লকডাউনে দুশ্চিন্তায় ব্যবসায়ীরা
প্রকাশিত হয়েছে : ১৪ এপ্রিল ২০২১, ৩:৩০:০০ অপরাহ্ন
এ টি এম তুরাব :
করোনাভাইরাসের প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় সাধারণ ছুটির পরিবর্তে এবার কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করে এক সপ্তাহের লকডাউন ঘোষণা দিয়েছে সরকার। এর ফলে আজ বুধবার থেকে ২১ এপ্রিল পর্যন্ত জরুরী সেবা ছাড়া সবই বন্ধ থাকবে। এতে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীদের মধ্যে।
তারা বলছেন, লকডাউন দীর্ঘ হলে ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি দিনমজুর, রিকশাচালক ও স্বল্প আয়ের মানুষেরা সবচেয়ে বড় সমস্যায় পড়বেন।
এ দিকে চলমান এক সপ্তাহের ঢিলেঢাল লকডাউন শেষ হয়েছে ১১ এপ্রিল রাত ১২টায়। আজ বুধবার থেকে ফের এক সপ্তাহের জন্য সর্বাত্মক লকডাউন শুরু হয়েছে।
ব্যবসায়ী নেতারা বলছেন, করোনা মোকাবিলায় লকডাউন এখন ভোঁতা যন্ত্র। এখন সময় স্মার্ট লকডাউনের। অফিস চলবে, তবে কম লোকবল দিয়ে। দোকানপাট খোলা থাকবে ২৪ ঘণ্টা, স্বাস্থ্যবিধি মেনে কেনাকাটা চলবে। মাস্ক ছাড়া কেউ বের হতে পারবে না। তাহলে সবকিছু ঠিক থাকবে। এ জন্য সরকারকে সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা গ্রহণ করা উচিত। এতে অর্থনীতি ধরে রাখা যাবে, মানুষের মৃত্যু ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণও কমবে। তারা বলেন, গত বছরে যে ক্ষতি হয়েছে, তা কাটিয়ে উঠতে কয়েক বছর লাগবে। কেউ সম্পদ বিক্রি ও কেউ ঋণ নিয়ে টিকে আছে। পহেলা বৈশাখ, রমজান ও ঈদে কিছু বিক্রি করে লোকসান সামাল দেব। কিন্তু হঠাৎ সর্বাত্মক লকডাউন ঘোষণায় সেই সুযোগও বন্ধ শেষ হয়ে গেছে। এখন দোকান বন্ধ রাখতে হলে পথে বসা ছাড়া কোনো উপায় থাকবে না।
◾করোনার প্রভাব◾
জানা গেছে, গত বছরে দেশে করোনাভাইরাসের প্রকোপ বাড়তে থাকলে সরকার ২৬ মার্চ থেকে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে, যা কয়েক দফায় বাড়ানোর পর ৩০ মে শেষ হয়। এই সময়ে জরুরী সেবা ছাড়া সরকারী সব দপ্তর বন্ধ ছিলো। ওষুধের দোকান ছাড়া বন্ধ ছিলো সব দোকানপাট। পোশাক কারখানার পাশাপাশি ব্যাংকের সেবা সীমিত আকারে চালু ছিলো। ফলে অর্থনীতিতে বড় ধরনের বিপর্যয়ের মুখে পড়ে।
এ দিকে চলতি বছরের মার্চের শেষের দিকে ফের করোনার সংক্রমণ ও মৃত্যুর আশঙ্কাজনক বেড়ে যায়। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ৫ এপ্রিল থেকে ১১ এপ্রিল পর্যন্ত শপিং মল, দোকান-পাট, হোটেল-রেস্তোরাঁ, গণপরিবহনসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিলো সরকার। পরে তা শিথিল করে দোকানপাট ও শপিংমল খোলা রাখা এবং সিটি করপোরেশন এলাকায় সকাল-সন্ধ্যা গণপরিবহন চলাচলের অনুমতি দিলেও পরে বন্ধ করে দেওয়া হয়।
এর মধ্যে গত বুধবার করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধির এবং শনিবার মৃত্যুর সংখ্যায় রেকর্ড হয়েছে। এরপর সরকার ফের কঠোর লকডাউনের সিদ্ধান্ত নেয়। আজ বুধবার থেকে সর্বাত্মক লকডাউন শুরু হয়েছে। এতে বন্ধ থাকবে সরকারী-বেসরকারী অফিস, ব্যাংকসহ সব কিছু।
সিলেট ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি জিয়াউল হক জালালাবাদকে বলেন, ব্যবসায়ীরা সরকারী সিদ্ধান্তের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। একসপ্তাহ লকডাউন থাকলে আমাদের তেমন সমস্যা নেই। আমাদের মূল্য লক্ষ্য ঈদ। গতবার ঈদে কোনো ব্যবসা হয়নি, তাই এবার ব্যবসায়ীরা বড় বিক্রির আশা নিয়ে প্রস্তুতি নিচ্ছি। যদি লকডাউন দীর্ঘ হয়, তাহলে আমাদের জন্য বড় বিপদ হয়ে যাবে।