জুড়ীর রাগনা-বটুলী শুল্ক স্থলবন্দর: ভারতীয়দের মতো বাংলাদেশিদেরও যাতায়াত সুবিধা চালুর দাবি
প্রকাশিত হয়েছে : ০৮ এপ্রিল ২০২১, ৮:৩৪:৩০ অপরাহ্ন
আব্দুর রব, বড়লেখা থেকে : মৌলভীবাজারের জুড়ীর ফুলতলা সীমান্তের রাগনা-বটুলী শুল্ক স্থলবন্দর (ইমিগ্রেশন চেকপোষ্ট) দিয়ে ভারতীয় নাগরিকরা বাংলাদেশে প্রবেশ করতে পারলেও দেড়যুগ ধরে বাংলাদেশিরা বৈধভাবে ভারতে যাতায়াত করতে পারছেন না। এছাড়া জনবল সংকট, অবকাঠামো ও অফিস ইকুইপম্যান্ট সমস্যাসহ নানবিধ সমস্যায় জর্জরিত এ স্থলবন্দরটি। রাগনা-বটুলী স্থলবন্দর দিয়ে বৈধপথে বাংলাদেশিদের ভারতে যাতায়াত সুবিধা পুনরায় চালুসহ সকল সমস্যার দ্রুত সমাধান চান মৌলভীবাজারবাসি।
জানা গেছে, ১৯৯৮ সালে মৌলভীবাজারের জুড়ী রাগনা-বটুলী ইমিগ্রেশন স্থলবন্দরটির অবকাঠানো উন্নয়ন কাজ ও ২০০২ সালে কার্যক্রম শুরু হয়। এ স্থলবন্দর দিয়ে ভারতের সাথে বিভিন্ন পণ্যসহ মালামাল আমদানি রপ্তানি হতো। সে সময়ে দু’দেশের নাগরিকরাও বৈধ পাসপোর্ট নিয়ে আসা যাওয়া করতেন। ২০০২-০৩ সালে ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদি উলফা বৈধপথে বাংলাদেশ থেকে ভারতে যাওয়ার পথে তাদের উপর হামলা চালাতো, অনেককেই তুলে নিয়ে যেত। উলফার উৎপাতের কারণে কর্তৃপক্ষ এ স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশিদের ভারতে যাতায়াত বন্ধ করে দেয়। কিন্তু ভারতীয়দের আসা-যাওয়া বহাল থাকে। প্রায় ১১ বছর ধরে উলফার উৎপাতের কোন আশঙ্কা নেই, তবুও চালু হয়নি বাংলাদেশিদের ভারত যাতায়াত সুবিধা। এ অঞ্চলের লোকজনের দীর্ঘদিনের দাবি ভারতে যেতে হলে তাদের অন্যান্য দুরবর্তী স্থলবন্দর দিয়ে যেতে হয়। জেলার মধ্যে রাগনা-বটুলি স্থলবন্দর দিয়ে বিভিন্ন পণ্য আমদানি রপ্তানি হয়। ভারতীয়রা এ স্থলবন্দর দিয়ে আসতে পারছে। তাই এ অঞ্চলবাসির জোরালো দাবি, তারাও যাতে এ স্থলবন্দর দিয়ে ভারতে যাতায়াত করতে পারেন।
বন্দর সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে প্রতি বৎসর জুড়ীর বাগনা-বটুলী স্থলবন্দর থেকে সরকার বছরে ১৩-১৪ কোটি টাকা রাজস্ব আয় করছে। শুল্ক স্থলবন্দরের জন্য ৩৮ বিঘা জমি একোয়ার করা হলেও কার্যক্রমের অগ্রগতি দীর্ঘদিন ধরে ফাইলবন্দি। ২৭ কিলোমিটার ছোট এবং জরাজীর্ণ রাস্তার জন্য বন্দরের আমদানি রপ্তানিকৃত গাড়ি পণ্য নিয়ে যাতায়াত করতে চরম দুর্ভোগে পড়তে হয়। ১২ ফুট প্রশস্থ রাস্তা ১৮ ফুটে উন্নীত করে হাইওয়ে রাস্তায় রূপান্তর করা হয়েছে। এলাকার সংসদ সদস্য ও পরিবেশমন্ত্রী শাহাব উদ্দিন এ রাস্তার জন্য ৭৩ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছেন। আগামী ৩০ জুলাই এ রাস্তার কাজ সম্পন্ন হওয়ার কথা রয়েছে। বন্দর স্থাপনের প্রায় দুই যুগ অতিবাহিত হলেও রাস্তার কাজ ছাড়া এখনো দৃশ্যমান কোন উন্নতি হয়নি। অবহেলায় পড়ে আছে স্থলবন্দরের ছোট্ট অফিসটি। বৃষ্টি হলে অফিসে থাকা কাগজপত্র পানিতে ভিজে নষ্ট হয়। আসবাবপত্রের সংকটে কর্মকর্তা কর্মচারীরা গাদাগাদি করে দায়িত্ব পালন করেন। জনবল সংকট, অবকাঠামোর সমস্যা, অফিস ইকুইপম্যান্ট সমস্যাসহ নানবিধ সমস্যায় জর্জরিত রাগনা-বটুলী স্থলবন্দর।
জুড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বদরুল ইসলাম, উপজেলা চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা এমএ মোঈদ ফারুক, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ফুলতলা ইউপি চেয়ারম্যান মাসুক আহমদ, গোয়ালবাড়ি ইউপি চেয়ারম্যান শাহাব উদ্দিন লেমন, উপজেলা যুবলীগের সভাপতি মামুনুর রশিদ সাজু, আওয়ামী লীগ নেতা জাকির হোসেন কালাসহ এলাকবাসি রাগনা-বটুলী স্থলবন্দরের এসব সমস্যার দ্রুত সমাধান ও এ চেকপোষ্ট দিয়ে ভারতে যাওয়া-আসার দ্রুত ব্যবস্থা নিতে মন্ত্রী শাহাব উদ্দিনসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।