতর ভাই বইন হকলর চেম্বারো গেলে জোর করিয়াও ভিজিটর টেখাগুইন দিতাম পারিনা। আমার গেছতনে ভিজিট লইননা। তর আতর পাঁচ আঙ্গুইল যেলা হমান নায় অলা হখল ডাখতরও সমান নায়। ধানর মাঝে যেলা চুছা থাকে ওলা তারা মাঝেও কিছু চুছা থাকাটা আচানক কিছু নায়।
যেলা হকল সাংবাদিকও হমান নায়। মেট্টিক দেওয়া দুরর কথা হাইস্কুলর ধারিত গিয়া পাড়া দিতা পারছইননা। একটা খবর লেখা দুরর কথা পাঠশালার একটা বই তাইনরে দিয়া যদি রিডিং পড়ারলাগি কইন উত্তর পাইবা আমি ভিজি। থানাত যাইতাম। নিউজ পাঠাইতাম। খালি ইতা নায় যুগালি মেস্তইর বেবি টেম্পুর ড্রাইভারি হেলপারি করিয়া শুদ্ধ করি দুই চাইর লাইন লেখার খমতা না থাকা সত্ত্বেও বুকুত সংবাদিক লেখা কার্ড লাগাইয়া যে ধাফ দেখাইন আর ফুটানি করইন। কইন আমি খালি সাংবাদিক নায় সিনিয়র সাংবাদিক। খালি সিনিয়র সাংবাদিক নায় অমুক তমুক পদরও মালিক। ইতা সাংবাদিক মানুষ মেলো মাঝেও হামাইগেছইন মেলা। সাংবাদিক ভাইহকলর ইজ্জত ভরম নষ্ট করাত এক দল আছইন আফনারার ছাইরো কানদাবায়উ। দেশর প্রায় হকল জাগাতউ তারারে পাওয়া যায়।
ইতা বয়ান দিলাম এরলাগি যে ডাখতর ভাই বইন হখলে কইতানা যে আমরারলগে খালি লাগইন কেনে। আর কুনতা দেখইননা। তারারে কইরাম আফনারার লগে লাগা আমার খিয়াল নায়। আফনারার মাঝেও ভেজাল সাংবাদিক হকলর লাখান কিছু জিনিসহকল থাকতা পারইন। তারারে আফনারা থুড়া বুঝাউকা।
মানি ডাখতর হখলর নাম ব্যবহার করিয়া খালি বেশি বেশি টেখা চিনইন তারার সম্পর্কে। তারার মাঝতনে থুড়া কিছু ভাই বইনরে নষ্ট করিলায় আরনায় লালছি বানাইলায় সাসি কইরাম আমরার দেশো ব্যাঙর ছাত্তির মতো উজাইয়া উঠা নামে বেনামে ঔষধ কোম্পানির মাঝতনে কিছু কোম্পানী।
অখন আমরার দেশর মাঝে নামে বেনামে যতো ঔষধ কোম্পানী অইছে ইতা অততা মনে লয় আর কোনু দেশো আছে কি না সন্দয় আছে। ঔষধ কোম্পানীহকলে কমিশনে দালাল নেয় আর কতো জাতর অফার যে দেয় ইতা হুনলে শরিলর রুমা খাড়া অইযায়গি।
তারার চটকদার অফারর কিছু বয়ান হুনতানি। আমরার ওউ ঔধষ অথটা লেখলে বা চালাইয়া দিতে পারলে আফনার বাসাত পুরা মার্বেল পাত্তর লাগাইয়া দিমু। ভাবীর গরম লাগতোনাকরি বাসাত এসি লাগাইয়া দিমু। কারেন্ট গেলেগি আন্দাইর থাকতানাকরি আর শরিলো গরম লাগতনাকরি বাসাত আই.পি.এস লইয়া গিয়া নিজে ফিট করিয়া দিয়া আইমু। ভাবি বাচ্ছায় গেইম খেলাইতাকরি বাসাত একটা আর চেম্বারো একটা কম্পিউটার দিমু। ডাকাইত চোর বা কিছকা ফুয়াইনতে গিয়া ছাতাইতানাকরি সিসি ক্যামেরা লাগাইয়া দিমু। বাসাত আফনার টিভিটা কয় ইঞ্চি। আগরআমলী অইলে ইকটা ফালাইদেউকা। বড়ো এলইডি টিভি নিয়া দিমু। আফনে চেম্বারো মটর সাইকেলে আইতে যবর কষ্ট অয় আমরার দুক লাগে, ভাবীরে লইয়া ঘুরাইতা পারইননা। এর লাগি দামী চাইর চক্কার সুন্দর একটা গাড়ি দিমু।
