শিলায় নষ্ট ধর্মপাশার বোরো
প্রকাশিত হয়েছে : ০৯ এপ্রিল ২০২১, ৭:৫৯:১২ অপরাহ্ন
তৌহিদ চৌধুরী প্রদীপ : সুনামগঞ্জের ধর্মপাশায় কালবৈশাখী ঝড় ও শিলাবৃষ্টির আঘাতে ৫টি ইউনিয়নের প্রায় ২ হেক্টর জমির পাকা ও আধা পাকা বোরো ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে এক আকস্মিক কালবৈশাখী ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে উপজেলা সদর ইউনিয়ন, সেলবরষ ইউনিয়ন, পাইকুরাটি ইউনিয়ন, সুখাইর-রাজাপুর উত্তর ইউনিয়ন ও মধ্যনগর ইউনিয়নের কয়েক হাজার কৃষক তাদের বছরের একমাত্র বোরো ফসল হারিয়ে এখন দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।
এদিকে, ফসলহানীর ঘটনায় এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের কান্না ও আহাজারিতে পুরো হাওর এলাকার বাতাস ভারী হয়ে উঠেছে। উপজেলার সেলবরষ ইউনিয়নের খলাপাড়া গ্রামের কৃষক ইবাদুল ইসলাম কান্না জড়িত কণ্ঠে বলেন, বাড়ির পাশের কেউডির হাওর, কাডা আছরা হাওর ও মেধার হাওরে থাকা আমার প্রায় ১০ একর জমিতে দেড় লাখ টাকা ধার-দেনা করে বোরো আবাদ করেছিলাম। আমার সব জমির ধান পাকতে শুরু করেছিল। ২-৩ দিনের মধ্যেই আমার জমির পাকা ধান কাটার প্রস্তুতি নিয়েছিলাম। কিন্তু বৃহস্পতিবার রাতে বয়ে যাওয়া কাল বৈশাখী ঝড় ও শীলা বৃষ্টিতে আমার সব শেষ করে দিছে। এক কেজি ধানও ঘরের তুলার মতো আর রইলনা। এখন আমি কি করব কিছুই বুঝে উঠতে পারছিনা।
উপজেলার সুখাইড়-রাজাপুর দক্ষিণ ইউনিয়নের গুলুয়া গ্রামের ষাট উর্ধ্ব কৃষক ইদ্রিস মিয়া বলেন, ধারাম হাওরে আমার প্রায় ৪৫ একর জমিতে সাড়ে ৪ লাখ টাকা খরচ করে এবার বোরো আবাদ করেছি। শিলাবৃষ্টিতে আমার সব শেষ হয়ে গেছে।
উপজেলার পাইকুরাটি ইউপি চেয়ারম্যান মো, ফেরদৌসুর রহমান বলেন, গত রাতে শিলাবৃষ্টি ও কালবৈশাখী ঝড়ে আমার ইউনিয়নের ভাটগাঁও, জামালপুর, বেখৈজুড়া, সুনুই ও আলীপুর এই পাঁচটি গ্রামের কৃষকের খুব বেশী ক্ষতি হয়েছে। বিষয়টি আমি উপজেলা প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো, নাজমুল ইসলাম শুক্রবার বিকালে বলেন, এবার চলতি বোরো মৌসুমে এ উপজেলার ১০টি ইউনিয়নের ৮টি বড় ৮টি হাওরে মোট ৩১ হাজার ৮৫০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ করা হয়েছে। আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় এবার বোরোর বাম্পার ফলন হয়েছিল। গত ৪ এপ্রিল সন্ধ্যায় বয়ে যাওয়া এক আকস্মিত গরম ঝড়ো হাওয়ায় আশপাশের বিভিন্ন উপজেলায় বোরো ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হলেও আমাদের এখানে তেমন ক্ষতি হয়নি। কিন্তু বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে এ উপজেলার ৫টি ইউনিয়নের উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া কালবৈশাখী ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে ওইসব এলাকার কৃষকের প্রায় ১ হাজার ৬ শত হেক্টর জমির পাকা ও আধা পাকা বোরো ধানের ক্ষতি হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।