রমজানেও নগরীতে পানির সঙ্কট
প্রকাশিত হয়েছে : ২৪ এপ্রিল ২০২১, ১১:০০:৪৪ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার : রাত বারোটা। তখনো সিলেট সিটি করপোরেশনের পানির সংযোগে সরবরাহ শুরু হয়নি। তাই সেহরীর জন্য রান্নাবান্নার কাজও শুরু হয়নি। দেড়টায়ও দেখা মেলেনি পানির। তাই বাধ্য হয়ে কিছু জমানো পানি দিয়ে রান্নার কাজ শুরু করতে হয়েছে। এরপর পৌনে ২টায় একটু একটু করে পানি আসতে থাকে।
সোনারপাড়া এলাকার গৃহবধূ রেশমা বেগম সিলেট নগরীর পানি-সংকটের বিষয়ে শনিবার বিকেলে এসব কথা বলেন। তিনি জালালাবাদকে আরো বলেন, প্রায়ই পানির অভাবে তাদের নাকাল হতে হয়। পানির সংকটের কারণে তিনি অন্য এলাকায় চলে যাওয়ার কথা ভাবছেন।
মাছিমপুর এলাকার গৃহকর্মী খায়রুন্নেসা বলেন, তাদের এলাকায় পানির তীব্র সংকট রয়েছে। একই এলাকার ফারুক আহমদ ও হাজী আব্দুল আহাদ নামের দুইজন সমাজহিতৈষী ব্যক্তি প্রতিদিন বিকেলের দিকে তার ব্যক্তিগত উদ্যোগে গভীর নলক‚প থেকে স্থানীয়দের পানি সরবরাহ করেন। এতে পানির সংকট কিছুটা হলেও দূর হয়েছে।
চলছে রমজান মাস। একদিকে করোনার বিধিনিষেধ, অন্যদিকে গরম। এর মধ্যে মহানগরীতে দেখা দিয়েছে পানির তীব্র সংকট। এতে ঘরবন্দি বিভিন্ন এলাকার মানুষ পড়েছে চরম ভোগান্তিতে। সংকটের জন্য সিসিকের ব্যর্থতাকেই দোষছেন বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দারা।
এদিকে সিটি করপোরেশন রমজান মাসে পানি সরবরাহ স্বাভাবিক রাখার ঘোষণা দিলেও সে প্রতিশ্রæতি রক্ষা হয়নি। দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ পানির সঙ্কট। কিছু এলাকায় ২/১ ঘণ্টা পানি থাকলেও ইফতার ও সেহরীর সময় অনেক জায়গায় পানি থাকছে না। আবার কিছু এলাকায় একদিন পরপর পানি সরবরাহ করা হচ্ছে। ভ‚গর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় অনেক স্থানে নলক‚পেও পানি উঠছে না। এর ফলে নগরীতে পানি সঙ্কট বর্তমানে তীব্র আকার ধারণ করেছে। পাড়া-মহল্লার বিভিন্ন গলিতে বিকেল কিংবা ইফতারের পর চোখে পড়ছে পানির জন্য লম্বা লাইন।
নগরীর মাছিমপুর, শিবগঞ্জ ও সোনারপাড়া উপশহর (আংশিক) এবং ঝালোপাড়া এলাকার অধিবাসীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, রমজানের শুরু থেকেই এসব এলাকায় পানির চরম সংকট চলছে। সকালে ঘুম থেকে উঠে কলে পানি পাওয়া যায় না। দুপুরের দিকে কিছু সময়ের জন্য পানি এলেও বিকেলে পানি পাওয়া যাচ্ছে না। আবার কোথাও ইফতারের সময় পানি পাওয়া গেলেও সেহরির সময় থাকে না। ফলে যেখানে পানির সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে সেখানে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে লোকজন পানি সংগ্রহ করছেন।
সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বিধায়ক রায় চৌধুরী জালালাবাদকে বলেন, নগরবাসীর চাহিদামতো সিটি করপোরেশন পানি সরবরাহ করতে পারছে না, এটা সত্য। তবে একটি প্রকল্পের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে, এটি শেষ হলে নগরীতে পানির সমস্যা অনেকটাই দূর হবে।