সুনামগঞ্জে নিম্ন আয়ের মানুষের মাথায় হাত
প্রকাশিত হয়েছে : ০৫ এপ্রিল ২০২১, ৭:৪৪:০৪ অপরাহ্ন
সুনামগঞ্জ সংবাদদাতা: লকডাউনের জন্য সুনামগঞ্জের নি¤œ আয়ের মানুষ বিপাকে পড়েছেন। জেলা শহর, জামালগঞ্জ, তাহিরপুর, জগন্নাথপুর, দিরাই, শাল্লাসহ জেলার সব ক’টি উপজেলার রিকশা, ঠেলা, অটোরিকশা, বাদাম, চানাচুর, ঝালমুড়ি, ভাঁজাপুড়া, দইচিড়া বিক্রেতারাসহ নিম্ন আয়ের পেশাজীবীদের মাথায় হাত পড়েছে।
জামালগঞ্জের লামাপাড়ার রিকশা চাল আজিজুর মিয়া বলেন, ‘লকডাউন খবর পাইয়া মনটা খারাপ হইয়া গেছে। রিকশা চালাইয়া দিন আনতাম- দিন খাইতাম, এহন সরকারে এইডাও বন্ধ করে দিছে। আমার সংসার বউ বাচ্চা লইয়া কি খাইমু। কে দিব আমারে চাউল ডাল। গত লক ডাউনের সময় সরকারে যে অনুদান দিছে নেতারা তারার আত্মীয় স্বজন দেইখা টেহা (টাকা) দিছে। আমার মতো আসল গরিব যারা তারা পাইনা। আমরারে কাজ করার সুযোগ দেউক।’ রিকশাচালক মনির মিয়া বলেন, লকডাউনের খবর শুনে মনে হয়েছে মাথায় আসমান ভাইঙ্গা পড়েছে। লকডাউনে মানুষ তো ঘর থেকে বের হয় না। আমি বউ বাচ্চা নিয় কেমনে সংসার চালাবো। কে দিবে আমারে খাওন ? এমন প্রশ্ন করেন তিনি। ঝালমুড়ি বিক্রেতা রহিম আলী বলেন, স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকায় আগের মতো রুজি নাই। চানাচুর, ঝালমুড়ি, বিক্রি করে কোনমতে সংসারটা চলতো। এর মাঝে সরকার আবার লকডাউন দিয়েছে, কি খাইবো আমরা। আমরারা গরিবরা করোনায় মরে না। আমরা মরি পেটের ক্ষুধায়। ঠেলা চালক সাহাজান মিয়া বলেন, ঠেলা গাড়ির এমনি রুজি কম, এর মধ্যে লকডাউন আমরা চলবো কেমনে। আমি দিনে আনি দিনে খাই। বউ-বাচ্চা নিয়ে আমরা ৫ জন। নিজে কি খাবো আর পরিবারকে কি খাওয়াবো। জামালগঞ্জের চা ব্যবসায়ী সুভাষ বাবু বলেন, চায়ের দোকান দিয়া কোন রকম সংসার চালাই, লক ডাউনে আমরা ঘর বন্ধি থাকলে পরিবার নিয়ে বাঁচবে কীভাবে ?
এদিকে, হাওরে ধান পাকা শুরু হয়েছে, সপ্তাহ দশ দিন পরেই কিছু ধান কাটাও শুরু হবে। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে হাওর এলাকায় আসতে হবে ধান কাটার শ্রমিকদের। লকডাউনের কারণে গণপরিবহণ বন্ধ থাকলে শ্রমিক আসায় হবে বিলম্ব হলে কৃষকের সারা বছরের একটি মাত্র বোরো ফসল এর সোনালী ধান ঘরে উঠবে কি-না তা নিয়ে চরম দুশ্চিন্তায় পড়েছেন কৃষকরা।
কৃষক কয়েছ মিয়া জানান, এবার কষ্ট করে হাওরে যে জমি করেছি ধানও পাকতে শুরু করেছে। এলাকায় এখন স্থানীয় বেপারী (ধান কাটার শ্রমিক) পাওয়া যায় না। দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে যদি শ্রমিকরা না আসে তাহলে এলাকার শ্রমিকরা বেশী মূল্য দাবী করবে। চাহিদা মতো ও সময় মতো পাওয়া যাবে না। এ নিয়ে চিন্তায় আছি। এলাকার শ্রমিক দিয়ে ধান কাটলে আমার জমি খরচ সহ তাদের কে দিয়ে কি থাববে