তোমরা কারা ? স্যার-আমরা চা খেতে এসেছি!
প্রকাশিত হয়েছে : ১৮ এপ্রিল ২০২০, ১:৪৬:২৯ অপরাহ্ন
সুদীপ্ত রায় :
হতাশ হতে হয় যখন দেখি এতো করে বলার পরেও শুধুমাত্র চা সিগারেট খাওয়ার জন্য ছেলেরা রাতে একসাথে বেরিয়ে আড্ডা দেয়, গলাগলি করে গল্প করে! চায়ের ষ্টলে বসে টিভি দেখে! তারা করোনাকে থুরাই কেয়ার করে!
শুক্রবার। রাত সাড়ে ৮টা। জকিগঞ্জের উত্তরকুল এলকা৷ ১০/১২ জন বসে একটি চা ষ্টলে বসে আড্ডা দিচ্ছে। মালিকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার পর ওরা কে কি করে জানতে চাইলে সবাই বলে তারা নাকি ছাত্র, পড়ালেখা করে! বাসায় থাকতে ওদের ভাল লাগছে না। তাই বেরিয়েছে।
ছাত্ররা তো রাতে বাসায় থেকে পড়াশুনা করার কথা। এই সময়ে ঘরের বাহিরে আসার কথা না। জানতে চাইলে বলল- এখন স্কুল-কলেজ বন্ধ, পড়াশুনা নাই, তাই বেরিয়েছে। চা খেয়ে চলে যাবে!
করোনা সম্পর্কে কি জানে জানতে চাইলে সোজা সাপ্টা উত্তর- করোনা নাকি ওদের স্পর্শ করবে না!
আর কি বলা যায়!
যাই হোক, বুঝতে পারলাম করোনা পরিস্থিতি নিয়ে ওরা মোটেও চিন্তিত নয়, বিচলিতও নয়।
(আমি জানি প্রায় সকল ছাত্র/ছাত্রীই এখন সচেতন। ওদের কথা বলছি যারা বখাটে!)
আমার প্রশ্ন বাড়ির যারা কর্তা ব্যাক্তি (বাবা/ মা/ বড় ভাই) তাদের প্রতি। আপনারা আপনাদের সন্তানরা কোথায় যায়, কেন যায় সেই খবর কি রাখেন? রাতে কিসের নেশায় চা আড্ডাতে যেতে হয় সেই খবর কি জানেন আপনারা? রাতে কয়টায় বেরোনোর পর কয়টায় বাসায় আসে সেই খবর কি জানা আছে?
চা সিগারেটের খরচ কিভাবে আসে তা কি কখনো জানতে চেয়েছেন?
আমি জানি অনেকেই জানেন না! খোঁজও নেন না অনেকে!
সচেতনতার অভাব আসলে আমাদের মাঝেই। আর এই অসচেতনতার কারনেই সমাজে চলে আসে মাদক, অনেকেই হয়ে ওঠে মাদকাসক্ত; বেড়ে যায় চুরি- ডাকাতি, ছিনতাই সহ নানা অপকর্ম । আর… করোনা ছড়াতে থাকে মহামারি আকারে!
এখনো সময় আছে, সচেতন হোন। সন্তানদের বাড়িতে রাখুন। অযথা অপ্রয়োজনে বাড়ি থেকে বের হতে নিরুৎসাহিত করুন। সামাজিক দূরত্বটুকু বোঝান! মাস্ক, হ্যান্ড গ্লাভস প্রভৃতি ব্যবহার করতে বলুন এবং নিজে ব্যবহার করুন। পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকুন। হ্যান্ড স্যানিটাইজার, হ্যান্ড ওয়াশ ব্যবহার করুন।
আমিও চাই সবাই করোনা মুক্ত থাকুক, করোনা আমাদের স্পর্শ না করুক। কিন্তু আমার, আপনার আর ওদের শুধু চাওয়াতেই কি করোনা থেমে যাবে? ইশ! যদি তাই হতো!!লেখক : অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, (জকিগঞ্জ সার্কেল) সিলেট।