আজ থেকে সর্বাত্মক লকডাউন
প্রকাশিত হয়েছে : ১৩ এপ্রিল ২০২১, ১০:২৯:২৪ অপরাহ্ন
*সহস্রাধিক পুলিশ তৎপর থাকবে
*স্থানে স্থানে চেক পোষ্ট ও ভ্রাম্যমাণ আদালত
এমজেএইচ জামিল: করোনার সংক্রমণ রোধে আজ থেকে ৭ দিনের কঠোর লকডাউনে যাচ্ছে দেশ। সিলেটেও লকডাউনকে ঘিরে চলছে নানা প্রস্তুতি। জনসাধারণ ঘরে থাকার জন্য প্রয়োজনীয় কেনাকাটা সম্পন্ন করেছেন। আর প্রশাসনের পক্ষ থেকে জনসাধারণকে ঘরে রাখতে চলছে নানা প্রস্তুতি। সরকারের জারিকৃত প্রজ্ঞাপন বাস্থবায়নের জেলা প্রশাসন, সিলেট সিটি কর্পোরেশন, সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ ও সিলেট জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে বিস্তারিত পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে ঘরে থাকার আহ্বান জানিয়ে সরকারী প্রজ্ঞাপন জানিয়ে নগরীতে মাইকিং করা হয়েছে। সর্বাত্মক লকডাউনের প্রথম দিন পহেলা বৈশাখ বাংলা নববর্ষ হলেও সিলেটে নেই কোন আয়োজন। সর্বাত্মক লকডাউনকে ঘিরে সিলেটে বিরাজ করেছে অন্যরকম পরিবেশ। সদ্য সমাপ্ত নিষেধাজ্ঞায় নামে বিধিনিষেধ থাকলেও বাস্তবে সিলেট চলেছে বিধিনিষেধ উপেক্ষা করেই। সর্বাত্মক লকডাউন কতটা কার্যকর হতে পারে সেই দৃশ্যের প্রতিক্ষায় জনসাধারণ।
সিলেট জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, সর্বাত্মক লকডাউনে জনসাধারণকে ঘরে রাখতে সিলেট জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিস্তারিত উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। জেলার আওতাধিন সকল উপজেলায় ইউএনও ও এসিল্যান্ডের নেতৃত্বে পৃথক পৃথক ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার করা হবে। এছাড়াও সিলেট নগরীতে জেলা প্রশাসনের নেতৃত্বে একাধিক ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হবে। কোন অবস্থাতেই প্রজ্ঞাপন উপেক্ষা করলে কাউকে ছাড় দেয়া হবেনা। এব্যাপারে অতিরিক্ত সিলেট জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ইমরুল হাসান দৈনিক জালালাবাদকে বলেন, সর্বাত্মক লকডাউন কার্যকর করতে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সকল ধরণের প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে উপজেলা পর্যায়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। সিলেট নগরীতে জেলা প্রশাসনের ম্যাজিস্ট্রেটের সমন্বয়ে একাধিক ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালিত হবে।
জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, করোনার সংক্রমণ রোধে বুধবার থেকে সর্বাত্মক লকডাউনে জেলা পুলিশের সহ¯্রাধিক পুলিশ সদস্য উপজেলা পর্যায়ে দায়িত্ব পালন করবে। তারা স্ব স্ব উপজেলা ও থানায় ভ্রাম্যমাণ আদালতকে সহযোগিতার পাশাপাশি বিভিন্ন স্থানে চেক পোষ্ট বসিয়ে সরকারী প্রজ্ঞাপন মেনে চলতে জনসাধারণকে বাধ্য করবে। এব্যাপারে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার লুৎফুর রহমান দৈনিক জালালাবাদকে বলেন, উপজেলা পর্যায়ে লকডাউন কার্যকরে জেলা পুলিশের ১ হাজারের অধিক পুলিশ সদস্যকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সিলেট নগরীতে জনসাধারণকে লকডাউন মেনে চলতে বাধ্য করতে এসএমপির সকল থানা পুলিশকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। নগরীতে জেলা প্রশাসন ও সিলেট সিটি কর্পোরেশন পরিচালিত ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনায় মেট্রোপলিটন পুলিশ সর্বাত্মক সহযোগিতা করবে। পাশাপাশি নগরীর প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে পুলিশ চেকপোষ্ট বসিয়ে প্রজ্ঞাপনের আদেশ পালনে জনসাধারণকে বাধ্য করবে। এব্যাপারে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (মিডিয়া) বিএম আশরাফ উল্যাহ তাহের দৈনিক জালালাবাদকে বলেন, করোনার সংক্রমণ রোধে সরকার ঘোষিত লকডাউন কার্যকর করতে এসএমপির সকল পুলিশ সদস্য নগরীতে পর্যায়ক্রমে দায়িত্ব পালন করতে প্রস্তুত রয়েছে। এসএমপির সকল থানা ও পুলিশ ফাঁড়িতে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে।
সিলেট সিটি কর্পোরেশন সূত্রে জানা গেছে, ৭ দিনের সর্বাত্মক লকডাউন কার্যকরে সিসিকের পক্ষ থেকে বেশকিছু পদক্ষেপ হাতে নেয়া হয়েছে। নগরীতে সচেতনতামুলক মাইকিং মঙ্গলবার থেকে চালু হয়েছে। লকডাউন চলাকালেও মাইকিং চলবে। ম্যাজিস্ট্রেটের বদলী জনিত কারণে সিসিকের ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। তবে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট পরিচালিত ভ্রাম্যমাণ আদালতের সাথে সিসিকের সমন্বয় থাকবে।
এব্যাপারে সিসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বিধায়ক রায় চৌধুরী দৈনিক জালালাবাদকে বলেন, সর্বাত্মক লকডাউন কার্যকর করতে সিসিকের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে নগরীতে ৫টি সিএনজির মাধ্যমে জনসচেতনতামুলক মাইকিং চালু করা হয়েছে। লকডাউনের দিনেও তা অব্যাহত থাকবে।
সিসিকের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা: মোঃ জাহিদুল ইসলাম দৈনিক জালালাবাদকে বলেন, লকডাউন চলাকালে আমাদের ভ্যাকসিন কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। আমাদের স্বাস্থ্যকর্মীগণ দায়িত্ব পালন করবে। বিকেল ৩টা পর্যন্ত নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দোকান ও কাচাঁ বাজার চালু থাকায় ৩টার পর সিসিকের জীবানুনাশক স্প্রে প্রদান কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। এছাড়ার হোটেল রেস্তোরা বন্ধ হওয়ার পর সেখানে জীবাণুনাশক স্প্রে প্রদান অব্যাহত থাকবে।