নামাজের সময় মসজিদ গেইটে তালা: মুসল্লীদের বিক্ষোভ
প্রকাশিত হয়েছে : ১৫ এপ্রিল ২০২১, ৫:৫৭:৩৭ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার: করোনার সংক্রমণ রোধে সরকার ঘোষিত সর্বাত্মক লকডাউনে সর্বোচ্চ ২০ জন মুসল্লীর উপস্থিতিতে মসজিদে জামায়াত আদায় করতে হবে, এমন নির্দেশনা মানতে গিয়ে চরম বিপাকে পড়ছেন মসজিদ কমিটি। পবিত্র রমজান মাসে এমনিতেই মসজিদে মুসল্লীদের উপস্থিত অনেক বেশী থাকে। কোনভাবেই মসজিদমুখী মুসল্লীদের ঠেকাতে পারছেনা কর্তৃপক্ষ। ফলে বাধ্য হয়ে জামায়াত চলাকালেও মসিজদের গেইটে দিতে হচ্ছে তালা। জামায়াত আদায় করতে না পেরে মসজিদের গেইটে মুসল্লীদের বিক্ষোভের ঘটনাও ঘটছে।
বৃহস্পতিবার জোহরের নামাজের সময় নগরীর আম্বরখানা জামে মসজিদে এমনই এক ঘটনা ঘটেছে। গেইটে তালা মেরে ২০ জন মুসল্লীর উপস্থিতিতে জোহর নামাজের প্রস্তুতি নেন ইমাম। এসময় মসজিদ গেইটে বিক্ষোভ করেন মুসল্লীগন। গেইট খুলে না দিলে রাস্তায় দাঁড়িয়ে নামাজ আদায় করবেন বলেও ঘোষণা দেন উপস্থিত শতাধিক মুসল্লি। পরে বাধ্য হয়ে মসজিদের গেট খুলে দেন কর্তৃপক্ষ।
জানা যায়, এমন চিত্র শুধু আম্বরখানা মসিজদেই নয়। নগরীর গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে অবস্থিত অনেক মসজিদে এমন ঘটনা ঘটছে। বুধবার থেকে নগরীর কিছু মসজিদে এভাবে তারাবহি ও অন্যান্য নামাজের সময় ২০ জনের বেশি মুসল্লি ঢুকতে দেয়া হচ্ছে না বলে খবর পাওয়া গেছে। ২০ জনের বেশি মুসল্লি সমাগম ঘটলেই মসজিদের গেটে মারা হচ্ছে তালা। এতে ক্ষোভ বিরাজ করছে সিলেটের মুসল্লিদের মাঝে। নগরীর বিভিন্ন পাড়া মহল্লার মসজিদে অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতি ঠেকাতে নিয়ম উপেক্ষা করেই তারাবিহ সহ বিভিন্ন ওয়াক্তের নামাজের জামায়াত অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
পবিত্র মাহে রমজানে এমন নিয়ম মানতে নারাজ সাধারণ মুসল্লীগণ। তাদের দাবী গার্মেন্টস সহ সরকারী ও বেসরকারী বিভিন্ন অফিস আদালত খোলা থাকলেও মসজিদের জন্য এমন কঠোরতা শতকরা ৯০ ভাগ মুসলমানের দেশে কোনভাবেই কাম্য নয়। সরকারকে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত পূনর্বিবেচনারও আহ্বান জানান তারা।
এ ব্যাপারে জাতীয় ইমাম সমিতি সিলেট মহানগর সভাপতি মাওলানা হাবিব আহমদ শিহাব বলেন, রমজান মাস হচ্ছে কুরআন নাযিলের মাস। এই মাসের গুরুত্ব সারা বছরের মধ্যে বেশী। এ মাসে মসজিদে ইবাদত বন্দেগী করার জন্য মানুষের ঢল নামে। এমন সময়ে ২০ জনের সংখ্যা নির্ধারণ করে না দিয়ে যদি শারীরিক দুরত্ব বজায় রাখা সহ অন্যান্য স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার নির্দেশনা দেয়া হতো তাহলে ভালো হতো। রমজান মাসে মসজিদে বেশী সংখ্যক মুসল্লীদের উপস্তিতিতে ইবাদত বন্দেগীর ফলে দেশ থেকে মহামারী সহ অন্যান্য মুসিবত দুর হবে। দেশের স্বার্থে সর্বাত্মক লকডাউনে বিভিন্ন সেক্টর খোলা রাখা হচ্ছে। দ্বীনের স্বার্থে মসজিদে মুসল্লীর উপস্থিতির বিষয়টিও সরকারের পুনর্বিবেচনা করা উচিত।
উল্লেখ্য, চলমান করোনা পরিস্থিতিতে পবিত্র রমজানে তারাবিসহ অন্যান্য নামাজে খতিব, ইমাম, হাফেজ, মুয়াজ্জিন ও খাদেমসহ সর্বোচ্চ ২০ জন মুসল্লি অংশ নিতে পারবেন বলে নির্দেশনা দিয়েছে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়।
নির্দেশনায় বলা হয়, মসজিদে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের প্রতি ওয়াক্তে সর্বোচ্চ ২০ জন মুসল্লি অংশ নেবেন। তারাবির নামাজে খতিব, ইমাম, হাফেজ, মুয়াজ্জিন ও খাদেমসহ সর্বোচ্চ ২০ জন এবং জুমার নামাজে সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে মুসল্লিরা অংশ নেবেন।