চলে গেলেন খ্যাতিমান সাংবাদিক হাসান শাহরিয়ার, দাফন সম্পন্ন
প্রকাশিত হয়েছে : ১০ এপ্রিল ২০২১, ৮:৪০:৫২ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার : জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি, দৈনিক ইত্তেফাকের সাবেক নির্বাহী সম্পাদক, কমনওয়েলথ জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের (সিজেএ) ইন্টারন্যাশনাল প্রেসিডেন্ট ইমেরিটাস ও বৃহত্তর সিলেটের কৃতি সন্তান হাসান শাহরিয়ার আর নেই। শনিবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেন তিনি (ইন্নালিল্লাহি ওয়াইন্নাইলাহি রাজিউন)।
তার বয়স হয়েছিল ৭৬ বছর। তিনি দীর্ঘদিন ধরে ফুসফুসে সংক্রমণসহ বিভিন্ন জটিল রোগে ভুগছিলেন। ৮ এপ্রিল রাতে গুরুতর অসুস্থ হলে তাকে প্রথমে ল্যাব এইড হাসপাতালে এবং পরে আনোয়ার খান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছিল। কোথাও আইসিইউ বেড না পাওয়ায় তাকে ইমপালস হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছিল। সেখানেই শনিবার তার মৃত্যু হয়। শনিবার বাদ আসর জাতীয় প্রেসক্লাবে জানাযা শেষে রায়েরবাজার বুদ্ধিজীবি কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। সুনামগঞ্জের তাহিরপুরে তার নিজ এলকায় নিয়ে আসার কথা থাকলেও পরে সিদ্ধান্ত বাতিল হয়।
হাসান শাহরিয়ার ১৯৪৪ সালের ২৫ এপ্রিল সুনামগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ৬০-এর দশকে দৈনিক ইত্তেফাকে সাংবাদিকতা শুরু করেন। এরপর পাকিস্তানের করাচিতে পড়াশুনা ও দৈনিক ডন পত্রিকায় কাজ করেন। সেখানে ইত্তেফাকের প্রতিনিধি ছিলেন। সত্তরের দশকের শুরুতে ঢাকায় এসে দৈনিক ইত্তেফাকে কাজ শুরু করেন। ২০০৮ সালে নির্বাহী সম্পাদক হিসেবে অবসর নেন। ইত্তেফাকের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক সাময়িকী নিউজ উইক, আরব নিউজ, ডেকান হ্যারাল্ডসহ বিভিন্ন পত্রিকায় বাংলাদেশের প্রতিনিধি ছিলেন। কমনওয়েলথ জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের (সিজেএ) আন্তর্জাতিক সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯৩-৯৪ সালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি ছিলেন।
হাসান শাহরিয়ারের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। এক শোকবার্তায় রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘সাংবাদিকতায় তাঁর অবদান মানুষ শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করবে।’
হাসান শাহরিয়ারের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও। এক শোকবার্তায় তিনি বলেন, এদেশের সাংবাদিকতায় হাসান শাহরিয়ারের ভূমিকা স্মরণীয় হয়ে থাকবে। প্রধানমন্ত্রী মরহুমের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
হাসান শাহরিয়ার সিলেটের কৃতি সন্তান সাংবাদিক মরহুম মকবুল হোসেন চৌধুরীর কনিষ্ট পুত্র এবং আইনজীবী ও কলামিস্ট হোসেন তওফিক চৌধুরীর অনুজ। তার মূল বাড়ি সুনামগঞ্জ জেলার তাহিরপুর উপজেলার বিন্নাকুলী গ্রামে। পিতা মকবুল হোসেন চৌধুরী অবিভক্ত আসাম-বাংলার বিশিষ্ট সাংবাদিক, সাহিত্যিক, রাজনীতিবিদ, খেলাফত আন্দোলনের নেতা ও ভাষাসংগ্রামী ছিলেন। তিনি মুসলিম লীগের মনোনয়নে ১৯৩৭ সালে আসাম ব্যবস্থাপক পরিষদের এম.এল.এ নির্বাচিত হন। তিনি ছিলেন বাংলাদেশের অন্যতম প্রাচীন পত্রিকা ‘যুগভেরী’র (১৯৩২) প্রথম সম্পাদক। সিলেটের ‘যুগবাণী’ (১৯২৫) ও কলকাতার দৈনিক ‘ছোলতান’ (১৯৩০) পত্রিকারও সম্পাদক ছিলেন।