কোটি কোটি টাকা গচ্ছার পর শিক্ষার্থীদের ইউনিক আইডি কার্যক্রম স্থগিত
প্রকাশিত হয়েছে : ২৬ মে ২০২১, ১১:০১:২৫ অপরাহ্ন
♦ অভিভাবকদের স্বস্তি ♦ ৩দিনে সিটি কর্পোরেশনে কয়েক হাজার আবেদন
স্টাফ রিপোর্টার:
কোভিড-১৯ পরিস্থিতির কারণে শিক্ষার্থীদের ইউনিক আইডির ফরম পূরণ ও ডাটাএন্ট্রির কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে। শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া শেষ না হওয়া পর্যন্ত ও স্কুল না খোলা পর্যন্ত এ কার্যক্রম স্থগিত ঘোষণা করেছে ব্যনবেইস। সেই সাথে গত কয়েকদিন ধরে শিক্ষার্থীদের ইউনিক আইডির ফরম পূরণে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংগ্রহে অভিভাবকদের ছোটাছুটির অবসান হলো। ডিজিটাল জন্মনিবন্ধন, রক্তের গ্রুপ, মৃত্যু সনদ সংগ্রহে সিলেট সিটি কর্পোরেশন ও স্থানীয় কাউন্সিলরের অফিস, সদর ইউপজেলা ইউনিয়ন পরিষদ অফিসে ছুটেছেন তারা। হাজার হাজার টাকা খরচ করেও কাঙ্খিত সময়ের মধ্যে পাচ্ছে না প্রয়োজনীয় কাগজ অভিযোগ অভিভাবকদের। অবশেষে এই প্রকল্পের কার্যক্রম স্থগিত হওয়ায় স্বস্তির নিঃশ^াস ফেলেছেন তারা।
বুধবার দুপুরে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ও আঞ্চলিক উপপরিচালকদের সঙ্গে আইইআইএমএস প্রকল্পের কর্মকর্তাদের সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। বিষয়টি জানিয়ে এরইমধ্যে আদেশ জারি করা হয়েছে।
এদিকে, ইউনিক আইডির ফরম পূরণ ও ডাটাএন্ট্রির কার্যক্রম স্থগিত হওয়ায় অভিভাবকদের মধ্যে স্বস্তি দেখা দিয়েছে। ইউনিক আইডির তথ্যছক পূরণের দিক নির্দেশনা না থাকায় বিড়ম্বনায় পড়তে হয়েছে অভিযোগ অনেক অভিভাবককে। প্রজ্ঞাপণে ভোটার আইডি কার্ড থাকলে জন্ম নিবন্ধনের প্রয়োজন নেই বলে উল্লেখ করা হলেও স্কুল থেকে পাঠানো নোটিশে ৫ ও ৭ নাম্বার পয়েন্টে পিতা মাতার জন্মনিবন্ধনের ফটোকপি দিতে বলাহয়। এছাড়া, ডিজিটাল জন্ম নিবন্ধন নিয়েও বিপাকে পড়তে হয় অভিভাবক শিক্ষার্থীদের। ভোটার আইডি কার্ড থাকা সত্ত্বেও অনেক অভিভাবককে ডিজিটাল জন্মনিবন্ধন কার্ডের জন্য ভিড় জমান সংশ্লিষ্ট দপ্তরে। মাত্র ১০ থেকে ১৫ দিনের নোটিশে যাবতীয় তথ্য সংগ্রহ করে জমা দেয়ার নির্দেশনা দেয়া হয়। তড়িঘড়ি করে এসব কাগজপত্র আনতে গিয়ে বাড়তি টাকা দিয়েও বিড়ম্বনায় পড়তে হয় অভিভাবকদের।
ব্লুবার্ড স্কুলের এক অভিভাবক নামপ্রকাশ না করার শর্তে বলেন, গত ৯ মে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারদের নির্দেশনা দেয়ার পর স্কুলগুলো থেকে পর্যায়ক্রমে এসএমএস আসে তথ্যছক পূরণ করে বিদ্যালয়ে জমা দেয়ার জন্য। চার পৃষ্ঠার এই ফরমে অনেক তথ্য রয়েছে। যার মধ্যে শিক্ষার্থীদের ডিজিটাল জন্মনিবন্ধন দিতে বলা হয়েছে। আমার ছেলের জন্মনিবন্ধন কাগজের। ডিজিটাল নিবন্ধনের জন্য সিটি কর্পোরেশন গেলে তারা জানায় ২০০০ সালের পরে যাদের জন্ম হয়েছে তারা পিতা মাতা উভয়সহ জন্মনিবন্ধন নিতে হবে। তাই বাধ্য হয়ে তিনজনের আবেদন করতে হয়েছে।
প্রকল্প পরিচালক অধ্যাপক শামসুল আলম স্বাক্ষরিত আদেশে বলা হয়, আইইআইএমএস প্রকল্পের মাধ্যমে শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ শেষ না হওয়ায় এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাঠদান কার্যক্রম শুরু না হওয়ায় তথ্যছক পূরণ ও ডাটাএন্ট্রির কার্যক্রম আপাতত স্থগিত রাখার জন্য অনুরোধ করা হলো।
এতে আরও বলা হয়েছে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাঠদান কার্যক্রম শুরুর পর তথ্যছক পূরণের সময়সীমা পরবর্তীতে জানানো হবে।
সিলেট সিটি কর্পোরেশন সূত্র জানায়, গত রোববার থেকে এই ৩দিনে কয়েক হাজার আবেদন জমা পড়েছে। মঙ্গলবারেই আবেদন জমা পড়েছে প্রায় ১ হাজার। আবেদনকারীদের উপচে পড়া ভীড় সামলাতে হিমশিম খেতে হয় কর্তৃপক্ষকে।
এব্যাপারে সিলেট সিটি কর্পোরেশনে প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. জাহিদুর রহমান চৌধুরী বলেন, গত কয়েকদিনে প্রচুর আবেদন জমা পড়েছে। সময় কম হওয়ায় আমাদের কর্মকর্তারা রাত জেগে এমনকি গতকাল বন্ধের দিনও অফিস করেছেন।