বিয়ানীবাজারে মোবাইল নেটওয়ার্ক নিয়ে ভোগান্তিতে ১০ গ্রামের মানুষ
প্রকাশিত হয়েছে : ২৫ মে ২০২১, ৭:৪৯:৪৬ অপরাহ্ন
বিয়ানীবাজার প্রতিনিধি: প্রযুক্তির এ যুগে পৃথিবীকে হাতের মুঠোয় নিয়ে এসেছে মোবাইল ফোন। মোবাইল ফোনে হাতে থাকার পর যদি থাকেনা নেটওয়ার্ক, কেমন লাগে তখন? সেই নেটওয়ার্কের খুঁজে কখনো রাস্তার পাশে, কখনো বা টাওয়ারের নিচে জটলা বেঁধে মোবাইল ব্যবহার করতে দেখা যায় মুড়িয়া ইউনিয়নের পূর্ব মুড়িয়া অঞ্চলের মানুষদের।
জানা যায়, দীর্ঘ দিন থেকে মোবাইল নেটওয়ার্ক বিড়ম্বনায় ভোগছেন পূর্ব মুড়িয়া ইউনিয়নের ১০ টি গ্রামের মানুষ। একটি উচ্চ বিদ্যালয়, দুটি মাদ্রাসা ও ৮ টি প্রাথমিক বিদ্যালয় নিয়ে এলাকায় বসবাস করেন অর্ধ লক্ষাধিক মানুষ। বিদ্যুৎ চলে গেলেই নূন্যতম নেটওয়ার্ক পাওয়ার সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে এই এলাকা। ডিজিটাল যুগে এসে মোবাইল নেটওয়ার্ক না থাকায় ইন্টারনেট থেকে অনেকটা বিচ্ছিন্ন সেখানকার মানুষ। মোবাইল সিম অপারেটর কোম্পানি, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষসহ বিভিন্ন দপ্তরে যোগাযোগ করা হলে কোন সুফল মেলেনি ।
এই এলাকার ব্যবসায়ী আব্দুল বাছিত সিলেট শহরে বসবাস করেন, ঈদের ছুটিতে বাড়িতে এসেছিলেন। মোবাইল নেটওয়ার্কের বিড়ম্বনায় অতীষ্ট তিনি। তিনি জানান, কয়েকমাস থেকে এই সমস্যা চলছে তবে এ ব্যাপারে যথাযথ কর্তৃপক্ষকে জানানোর পরও মিলছে না সমাধান।
একই কথা বলেন উপজেলা মৎসজীবীলীগ সভাপতি আব্দুল হাসিব। তিনি জানান, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের মাধ্যমে এখন প্রায় সবকিছু পরিচালিত হচ্ছে অথচ এই এলাকার তরুণরা নেটওয়ার্কের কারণে এটি থেকে বঞ্চিত।
সরেজমিনে পুরো পূর্ব মুড়িয়া ঘুরে জানা যায়, রবি এবং গ্রামীণফোনের একটি করে টাওয়ার। সীমান্তবর্তী এলাকা হওয়ার কারণে ঠিকমতো মোবাইল সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন এই এলাকার মানুষ। হঠাৎ বিদ্যুৎ চলে গেলে মোবাইলে আর কোন সিগনাল থাকে না। টাওয়ার থেকে একটু দূরে গেলে নেটওয়ার্কের ইমার্জেন্সি মুড চলে আসে মোবাইল ফোনে। ঘরে বসে তো আর কথাই বলা যায় না। দুর্ভাগ্যবশত কোন দুর্ঘটনা ঘটলে কীভাবে যোগাযোগ করবেন সেই শঙ্কায় ভোগেন স্থানীয়রা। প্রতিবেদক যখন টাওয়ারটির কাছে যান, সেখানে তখন জেনারেটর দিয়ে টাওয়ার চলছিলো। জেনারেটর অপারেটর তরুণের সাথে কথা বলে জানা যায়, কয়েকবার এখান থেকে তাদের ব্যাটারি চুরি করে নিয়ে যায় চোরচক্র, এ কারণে বিদ্যুৎ না থাকলে তারা ১০ কিলোমিটার দূরে বিয়ানীবাজার পৌরশহর থেকে এসে সার্ভিস দেন।
গ্রাহকের ভোগান্তির কথা স্বীকার করেন রবির সেলস সেকশনের এরিয়া ম্যানেজার জাহিদ হাসান, তবে তিনি তার কাজের মধ্যে বিষয়টি না থাকায় এবিষয়ে কথা বলতে অপারগতা প্রকাশ করে টেকনিক্যাল সেকশনের ম্যানেজার অনুপের নম্বর দেন। তবে তার দেয়া নম্বরে যোগাযোগ করা হলে সেটি বন্ধ পাওয়া যায়।
নাম না প্রকাশ করার শর্তে রবির উচ্চপদস্থ এক কর্মকর্তা জানান, ইতিমধ্যে এই এলাকায় টাওয়ার থেকে তিনবার ব্যাটারিসহ মালামাল চুরি হয়ে গেছে, যে কারণে বিদ্যুৎ চলে গেলেই নেটওয়ার্ক চলে যায়। এখন পাহারাদার নিয়োগের মাধ্যমে নতুন করে ব্যাটারি লাগানো হবে।