সিলেটে চাকরি ঝুঁকিতে অর্ধলক্ষ পর্যটন কর্মী
প্রকাশিত হয়েছে : ১১ এপ্রিল ২০২১, ৭:৫৩:৪১ অপরাহ্ন
হুমায়ুন কবির লিটন: করোনাকালে সিলেটে চাকরি হারানোর ঝুঁকিতে রয়েছেন প্রায় অর্ধলক্ষ পর্যটন কর্মী। পর্যটনে জড়িত বিপুল সংখ্যক মানুষ বৈশ্বিক মহামারীর প্রভাবে কর্মহীন হয়ে পড়বেন বলে আশঙ্কা সংশ্লিষ্টদের। ইতিমধ্যে সিলেটে পর্যটন কেন্দ্র বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এতে কর্মহীন রয়েছেন অর্ধলক্ষ পর্যটন কর্মী।
বৃহত্তর সিলেটে এই শিল্পে কর্মরতদের সঠিক পরিসংখ্যান নেই কোথাও। ট্যুর অপারেটর, ট্রাভেল এজেন্সি, হোটেল-মোটেল ছাড়াও পর্যটন স্পট কেন্দ্রিক ব্যবসায় যুক্ত এই মানুষদের সামনে চরম অনিশ্চয়তা বিরাজ করছে। চলতি মাসে সিলেটের সার্বিক পর্যটন শিল্পে কয়েক কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। গত মার্চ থেকেই করোনার প্রাদুর্ভাব বাড়তে থাকলে সিলেট ভ্রমণের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি হয়। এরপরই অনেকটা মুখ থুবড়ে পড়ে পর্যটন খাতে যুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলো।
ফলে করোনার বিস্তৃতির সঙ্গে সঙ্গে এই সেক্টরের কর্মীদের চাকরি হারানোর ঝুঁকিও বাড়ছে। গত দুই সপ্তাহেরও কম সময়ে চাকরি হারানোর এই ঝুঁকি ৫০ শতাংশ বেড়েছে।
চাকুরি হারানোর ঝুঁকি প্রসঙ্গে হোটেল গ্রান্ড ভিউয়ের অপারেশন ম্যানেজার সৈয়দ আফজাল জাকির জানান, ইতিমধ্যে আমাদের অনেক স্টাফকে ছুটি দেওয়া হয়েছে। এটাই চাকুরি হারানোর লক্ষণ বলে মনে করছেন তিনি। আফজাল বলেন, হোটেল বন্ধ থাকায় আমি নিজেও চাকুরি হারানোর ঝুঁকিতে আছি।
২০২০ সালের মার্চ মাস থেকে সিলেটের পর্যটন কেন্দ্রগুলা বন্ধ থাকলে গত বছর সেপ্টেম্বর মাস থেকে পুনরায় খুলে দেওয়া হয়। গত কয়েকমাস অভ্যন্তরীন পর্যটকদের আনাগুনায় মুখরিত ছিল সিলেটের পর্যটন কেন্দ্রগুলা। এতে পর্যটন ব্যবসায়ীরা কিছুটা আশার মুখ দেখেছিলেন।
তবে চলতি বছরের মার্চ থেকে ২য় বার দেশে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে পর্যটন ব্যবসায় দেখা দিয়েছে ছন্দপতন। করোনার প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে পর্যটন কেন্দ্র বন্ধ ঘোষণা করার ফলে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েন সিলেটের পর্যটন ব্যবসায়ীরা। বিভিন্ন দেশে কোভিড-১৯ রোগের প্রাদুর্ভাবের কারণে পর্যটনের ভরা মৌসুমে সিলেটে বিদেশীদের আসা প্রায় বন্ধ ছিল।
সিলেটের পর্যটন শিল্প একটি উদীয়মান শিল্প এবং কয়েক বছরে পর্যটন শিল্পের চোখে পড়ার মতো উন্নতি হলেও করোনাভাইরাসের মহামারীতে তাতে ধস নেমেছে। ইতিমধ্যে সিলেটে সব ধরনের হোটেল, মোটেল, রেস্তোরাঁ বন্ধ হয়ে গেছে। বড় অংকের লোকসান গুণতে গুণতে কর্মচারীদের বেতন-ভাতা চালু রাখতে হিমশিম খেতে হচ্ছে মালিকদের। বেকার হয়ে পড়েছেন ট্যুর গাইডসহ এ খাতের উপর নানাভাবে নির্ভরশীল পরিবারগুলো। এতদিন পর্যটকদের সেবা দিয়ে আসা প্রাইভেট কার, মাইক্রোবাসসহ বিভিন্ন যানবাহনের চালকদের জীবন-জীবিকাও থমকে আছে। পর্যটন কেন্দ্র বন্ধ ঘোষণার শুরুতে ট্যুর অপারেটরা অফিস বন্ধ করে কর্মী ছাঁটাই করে দিয়েছেন।
এ বিষয়ে অনলাইন ট্যাভেলার্স গ্রুপ নেক্সট ট্যাভেলার্স এর এডমিন হাসান সায়েম বলেন, পর্যটন কেন্দ্র বন্ধ ঘোষণার পর আমরা সব প্যাকেজ ট্যুর বন্ধ করে দিয়েছি। ফলে আমিসহ আমাদের সাথে জড়িতরা মারাত্মক আর্থিক সংকটে পড়ে যাই। এই পরিস্থিতিতে আমরা সরকারের প্রণোদনা প্যাকেজের সুবিধা পেতে চাই।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র এবং ট্যুর অপারেটর প্রতিষ্ঠান সিলেট বাংলা ট্যুরস এর ট্যুর গাইড জান্নাতুল ইসলাম জনি জানান, বন্ধের দিন ট্যুর গাইডিং করে নিজের খরচ চালাতাম কিন্তুু বর্তমানে কাজ না থাকায় বেশ আর্থিক সংকটে আছি ।