ডাক্তারের থাপ্পড়ে শিশুরোগী অজ্ঞান
প্রকাশিত হয়েছে : ০৮ এপ্রিল ২০২১, ৮:৩২:০১ অপরাহ্ন
সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি: সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগের দায়িত্বে থাকা এক চিকিৎসকের বিরুদ্ধে টাকা কম দেয়ায় কুলসুম আক্তার (৬) নামে এক শিশু রোগীকে থাপ্পর মেরে অজ্ঞান করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। কুলসুম আক্তার ধর্মপাশা উপজেলার সদর ইউনিয়নের আতকাপাড়া গ্রামের জলিল মিয়ার মেয়ে।
বুধবার দুপুরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগের দায়িত্বে থাকা উপসহকারী মেডিকেল অফিসার আর কে চাকলাদার এ ঘটনা ঘটিয়েছেন। এ ব্যাপারে ওইদিন বিকেলে শিশুটির চাচা মো. রতন মিয়া বাদী হয়ে ওই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বরাবরে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
শিশুর পারিবারিক সুত্রে জানা গেছে, গত বুধবার দুপুরে উপজেলার আতকাপাড়া গ্রামের জলিল মিয়ার মেয়ে কুলসুমা আক্তার বাড়ির অন্য শিশুদের সাথে খেলাধূলা করার সময় দা’য়ের উপর পড়ে গিয়ে তার ডান হাতের অনেকটা কেটে গুরুতর আহত হয়। রক্তাক্ত অবস্থায় শিশুটিকে নিয়ে তার চাচা রতন মিয়া ধর্মপাশা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগে নিয়ে যান। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক আর কে চাকলাদার শিশুটির চিকিৎসার জন্য তার চাচা রতন মিয়ার কাছে ৪শ টাকা দাবি করেন। রতন সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে এসে টাকা লাগে না বলে টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন। এ নিয়ে রতন মিয়া ও চাকলাদারের মধ্যে তর্ক হয়। এক পর্যায়ে বাধ্য হয়ে ওই চিকিৎসককে ১১০ টাকা দিয়ে দেন রতন মিয়া। তাতে তিনি সন্তুষ্ট না হয়েই শিশুটির চিকিৎসা শুরু করেন। হাতের কাটা স্থান সেলাই করার সময় ভয়ে শিশুটি চিৎকার করে কাঁদতে থাকে। এ সময় চিকিৎসক রেগে ওই শিশুটির গালে সজোরে থাপ্পর মারলে শিশুটি সাথে সাথে অজ্ঞান হয়ে পড়ে এবং তার গালে পাঁচটি আঙুলের ছাপ লেগে যায়। প্রায় আধাঘন্টা পর শিশুটির জ্ঞান ফিরে আসে। পরে ওইদিন বিকেলেই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বরাবরে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়।
এ ব্যাপারে অভিযোগকারী রতন মিয়া বলেন, এ বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার জন্য অভিযুক্ত চিকিৎসক চাকলাদার তার লোকজন নিয়ে রাতে গ্রামের গন্যমান্য ব্যক্তিদের কাছে গিয়ে ভুল স্বীকার করে ক্ষমা চেয়েছেন।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত চিকিৎসক বলেন, স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদেকে নিয়ে ভুল বুঝাবুঝির এ বিষয়টি সমাধান করা হয়েছে। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. এমরান হোসেন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, এ বিষয়ে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসক ডা. সাব্বির জামান রকিকে প্রধান করে তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো.মুনতাসির হাসান বলেন, বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো.আবু তালেবকে প্রধান করে তিন সদস্য বিশিষ্ট পৃথক আরো একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।