প্রস্তুতি’র অভাবে সিলেটে হচ্ছে না শিক্ষার্থীদের টিকা!
প্রকাশিত হয়েছে : ০১ নভেম্বর ২০২১, ৪:০০:১৫ অপরাহ্ন
অপেক্ষায় ৩ লাখ ৪৩ হাজার শিক্ষার্থী
অনিবন্ধিত স্কুল কার্যক্রমের বাইরে
মামুন পারভেজ: প্রস্তুতি নেই তাই সিলেটে আজ থেকে শুরু হচ্ছে না ১২ থেকে ১৭ বছর বয়সীদের টিকা কার্যক্রম। টিকা দেয়ার নির্দেশনা আসলেও কোনো ধরণের প্রস্তুতি না থাকার কারণে টিকা কার্যক্রম শুরু করা যাচ্ছে না বলে জানিয়েছে সিলেট বিভাগীয় স্বাস্থ্য অফিস। এখনো ঠিক হয়নি কেন্দ্র। ফাইজারের টিকা দিতে প্রয়োজন শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত, নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ সম্বলিত বিশেষায়িত কেন্দ্র। এসব কোনটাই প্রস্তুত হয়নি। তাই সিলেটের শিক্ষার্থীরা সহসাই পাচ্ছেন না ভ্যাকসিন।
এদিকে, গতকাল শিক্ষার্থীদের তালিকা পাঠানোর শেষ দিনে সিলেট বিভাগের সিলেট, হবিগঞ্জ ও মৌলভীবাজারের প্রায় ৩ লাখ ৪৩ হাজার শিক্ষার্থীর তালিকা শিক্ষা মন্ত্রনালয়ে প্রেরণ করা হয়েছে। জেলা শিক্ষা অফিস সূত্রে জানায়, ডিজিটাল জন্ম নিবন্ধন জটিলতার কারণে অনেক শিক্ষার্থীর তালিকা পাঠানো সম্ভব হয়নি। আবার অনেকের নিবন্ধন না থাকা সত্ত্বেও তালিকা পাঠানো হয়েছে।
এখনো সুনামগঞ্জের তালিকা প্রস্তুত করতে পারেনি জেলা শিক্ষা অফিস। সিলেটের প্রায় ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ শিক্ষার্থীর তালিকা পাঠানোর বাকি রয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়। সেই তালিকা শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের জাতীয় সুরক্ষা অ্যাপে ডাটা ইনপুট দেয়া হবে। তারপর শিক্ষার্থীরা সুরক্ষা অ্যাপে নিবন্ধন করে টিকা নিতে পারবেন।
এর আগে ২৩ অক্টোবর শিক্ষার্থীদের তালিকা পাঠানোর শেষ তারিখ থাকলেও তা দিতে পারেনি সিলেটের শিক্ষা অফিস। তারপর আরো ১ সপ্তাহ বাড়িয়ে ৩১ তারিখ পর্যন্ত সময় দেয়া হয়। সিলেট, হবিগঞ্জ ও মৌলভীবাজার জেলা শিক্ষা অফিস সূত্র জানায়, সিলেট জেলা ও মহানগরের ১ লাখ ৯২ হাজার ১৫৯ জন, যার মধ্যে ১ লাখ ৬২ হাজার ৮৬৯ স্কুলের শিক্ষার্থী ও মাদ্রাসার ২৯ হাজার ২৯০ জন, হবিগঞ্জে ৫৮ হাজার স্কুলের শিক্ষার্থী ও মাদ্রাসার ১২ হাজার জন, মৌলভীবাজারের ৬৮ হাজার জন স্কুল শিক্ষার্থী ও মাদ্রাসার ১২ হাজার জনের তালিকা পাঠানো হয়েছে। কয়েকটি উপজেরার তালিকা না পাওয়ায় সুনামগঞ্জের তালিকা তৈরি করতে পারে নি জেলা শিক্ষা অফিস।
এখানো প্রায় ৩০ শতাংশ শিক্ষার্থীর তালিকা বাকি রয়েছে। তালিকায় এমপিও ও ইআইএন নম্বর প্রাপ্ত স্কুলের শিক্ষার্থীদের নাম দেয়া হয়েছে। এছাড়া, নন এমপিও ও বেসরকারি স্কুলের শিক্ষার্থীরা এই কার্যক্রমের বাইরে থাকছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়। নামপ্রকাশ না করার শর্তে সিলেট বিভাগীয় স্বাস্থ্য অফিসের কর্মকর্তা বলেন, সিলেটে ১২ থেকে ১৭ বছর বয়সীদের টিকা খুব সহসাই হচ্ছে না। কেননা এখনো পর্যন্ত সেন্টার ঠিক করা হয়নি। তারপর, সেন্টার ঠিক হলে সেন্টার টিকা দেয়ার জন্য প্রস্তুত করতে হবে। আপনারা জানেন ফাইজারের টিকা নির্ধারিত তাপমাত্রায় দিতে হয়। এসব কিছুই নিয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। ১ নভেম্বর থেকে টিকা দেয়ার নির্দেশনা আছে, তবে প্রস্তুতি না থাকার কারণে টিকা কার্যক্রম শুরু করা যাচ্ছে না।
এখনই সিলেটের শিক্ষার্থীদের টিকা দেয়ার ব্যাপারে কোন সিদ্ধান্ত হয়নি বলে জানান সিলেটের বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য) ডা. হিমাংশু লাল রায়। প্রস্তুতির ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের টিকা বিষয়টা একটা প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে আসবে। তালিকা পাঠানো হয়েছে, তারপর তা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে আইসটি মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে সুরক্ষা অ্যাপেই যাবে। তারপর নিবন্ধন প্রক্রিয়া শুরু হবে। এটা একটা সময়সাপেক্ষ ব্যাপার, তাই খুব সহসাই শুরু হচ্ছে না শিক্ষার্থীদের টিকা কার্যক্রম।
সিলেট জেলা শিক্ষা অফিসার এ এসএম আবদুল ওয়াদুদ বলেন, আমরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ করে মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করেছি। এখন শিক্ষা মন্ত্রণালয় যেভাবে নির্দেশনা দেবে আমরা সেভাবে কাজ করবো। তথ্য প্রেরণ একটি চলমান প্রক্রিয়া। আমরা পর্যায়ক্রমে অন্যান্য শিক্ষার্থীদের তথ্য সংগ্রহ করে প্রেরণ করবো। অনলাইনে নিবন্ধিত ছাড়াও আমরা তালিকা পাঠাচ্ছি। কেননা শিক্ষার্থীদের বড় অংশের জন্মনিবন্ধন অনলাইনে করা হয়নি। তাই যাদের নিবন্ধন হয়নি তারা পর্যায়ক্রমে নিবন্ধনের আওতায় এনে টিকা দেয়া যাবে।