স্যারর ফিরিজতো আরকটার দরকার। বাসাত লইয়া যাইমুনে। ছেম্বারো যেতা যেতা লাগে, প্যাড, সাইনবোর্ড, এসি, থাই পার্টিশন, টাইলস, কম্পিউটার, সিসি ক্যামেরা, কলমসহ হকলতা আমরার কোম্পানির পক্ষাথাকি দিলাইমুনে স্যার। ভিতরে বইয়া বইয়া এসির বাতাস খাইয়া দেখবা চেম্বারো রুগি কয়জন আছইন। মাগনা ঔষধও দিমু। আর নগদ আছেউ স্যার। ভাবীর লাগি কসমেটিক্সর একটা দামী বস্কও দিছইন আমরার স্যারে। স্যার ইকটাতা না নিলে আমরার কোম্পানীর বড়ো স্যার বেজার অইজিবা। নিয়া দেখউকা স্যার। দেখাবানে ভাবী ইকটা পাইয়া কতো যে খুশি অইবা।
মাগনা কোনতা দেওয়ার বাদে তারা রে লাগাইন ডাখতরসাবে তারার ইতা দেখবার লাগি । ফার্মেসীত দেইন পেদা লাগাইয়া। ডাখতরসাবর স্লিপ লইয়া ফার্মেসীত গেলে প্রায়ই দেখা যায় পেদা হকলে স্লিপ নিয়া ডিজিটাল ক্যামেরা বা মোবাইল দিয়া ওউ স্লিপর ফটো তুলিয়া নেইনগি। এর বিনিময়ে ওউ পেদাহকলেউ একটা কমিশন পায়।
ইতা কম্পানীঅকলর পাল্লাত পড়ি প্রায় ডাখতরে ভালা কোম্পানীর ঔষধ লেখইননা। যার জিনিস আর কমিশন বেশি পাইন তারার ঔষধ লেখইন বেশি। ঔষধর মান ভালা না বুরা ইতার কোন ধার ধারইননা। কমিশন বাড়াইতা করি যে ঔষধর দরকার নায় অতা আরও কতটা বাড়াইয়া লেখিলাইন। প্যাড যতবইল খালি আছে অতবইল খালি লেখতে থাকইন। ডাখর কথাতো আর মিছা নায় ‘পরার মাথা আর নাগেসরর ছিয়া’।
যারা যতো বেশি কমিশন দেইন তারার ঔষধর মান ততো খারাপ আর দামও বেশি। কিন্তু নামী দামী ভালা কোম্পানী যারা কমিশন দেইননা বা কম দেইন তারার ঔষধ লেখইননা। তারার ঔষধর রেইট কম। কামও ভালা। আর মায়াফির ডাখতরসাবহকলে ঔষধ খুব কম লেখইন। ইতা হকলর জানা। দরকারী ছাড়া তারা ঔষধ লেখইননা। এ্যালোপ্যাথিক হকল ঔষধরউ একটা না একটা ক্ষেতিরও দিক থাকে। একবায় ভালা করলে অন্যবায়দি শরিলর ক্ষতি করে। ইতা আমরার বুঝার দরকার।
আরক জগত আছে গরীবের কথা চিন্তা করি এক্সরে বা টেস্টর জগত। ইতারে কয় ডায়াগনস্টিক সেন্টার। যারা যতো বেশি কমিশন দেইন তারারগেছে কার্ড দিয়া পাঠাইয়া দিবা। অন্য জাগাত টেস্ট করাইলে ডাখতরসাবে কপাল কুছ করইন আর কইন ইতা অইছেনা, যেনো লেখইয়া দিছি হনো গিয়া আবার টেস্ট করাইয়া আনো। টেস্টর দরকার না লাগলেও খালি কমিশন পাইবার লাগি ওউ টেস্ট, হউ টেস্ট করারলাগি পাঠাইয়া দেইন। তানর নিজর বা নিজর খাতিরর ক্লিনিকও পাঠাইয়া দেইন, নিজর লাভরলাগি। ক্লিনিক থাকিও ইনকাম। কড়কড়া নোট। আর বউত ডায়গনস্টিক সেন্টারর প্যাডরমাঝে ডাখতর বা টেকনিশিয়ানর শিল দস্তগত আগে দেওয়া থাকে। পিয়ন চাকরাণি ওউ প্যাডর মাঝে লেখইয়া রিপোর্ট দেলাইন বলিয়া হকল সময় হুনা যায়। পত্র পত্রিকাত ইতা বিষয় প্রায়উ লেখালেখি অয়। কিন্তু কে হুনে কার কথা। তারার কথা অইলো তুমি হালা মরলে মরো বাঁচলে বাঁচো ইতা আমরার দেখার বিষয়নায়। তারার রুটির কাম।