স্বাস্থ্য পরীক্ষা ছাড়াই পশু জবাই, ঝুঁঁকিতে নগরবাসী
প্রকাশিত হয়েছে : ২৪ এপ্রিল ২০২১, ১২:০৫:২৫ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার : সরকারী আইন অমান্য করে স্বাস্থ্যবিধি না মেনে কোনো ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়াই সিলেট নগরীতে যত্রতত্র ভাবে চলছে পশু জবাই। এসব পশুর গোশত বিক্রি হচ্ছে নগরের অলিগলিতে গড়ে ওঠা দোকানগুলোতে। আর এতে মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়ছে মানুষ।
বৃহস্পতিবার নগরীর শিবগঞ্জ বাজারের ‘মাখন মিয়ার গরুর গোস্তের দোকানে গর্ভবতী গাভি জবাই করে গোশত বিক্রির অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় সিলেট সিটি করপোরেশনের ৩ সদস্যের একটি তদন্ত টিম ঘটনা করেছে। প্রাথমিকভাবে তদন্তে ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে বলে সিসিকের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা জানান।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, পশু জবাই ও মাংসের মান নিয়ন্ত্রণ আইন-২০১১ অনুযায়ী কসাইখানার বাইরে এবং কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া পশু জবাই করা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। কিন্তু সিলেট নগরীতে এ আইন কসাইরা মানছেন না, মানছে না সিটি করপোরেশনও। এমনকি রাতে জবাই করা মহিষ দিনে গরুর মাংস বলেও বিক্রি করার অভিযোগ রয়েছে। এতে সিলেট সিটি করপোরেশনের স্বাস্থ্য বিভাগের কিছু অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারী জড়িত রয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এর ফলে চরম স্বাস্থ্যঝুঁঁকিতে রয়েছেন নগরবাসী।
জানা যায়, নগরীতে মাত্র একটি কসাইখানা। সেখানেও পশু জবাইয়ের পরিবেশ নেই। একজন ভেটেরিনারি সার্জন আছেন, তিনিও কসাইখানায় নিয়মিত যান না। রোগাক্রান্ত পশু অবাধে জবাই হচ্ছে। জবাইয়ের আগে প্রতিটি গবাদিপশুর স্বাস্থ্য পরীক্ষার দায়িত্বে ডাক্তার থাকার কথা থাকলেও, সিটি করপোরেশনের অনুমোদিত পশু জবাইখানায় রাতের বেলা ডাক্তারের দেখা মিলে না। অথচ বেশিরভাগ পশুই রাতের বেলা জবাই করা হয়।
সরেজমিনে দেখা গেছে, নগরীর বাগবাড়ির সিটি করপোরেশনের নির্ধারিত জবাইখানায় সব পশু জবাই করা হয় না। নগরীর বিভিন্ন স্থানে বিচ্ছিন্নভাবে নোংরা পরিবেশে পশু জবাই করে বিভিন্ন মাংসের দোকানে বিক্রি করা হয়। নিয়ম অনুযায়ী পশু জবাইয়ের আগে ভেটেরিনারি ডাক্তারের পরীক্ষার পর নির্ধারিত মৌলভী জবাই করবেন। এরপর ভেটেরিনারি ডাক্তার পশুর মাংসের গায়ে সিল মারেন। গরুর মাংসের গায়ে গরুর মাংস আর মহিষের মাংসের গায়ে মহিষের মাংস হিসেবে সিল মারার নিয়ম রয়েছে।
অভিযোগ রয়েছে, পশু জবাইকালে তা ভেটেরিনারি সার্জেন্ট, স্যানিটারি ইন্সপেক্টরসহ সংশ্লিষ্টদের পরীক্ষা করার কথা থাকলেও পশু জবাইকালে তারা উপস্থিত থাকেন না। তাদের অনুপস্থিতি কাজে লাগিয়ে মাংস ব্যবসায়ীরা অনেক সময় জবাই করছেন রোগাক্রান্ত পশু। এছাড়া মহিষ জবাই করে ব্যবসায়ীরা গরুর মাংস বলে বাজারজাত করছে। আর এসব মাংস চলে যায় নগরীর বিভিন্ন নামিদামি রেস্টুরেন্টগুলোতে। সেখানে গরুর মাংস বলে সাধারণ মানুষকে খাওয়ানো হচ্ছে দেদারছে। এতে স্বাস্থ্যঝুঁকিতে রয়েছেন নগরবাসী।
সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মো. জাহিদুল ইসলাম বলেন, আমাদের সম্পূর্ণ ‘ক্যাপাসিটি’ নেই। একটি মাত্র কসাইখানা বাগবাড়িতে হওয়ায় টিলাগড় বা আশপাশের মানুষ সেখানে পশু নিয়ে জবাই করতে চায় না। তাই বিভিন্ন স্থানে নোংরা পরিবেশে পশু জবাই করে বাজারজাত করছে। মেয়র মহোদয়ও এ বিষয়ে আলাপ করেছেন। কসাইখানা না বাড়ালেও যেটি আছে সেটিকে আরও সমৃদ্ধ করা হবে। এ ব্যাপারে শিগগিরই সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।