বাঁশ ব্যারিকেডেও মুখর নগরী
প্রকাশিত হয়েছে : ২০ এপ্রিল ২০২১, ১০:৪২:০৭ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার : পুলিশের বাঁশের ব্যারিকেড গতকালও ছিলো নগরীর ১৪ পয়েন্টে। তবুও প্রথম দফার লকডাউনের শেষ দিন অর্থাৎ সপ্তম দিনে সিলেটের রাস্তা ছিলো আরো সরব। নগরীর বিভিন্ন এলাকা মানুষের আনাগোনায় ছিলো আরো মুখর। যথারীতি যানবাহনের চাপ ছিলো অলিগলিতে।
করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে সারাদেশে চলছে সর্বাত্মক লকডাউন। লকডাউনে রাস্তায় যানবাহন ও মানুষের চলাচল নিয়ন্ত্রণ করতে সিলেটে ট্রাফিক বিভাগ সোমবার থেকে শুরু করে অভিনব বাঁশ ব্যারিকেড। তাদের এ উদ্যোগ অনেকের কাছে রূপ নেয় হাস্যরসে। তবে পুলিশ বলছে যান ও মানুষকে ঠেকাতে এর বাঁশের ব্যারিকেডই কার্যকর। এটি অব্যাহত থাকবে। তাই মঙ্গলবারও নগরের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায় বাঁশের ব্যারিকেড রয়েছে। তবুও ঘর থেকে বের হওয়া মানুষের সংখ্যা কমানো যায়নি। ব্যারিকেডের মাঝে প্রধানসড়কগুলোতে যানজটও যেমন দেখা গেছে, তেমনি চাপ বেড়েছে অলিগলিতে।
মঙ্গলবার সকাল থেকে নগরীর শিবগঞ্জ, আম্বরখানা, চৌহাট্টা, লামাবাজার, বন্দরবাজার, ক্বীন ব্রীজের মুখসহ বিভিন্ন এলাকায় বাঁশ ফেলে যানবাহন নিয়ন্ত্রণ করতে দেখা গেছে পুলিশকে। এসব পয়েন্টে পুলিশের কড়া অবস্থানও লক্ষ্য করা যায়। অপ্রয়োজনে এবং মুভমেন্ট পাস ছাড়া যারা বের হয়েছেন তাদের এসব ব্যারিকেডে আটকে দেওয়া হচ্ছে। যারা আটকে পড়ছেন তাদের অনেকেই যানবাহন ছেড়ে দিয়ে হেটে রওয়ানা হন। তবে জরুরী যানবাহন ও মুভমেন্ট পাস নিয়ে আসা যানবাহন ছেড়ে দিতে রাস্তার কিছু অংশ ফাঁক রাখা হয়েছে। ব্যারিকেডে আটকে দেয়ায় উভয়পাশে দীর্ঘ যানজটের চিত্রও দেখা গেছে।
বিকেল ৪টায় বন্দরবাজার সিটি কর্পোরেশনের সামনে বাঁশের ব্যারিকেডে বিপুল পুলিশের উপস্থিত দেখা যায়। পণ্যবাহী ও জরুরী সেবায় নিয়োজিত যানগুলোকে ফাঁক দিয়ে বের করে দেন। তবে অন্য যানগুলো আটকা পড়ে ব্যারিকেডের অপর পাশে। এসময় দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। পরে শেষ বিকেলে পুলিশ চলে গেলে আবার রাস্তাটি স্বাভাবিক হয়। ফাঁক দিয়েই চলে যান।
সপ্তম দিনে ব্যারিকেড বা পুলিশের কড়া অবস্থানেরও পরও অসংখ্য মানুষকে দেখা যায় নগরীর বিভিন্ন এলকায়। তাদের অধিকাংশের মাঝেই স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষিত। একজন পথচারীকে এ ব্যাপারে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, ‘লকডাউন নিয়ে আর বেশী ভাবলে ঘর চলবেনা, পেট চলবেনা। তাই এ নিয়ে আর ভাবতে চাইনা।’ এমন উত্তর আরো অনেক পথচারীর।
তবে গতকালও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য, ফার্মেসী এবং কাঁচাবাজার ছাড়া নগরের সব শপিং মল ও মার্কেট বন্ধ ছিলো। তবে কিছু দোকানপাট অর্ধেক সাটার খুলে ব্যবস্যা পরিচালনা করেছে। এছাড়া লকডাইনে সরকারের নির্দেশ মেনে বন্ধ রয়েছে দূর পাল্লার বাস। বন্ধ ছিলো ট্রেন। তবে পণ্যবাহী ট্রাক চলাচল করেছে। বাস ও ট্রেন চালু না হলেও আজ থেকে অভ্যন্তরীণ বিমান চলবে ঠিকই। এ নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া স্বাস্থ্য সংশ্লিষ্টদের। একজন স্বাস্থ্য কর্মকর্তা জালালাবাদকে বলেন, সব বন্ধ রেখে বিমান চালু স্ববিরোধী সিদ্ধান্ত। এটা কাম্য নয়। খুললে সব খুলে দিন। নইলে লকডাউন পূর্ণরূপে বাস্তবায়ন করুন।
এদিকে, লকডাউনের অন্যান্য দিনের মতো কালও নগরীর রাস্তায় ভাসমান হকারদের উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে। অনেকেই এসব ভাসমান দোকান থেকে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ক্রয় করছেন। তবে আগের ছয় দিনের চেয়ে গতকাল তাদের বেশী দেখা যায় ফুটপাতে। এমন পরিস্থিতিতে আজ থেকে শুরু হচ্ছে দ্বিতীয় দফার ‘সর্বাত্মক’ লকডাউন।