কারাকোরাম পর্বতারোহন
প্রকাশিত হয়েছে : ১৬ জানুয়ারি ২০২১, ৫:২৯:২৯ অপরাহ্ন
আবদুর রহমান খান
পর্বতারোহন বা ট্রেকিং যাদের প্রিয় পেশা এমন অভিযাত্রীদের জন্য আকর্ষণীয় গন্তব্য হচ্ছে পাকিস্তানের কারাকোরাম পর্বতমালা। এটি হচ্ছে হিমালয় পর্বতমালার পর দ্বিতীয় উচ্চতম শৈল চুড়া। এশিয়ার হিমবাহ বিশিষ্ট এ পর্বতমালার অপরূপ সৌন্দর্য আবলোকন, ক্যাম্পে আবস্থান করে রাত আর দিনের হিম উপভোগ করা আর ধাপে ধাপে কষ্টকর উর্ধ্বমুখি অভিযাত্রা পরিচালনা- এ সব হচ্ছে বিশ্বের পর্বতারোহীদের জন্য একরকম উন্মত্ত আকর্ষণ। তাইতো, দুঃসাহসী এ অভিযাত্রায় যোগ দিতে কারাকোরাম আঞ্চলে ছুটে আসেন দেশ-বিদেশের শত শত পর্বতপ্রেমী।
হিমালয় পর্বতমালা এশিয়ার মধ্যঅঞ্চল থেকে দক্ষিণাঞ্চলকে আলাদা করে রেখেছে। হিমালয়ের গিরিসারি পশ্চিমে বিস্তৃত হয়ে কাশ্মীর ও পাকিস্তানের উত্তর অংশে ২০০ মাইল জুড়ে অবস্থান করছে। এ পর্বতমালা থেকে উৎসারিত হয়েছে, ঝিলাম, সিন্ধু, এবং শায়ক নদী। এই কারাকোরাম পর্বতমালার দূর উত্তর শাখা গিয়ে ঠেকেছে চীনের ঝিংজায়াং প্রদেশের উইঘুর অঞ্চলে। এ পর্বতমালা ভেদ করে নির্মিত হয়েছে পাকিস্তানের গিলগিট থেকে চীনের খাসগর পর্যন্ত কারাকোরাম মহাসড়ক। চীনের সাথে পাকিস্তানের অর্থনৈতিক সম্পর্কের করিডোর।
কারাকোরাম রেঞ্জের পর্বতারোহীদের জন্য বিশেষ আকর্ষণ হচ্ছে কে-টু পর্বত। যার শৃংগের উচ্চতা আট হাজার ছ’শ এগারো মিটার। বরফ জমা শৃংগে শীতকালে আরোহন করা সম্ভব না হলেও পাদদেশে বেজ ক্যাম্পে জড়ো হতে শুরু করেছে হিম শিহরিত পর্বতারোহীগন।
এবারের অভিযাত্রীদের জন্য কারাকোরাম পর্বতমালার প্রবেশদ্বার বলে পরিচিত স্কারডু থেকে একটি রাস্তা তৈরী করা হয়েছে বেস ক্যাম্পে যাবার জন্য। আসলে পর্বতারোহীদের জন্য কারাকোরামে রয়েছে একরকম উন্মত্ত আকর্ষণ। এখানে বেস ক্যাম্পে বরফজমা ঠান্ডায় কয়েক রাত আতিবাহিত করার শিহরণটাই অন্যরকম। কে-টু পর্বতের বালতোড়া হিমবাহ ছাড়াও রয়েছে আরো অনেকগুলি ট্রেকিং সাইট। রয়েছে আরো বেশি অভিযাত্রীর জন্য অবস্থান করার সুবিধা। রয়েছে এক তাবু থেকে উপরের তাবুতে চলাচলের পথ এবং দিনব্যাপী পর্বতারোহনের পাগল করা আকর্ষণ।
২০১৮ সালে ইমরান খান পাকিস্থানের প্রধানমন্ত্রী হবার পর প্রথম ১০০ দিনের কর্মসূচীতে দেশের নিরাপত্তা ও পর্যটনকে বিশেষ গুরুত্ব দেবার কথা ঘোষণা দেন। সে আনুযায়ী অধিক পরিমান টুরিষ্ট ভিসা প্রদান, ই-ভিসা প্রবর্তন , ব্রিটিশ রাজ পরিবারকে আতিথেয়তা প্রদান এবং আন্তর্জাতিক রুটে ইসলামাবাদের সাথে সরাসরি আকাশপথে যোগাযোগ চালু করা হয়। এর মধ্যে করোনা সংকটের কারণে বন্ধ থাকা পাকিস্তানের পর্যটন সেক্টরে আবার গতি আসতে শুরু করেছে বলে মনে করছেন।