সড়কে রিক্সা, অটোরিকশা ও মোটরসাইকেলের দাপট
প্রকাশিত হয়েছে : ১৮ এপ্রিল ২০২১, ১২:০১:০৪ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার :
করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে সর্বাত্মক লকডাউনের চতুর্থ দিনে সিলেটে যানচলাচল আরো বেড়েছে। আগের তিন দিন থেকে বেড়েছে মানুষের উপস্থিতিও। তবে সবচেয়ে বেশী বেড়েছে মোটর সাইকেল রাইডারদের তৎপরতা। অ্যাপে পরিচালিত এসব মোটরবাইকগুলো লকডাউনে অ্যাপের পরিবর্তে চুক্তিতে যাত্রী পরিবহন করছে।
শনিবার ছুটির দিনে নগরী ঘুরে দেখা গেছে, আগের তিন দিনের তুলনায় রিকশা, মোটরসাইকেল, প্রাইভেট কার ও সিএনজিচালিত অটোরিকশা চলছে দেদারছে। সকালে কম থাকলেও বেলা বাড়ার সাথ সাথে বাড়তে থাকে এসব যান। লকডাউন ঘোষণার পর রাইড শেয়ারিং কোম্পানি উবার ও পাঠাও তাদের যাত্রী পরিবহন বন্ধ রেখেছে। জনপ্রিয় এ দুটি রাইড শেয়ারিং কোম্পানি তাদের সেবা বন্ধ রাখলেও থেমে নেই মোটরবাইকে যাত্রী পরিবহন। অ্যাপের পরিবর্তে এখন ‘খ্যাপে’ চলছে যাত্রী পারাপার। এ নিয়ে পুলিশের কড়াকড়ি অবস্থান থাকলেও চোখ ফাঁকি দিয়েই চলছে সেবাটি। আর মোটর সাইকেল রাউডারদের দেখা যায় আম্বরখানা, টিলাগড়, বন্দরবাজার কোর্ট পয়েন্ট, দক্ষিণ সুরমার হুমায়ূন রশিদ চত্বর, চন্ডিপুল, শিববাড়ি এলাকার সড়কের পাশে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে থাকতে। এসময় তারা যাত্রীদের ডেকে ডেকে পরিবহনের চেষ্টা করছে। রাইডারদের চালকদের দাবি, লকডাউনে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন তারা। সরকারি বিধিনিষেধে তাদের উপার্জনের পথ এখন বন্ধ। তাই পেটের তাগিদে লুকোচুরি করে খাটছেন তারা। সাধারণ যাত্রীরা অভিযোগ, অ্যাপের চেয়ে চুক্তিতে মোটরবাইক চালকরা কয়েকগুণ বেশি টাকা আদায় করছে। তাছাড়া গণপরিবহন বন্ধের সুযোগও তারা নিচ্ছেন। এতে বাধ্য হয়েই গন্তব্যে পৌঁছার কারণে তাদের দাবীকৃত ভাড়াই পরিশোধ করতে হচ্ছে যাত্রীদের।
পুলিশের দাবি, এসব চালকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে পুলিশ। ইতিমধ্যে তিন দিনে ৮৯টি মোটরসাইকেল আটক করা হয়েছে। এছাড়া লকডাউন বাস্তবায়নে কঠোর অবস্থানে রয়েছে পুলিশ। এক পুলিশ সদস্য বলেন, বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে অবস্থানরত ট্রাফিক পুলিশের সদস্যরা মোটরবাইকে দুইজন পরিবহন হতে দেখলেই মামলা দিচ্ছেন। এমতাবস্থায় গুরুত্বপূর্ণ ট্রাফিক সিগন্যালগুলো এড়িয়ে চলার চেষ্টা করেন মোটরবাইক চালকরা।
এদিকে, নগরী ঘুরে দেখা যায় বন্দরবাজার, জিন্দাবাজার রিকাবিবাজার, মদিনা মার্কেট এলাকায় গত আগের তিন দিনের তুলনায় মানুষের আনাগোনা অনেক বেশি। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য বা মুদি দোকানের পাশাপাশি একটি-দুটি করে খুলছে অন্যান্য দোকান। প্রায় দোকানী এক সাটার খোলা রেখে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন। তবে এসব দোকানে ক্রেতার উপস্থিতি কম। একই সাথে ভ্রাম্যমাণ ব্যাবসায়ীদেরও সড়কে বসে ব্যবসা করতে দেখা গেছে। এতে বেড়েছে মানুষের আনাগোনা বা চলাচল।
একই চিত্র দেখা গেছে নগরের আম্বরখানা, চৌহাট্টা, শিবগঞ্জ, উপশহর, টিলাগড়, শিবগঞ্জ, নাইওরপুল, মেডিকেল, পাঠানটুলা এলাকাসহ বেশ কয়েকটি এলাকা। তাতে দেখা যায়, এসব এলাকার নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের সকল দোকান খুলেছে। এসব দোকানে বিভিন্ন পণ্য কিনতে আসছেন অনেকেই। এর বাইরে অনেককেই দেখা গেল কৌতূহলবশত বাসার বাইরে বের হতে বা ঘুরতে। এছাড়া আবাসিক এলাকার অধিকাংশ দোকানপাটই ছিল খোলা।
শনিবার দুপুর থেকে নগরের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে পুলিশের কঠোর উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়নি। তবে আগের তিন দিনের মতোই ভোর থেকে নগরীর সকল প্রবেশপথ ও গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে চৌকি বসিয়ে তল্লাশি শুরু করে পুলিশ। কিন্তু পুলিশ চেকপোস্টগুলো আগের চেয়ে কিছুটা নমনীয়।
তবে এসএমপি এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, সরকার ঘোষিত চলমান লকডাউনে নগরবাসীকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা এবং জরুরী প্রয়োজনে মুভমেন্ট পাস অ্যাপস ব্যবহার করাসহ সরকারী নির্দেশনা বাস্তবায়নে সার্বক্ষনিক তৎপর রয়েছে পুলিশ।