সিলেটে নারীসহ মানবপাচারের অভিযোগে গ্রেফতার ৪
প্রকাশিত হয়েছে : ২২ মে ২০২১, ৮:২০:১১ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার : সিলেটে নগরীতে মানবপাচারের অভিযোগে নারীসহ ৪ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এদের মধ্যে একজন মানবপাচারকারী ও তিনজন অপহরণকারী। শনিবার সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের পক্ষ থেকে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য নিশ্চিত করা হয়।
গ্রেফতারকৃতরা হলো, সুনামগঞ্জের দিরাই থানার কাদিরপুর গ্রামের শামীম আহমদের স্ত্রী রেবা বেগম ওরফে সুমি ওরফে মীম (৩০), দোয়ারাবাজার থানার মাছিমপুর গ্রামের কালা মিয়ার ছেলে জাহাঙ্গীর আলম (৩৩), এয়ারপোার্ট থানাধীন বাদামবাগিচা এলাকার ১নং রোডের ৬৩নং বাসার সেলিম মিয়ার ছেলে শাহেদ আহমদ (৩৩) ও খাসদবির এলাকার বন্ধন বি/২৩ নং বাসার মৃত রফিক মিয়ার ছেলে ইমন আহমদ (৩২)।
এর আগে শুক্রবার রাতে নগরীর বাদামবাগিচা এলাকা থেকে মানবপাচারের অভিযোগে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়।
এসএমপি’র প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, প্রায় ৪ বছর পূর্বে নগরীর ঘাসিটুলা থেকে ১৬ বছরের এক কিশোরীকে বেড়াতে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে ভারতের চেন্নাইয়ে নিয়ে যায় পান্না বেগম (৪০) নামের এক প্রতিবেশী। চেন্নাইয়ে নিয়ে ওই কিশোরীকে জোরপূর্বক পতিতাবৃত্তি করার জন্য ভারতীয় লোকজনের কাছে বিক্রি করে দেয়া হয়। এরপর থেকে টানা দুই বছর সে ভারতের চেন্নাইয়ে বাধ্য হয়ে পতিতাবৃত্তিতে জড়িয়ে পড়তে হয় কিশোরীকে। সেখানে থাকাবস্থায় রেবা বেগম ওরফে মীম (৩০) এর সাথে তার পরিচয় হয়। একপর্যায়ে বছর দুই আগে ভারতের এক লোকের সহায়তায় ভিকটিম চেন্নাই থেকে পালিয়ে কলকাতা হয়ে বাংলাদেশে আসে। মীমের সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক থাকায় সে দেশে এসে তার সাথে গ্রামের বাড়ি চলে যায়। পরে মীম কিশোরীকে আশ্বস্ত করে তার গ্রামের বাড়িতে তাকে পৌঁছে দিবে। কিন্তু মানব পাচারকারী মীম (৩০) ভিকটিমকে কৌশলে তার গ্রামের বাড়ি থেকে সিলেটের বাদাম বাগিচার একটি বাসায় নিয়ে আসে। ওই বাসায় কিশোরীকে জিম্মি করে তাকে নানারকম শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে পতিতাবৃত্তিতে বাধ্য করে।
এক পর্যায়ে ভিকটিম নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে গত ৮ ফেব্রæয়ারী রাতে মীমের বাসা থেকে পালিয়ে হাউজিং এস্টেট এলাকায় চলে আসে। সেখানে সিএনজি চালিত অটোরিকশা চালক রুবেল (২৯) এর নিকট সহায়তা চাইলে সে তাকে তার এক আত্মীয়ের বাড়িতে নিয়ে যায়। সেখান থেকে অন্য এক সিএনজি চালক মামুন (২৬) এর সহায়তায় ভিকটিম বর্তমান ফরহাদ আহমদ (২৬) এর বাসায় আশ্রয় গ্রহণ করে। এরপর গত ২০ মে রাত ৮টা ৫০ মিনিটে জোর পূর্বক অপহরণকারীরা ছোরার ভয় দেখিয়ে আশ্রয়দাতা ফরহাদ আহমদকে অপহরণ করে একটি সিএনজি অটোরিকশা করে বাদামবাগিচা ব্রিজ সংলগ্ন এলাকায় নিয়ে যায় এবং ফরহাদের কাছে ৫০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবী করে।
বিষয়টি জেনে ফরহাদের স্ত্রী ৬ হাজার টাকা আরেক সিএনজি চালক আনোয়ারের মাধ্যমে টাকা দেয়ার জন্য গ্রেফতারকৃত মিশু আহমদ (৩৩) নিকট পাঠায়। একপর্যায়ে ফরহাদ বাধ্য হয়ে অবশিষ্ট ৪৪ হাজার টাকা পরে দেয়ার কথা জানালে গ্রেফতারকৃতরা ফরহাদ আহমদের সমস্ত কথা মোবাইল ফোনে ভিডিও করে রেখে তাকে ছেড়ে দেয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করে এয়ারপোর্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাইনুল ইসলাম জাকির বলেন, পুলিশ অভিযান চালিয়ে মানবপাচারকারী দলের সদস্য মীম ও অপহরণকারী চক্রের আরও ৩ সদস্যসহ মোট ৪ জনকে গ্রেফতার করে। এ ঘটনায় কিশোরী ভিকটিম ও ফরহাদ আহমদ থানায় পৃথক দুটি অভিযোগ দায়ের করেছেন।