কোম্পানীগঞ্জে পল্লীবিদ্যুতের রিডিং জালিয়াতি
প্রকাশিত হয়েছে : ২৮ জুন ২০২১, ৯:০২:৪৪ অপরাহ্ন
কোম্পানীগঞ্জ প্রতিনিধি: সিলেট পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এর আওতাধীন কোম্পানীগঞ্জ জোনাল অফিসের গায়েবি বিলে দিশেহারা গ্রাহকরা। মিটারের ব্যবহৃত ইউনিটের চেয়ে বিলের কাগজে প্রায় ৫শত ইউনিটের ব্যবধান। এমন বিলে বিস্মিত ও দিশেহারা সবাই। উপজেলার ভোলাগঞ্জ, পাড়ুয়া, নোয়াগাঁও, বুধবারী বাজার, রাজনগরসহ বিভিন্ন গ্রামে এমন গায়েবি বিদ্যুৎ বিল দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন গ্রাহকরা। তবে পল্লী বিদ্যুতের দাবি এমন ঘটনা হবার নয়। ভুলে এমনটি হতে পারে।
গ্রাহকরা জানিয়েছেন, জুন মাসের বিদ্যুৎ বিলে প্রায় প্রতিটি গ্রামে মিটারের রিডিং এর চেয়ে কাগজে বেশি লেখা হয়েছে। ভোলাগঞ্জ গ্রামের মুর্শেদ আলম জানান, তার একটি বাসায় প্রায় দেড়মাস থেকে মেইন সুইচ বন্ধ রয়েছে। মেইন সুইচ বন্ধ থাকা এই মিটারে ২ মাস থেকে অস্বাভাবিক বিল আসছে। মে মাসে বিদ্যুৎ বিলের কাগজে ২৩ হাজার ৮শ ইউনিট দেওয়া হয়েছে এবং জুন মাসে দেওয়া হয়েছে ২৪ হাজার ৩শ ৫ ইউনিট। কিন্তু ২৬ জুন পর্যন্ত ঐ মিটারে ২৩ হাজার ৭শ ৭৮ ইউনিট ব্যবহার হয়েছে। পাড়ুয়া উজান পাড়া গ্রামের মোহাম্মদ আলী জানান, তার মিটারে ২৪৮ রিডিং থাকলেও কাগজে ৩৫৫ রিডিং লেখা হয়েছে। প্রতি মাসে তার ২০-৩৫ ইউনিট আসে। কিন্তু জুন মাসে তাকে ১২০ ইউনিটের বিলের কাগজ দেওয়া হয়েছে।
উত্তর রনিখাই ইউনিয়নের বনপুর গ্রামের মো. শফিকুর রহমান ১৭ জুন কোম্পানীগঞ্জ জোনাল অফিসের ডেপুটি ম্যানেজার বরাবর একটি অভিযোগ দায়ের করেন, যে তার নামে ২টি পল্লী বিদ্যুৎ মিটার আছে। যার হিসাব নং ৪৭৭-২৮৯০ চলতি বছরের এপ্রিল মাসে ব্যবহৃত ১৯৩০ ইউনিটের বিল পরিশোধ করেন। মে মাসে ১৯৯৫ ইউনিট লিপিবদ্ধ হয়েছে। জুন মাসে ২০৬৫ ইউনিট লিপিবদ্ধ হলেও ১৬ জুন পর্যন্ত ১৯৭৯ ইউনিট ব্যবহার হয়। একই বছরের আরেকটি হিসাব নং ৪৭৮-১৪৬০ মিটারের এপ্রিল মাসে ব্যবহৃত ১৯৭০ ইউনিট এর বিল পরিশোধ করেছেন। পরে মে মাসের এই মিটারে ২০১০ ইউনিট এবং জুন মাস পর্যন্ত ২০৫৫ ইউনিট লিপিবদ্ধ হলেও ১৬ জুন পর্যন্ত ১৯৯১ ইউনিট মিটারে বিদ্যমান পাওয়া যায়। তা ছাড়া তিনি অভিযোগে আরো উল্লেখ করেন, অফিসের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি অত্র এলাকার বিদ্যুৎ বিল নির্ধারিত সময়ে গ্রাহকদের নিকট না দিয়ে এলাকার কিছু দালালদের কাছে বিল ফরম জমা রেখে যান। দালালগন যথাসময়ে গ্রাহকের নিকট না দিয়ে নির্ধারিত মেয়াদের পরে বিল পৌছাইয়া দেয়। এতে গ্রাহকগণ আর্থিক অপচয়ের স্বীকার হন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কোম্পানীগঞ্জ পল্লী বিদ্যুতের কর্মচারী জানান, প্রতি মাসে এ ধরনের ৪০-৫০ টি গায়েবি বিল থাকে তবে এ মাসে একটু বেশি হয়ে গেছে। কোম্পানীগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের ডিজিএম সিরাজুল ইসলাম বলেন, মিটারের চেয়ে কাগজে রিডিং বেশি হওয়ার কথা না। এমনটি হলে কেউ অভিযোগ দিলে যে রিডিং লিখে আনে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
সিলেট পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এর জিএম প্রকৌশলী সঞ্জীব কুমার রায় বলেন, মিটারের রিডিং এর চেয়ে কাগজে বেশি লেখার কোন সুযোগ নেই। এমনটি হলে মিটারের ছবি ও বিলের কাগজ অফিসে নিয়ে আসলে তা সমাধান করে দেওয়া হবে। মাঠ পর্যায়ে যিনি রিডিং সংগ্রহ করেন তিনি কি তার দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করছেন এমন প্রশ্ন করলে তিনি এর কোন উত্তর দেননি। তবে তিনি বলেন এটি ভুলবশত হতে পারে।