উন্নয়ন বিরোধীদের রুখে দাঁড়াতে হবে
প্রকাশিত হয়েছে : ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ৭:১৯:৪৬ অপরাহ্ন
সত্যি বলতে কি, সরকারের বিভিন্ন স্তর ও পর্যায়ে দুর্নীতির ভয়াল বিস্তার লক্ষ্য করা যাচ্ছে দেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকেই। কিন্তু তা সত্ত্বেও দেশের নেতৃত্ব ও প্রশাসনের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে বেশ কিছু সৎ মানুষকে দেখা গেছে দেশ ও জনগণের জন্য আন্তরিক ও নিবেদিতপ্রাণ হয়ে কাজ করতে। এদের মধ্যে সর্বাগ্রে যার নাম আসে তিনি হচ্ছেন মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক এবং পরে মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালনকারী বঙ্গবীর এমএজি ওসমানী। তখনকার সময় দেশ এমনভাবে দুর্নীতিগ্রস্ত ছিলো যে, একমাত্র ওসমানীর মন্ত্রণালয় ছাড়া বাকী সবগুলো মন্ত্রণালয়ের অধীন সংস্থাগুলো লোকসানদাতা হয়ে পড়েছিলো। আর তার মন্ত্রণালয়ে কেউ দুর্নীতি করতে সক্ষম বা সাহসী ছিলেন না। তার কঠোর নিয়মনীতি ও নজরদারি এড়িয়ে দুর্নীতি করা ছিলো প্রায় অসম্ভব। জানা যায়, অন্যান্য মন্ত্রণালয়ের কোন কর্মকর্তা বা কর্মচারীকে শাস্তিমূলক বদলী করতে বঙ্গবীর ওসমানীর মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়ে দেয়া হতো।
যা-ই হোক, পরবর্তী সময়ে সৎ ও ভালো নেতানেত্রী ও কর্মকর্তাদের খরার মাঝেও রিয়ার এডমিরাল মাহবুব আলী খান, সাইফুর রহমান, হুমায়ূন রশীদ চৌধুরী এবং বর্তমান সময়ে পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নানকে পেয়েছে দেশবাসী। তারা যেনো দুর্নীতির কাঁদাপানির মাঝে হংসস্বরূপ। দুর্নীতি যাদের স্পর্শ করতে পারেনি।। দেশের জন্য নিবেদিতপ্রাণ এসব নেতা জাতির গৌরব। সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে বক্তব্য প্রদানকালে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেছেন, দেশে টাকার অভাব নেই, অভাব আমাদের ঈমানের। তিনি বলেন, যারা উন্নয়নের বিরোধিতা করবে তাদের কেউ ক্ষমা করবে না। আমাদের টাকার অভাব নেই, অভাব ঈমানের। চোগলখোরি, ষড়যন্ত্র ও দুর্নীতি ছাড়তে হবে।
অত্যন্ত মানবিক ও হিতকামী এ আহ্বান। এমএ মান্নানের মতো দেশ ও জনদরদী নেতাদের কল্যাণকর্মে কোন কোন স্বার্থান্বেষী মহলকে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির চেষ্টা করতে দেখা যাচ্ছে। তারা নিজেরা তো দেশের জন্য কিছু করবে না বরং উন্নয়নকার্যে বিঘœ ঘটানোর অপচেষ্টা চালাচ্ছে। এটা নিঃসন্দেহে রাজনৈতিক নোংরামী। অতীতেও হুমায়ুন রশীদ চৌধুরীর মতো দরদী নেতাকে সিলেটের উন্নয়ন কাজে বাধা দেয়া হয়েছে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সিলেট, বৃহদার্থে গোটা দেশ।
একইভাবে পরিকল্পনামন্ত্রীর উন্নয়নকাজেও সেই স্বার্থান্বেষী মহলের রাজনৈতিক রেষারেষি, নোংরামী ও চক্রান্ত লক্ষণীয়।
ঐসব কুচক্রীদের রুখে দাঁড়াতে হবে। সরকারের ঊর্ধ্বতন মহলকে সতর্ক থাকতে হবে এ ধরণের অপকর্মকারীদের অপতৎপরতার ব্যাপারে।
সিলেটে এখন ব্যাপক উন্নয়ন কাজ হচ্ছে সিটি কর্পোরেশনের মাধ্যমে। এর নেতৃত্ব দিচ্ছেন সিটি মেয়র। গোটা সিলেট অঞ্চলের এক কোটি মানুষ বিভাগীয় নগরীর এই উন্নয়নে উল্লসিত। দীর্ঘ অর্ধশতাব্দির বঞ্চিত এই নগরীতে আজ ছোঁয়া লেগেছে উন্নয়ন ও সৌন্দর্য্যের। নগরীর প্রতিটি বাসিন্দা এটাকে স্বাগত জানাচ্ছেন, সহযোগিতা করছেন।
কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে একটি কায়েমী স্বার্থন্বেষী গোষ্ঠীকে নগরীর এই উন্নয়ন কর্মযজ্ঞে বাধা ও প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির অপচেষ্টায় লিপ্ত থাকতে দেখা যাচ্ছে। নিজেদের দুর্নীতিমূলক কর্মকা- ও অপকর্ম চালিয়ে যেতে ব্যর্থ হয়ে তারা উন্নয়নে বাধা দিচ্ছে। এটা এখন দিবালোকের মতো হয়ে ওঠেছে নগরবাসীর কাছে। সম্প্রতি রাস্তাঘাট প্রশস্তকরন, নালা-নর্দমা পাকাকরণ ও ডিভাইডার নির্মাণের জন্য চৌহাট্টায় দীর্ঘদিনের অবৈধ মাইক্রোবাস ও কার স্ট্যা- উচ্ছেদ করতে গেলে সেই স্বার্থান্বেষী চাঁদাবাজ সন্ত্রাসী গোষ্ঠী সিটি কর্পোরেশনের শ্রমিক কর্মচারীদের ওপর হামলা চালায়।
আমরা সিলেট তথা দেশের উন্নয়ন বিরোধী যে কর্মকা- জোরালোভাবে প্রতিহত এবং উন্নয়নের বিরুদ্ধে যে কোন ধরণের চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্র প্রতিরোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সরকারের প্রতি অনুরোধ জানাচ্ছি। উন্নয়নের বিরুদ্ধে যে-ই দাঁড়াবে দলমত নির্বিশেষে ঐক্যবদ্ধভাবে তাদের প্রতিহত করার জন্য আমরা বৃহত্তর সিলেটের বাসিন্দাসহ দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।