সাম্প্রতিক ভাবনা
প্রকাশিত হয়েছে : ২৪ এপ্রিল ২০২২, ৫:৩২:৪৯ অপরাহ্ন
সালেহ আহমদ খসরু
ছয়-চার-বাইশ তারিখে স্থানীয় একটি দৈনিক পত্রিকা দু’টি সময়োপযোগী কলাম ছেপেছে – এক,পাকিস্তান অপরটি শ্রীলঙ্কার রাজনৈতিক অবস্থা নিয়ে। ইমরানের পাকিস্তান সম্পর্কে লিখতে গিয়ে তাঁর রাষ্ট্রের সেনাবাহিনী, গণতন্ত্রহীনতা, দুর্নীতি সবই চলছে সেখানে গণতন্ত্রের আবরণে তা লিখাটিতে স্পষ্ট। এবং ইমরান আজ না হোক, কাল অথবা কালের আবর্তে যে একজন আলোচিত জাতীয়তাবাদী নেতায় রুপান্তরিত হবেন সেই আশাবাদ আছে। সাথে ইমরানের শিশুতোষ আচরণ আছে বলেও ইঙ্গিত করতে ছাড় দেন নি লেখক। এমন বিষয়বস্তু পাঠে আমার মন বলেছে রাষ্ট্রবিজ্ঞান নিয়ে লেখকের ভাবনার অন্ত নেই বটে কিন্তু রাজনীতির চালবাজ যে একজন তুখোড় রাজনৈতিক খেলোয়াড় হতে হয় তাঁর লেখায় সেই ধারণার কোথায় যেন ছেঁদ পড়েছে, এমনও হতে পারে এটি আমার দূরদৃষ্টির অভাব। সে যাক, তা নিয়ে আমার ভাবনায় ইমরানের পাকিস্তান অথবা বিজ্ঞ লেখকের কি’বা আসে যায়।
অপর কলামটি শ্রীলঙ্কার পারিবারিক শাসনতন্ত্রের যাতাকলে নিষ্পেষিত একটি সুন্দর সাবলীল রাষ্ট্র কেমন করে আজ দৈন্যদশায় নিপতিত হয়ে হাহাকার করছে তার উল্লেখ করতে গিয়ে বিশ্লেষণ করা হয়েছে। নিকুচি করি পাকিস্তান কিংবা শ্রীলঙ্কার, অথচ আমার দেশে একই রুপ যে চলমান তার নুন্যতম ইঙ্গিত করা হয়নি। কারণ কী? তল্পিবাহকতা! না-কি নির্লিপ্ততা! সেটিও বোধগম্য হয়নি। কারণ যতোই নিকুচি করি আর তাচ্ছিল্য ভাব দেখাই প্রতিবেশী কিংবা নিকট প্রতিবেশী নিয়ে তার প্রভাবের ঢেউ যে আছড়ে পড়বে না আমার বুকে সে-ই গ্যারান্টি কে দিবেন? লেখক! আমি! অথবা অন্যেরা কেউ!! না-কি ভয় চেপে ধরেছে মন ও মননশীলতার উজ্জ্বল নক্ষত্রে নভোচারীদের! জানি না কোন সে দৈত্য চেপে ধরছে!
শ্রীলঙ্কা ৫১ হতে ৬৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের ঋণের চাপে ব্যার্থ অথচ আমাদের ৪৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ছোয়ার প্রবণতার দ্বারপ্রান্তে, তাহলে কতোদুর মধুপুর! দুঃখিত, দুখুপুর আর কতোদুর! না, দুখু পুর কোন্ দেশে জানি না। তবে দুখের সাগরে নিমজ্জিত হতে আমাদের আর ক’মাইল পেরুতে হবে তাই নিয়ে কলম চলতে কেন বাধা বা আপত্তি সেইটি ভেবেই আমি ক্ষুব্ধ ও ব্যাথিত। অবশ্য পাকিস্তানের সমস্যা বা কলম্বোর রাজপথে বিদ্রোহ বিক্ষুব্ধ জনতার সেই আহাজারি মাতম নিয়েও কথা বলতে আমার কলম নয়। বরং আমার দেশের গণতন্ত্র(!), মেগা প্রজেক্ট, বাহারি যাদুঘর, প্রশাসনের দামী গাড়ি ক্রয়, বাঘ গুনতে দেশ কী পটল গুনছে কি-না! কিংবা বালিশ কেনা থেকে পুকুর খনন দেখতে বিদেশ যাওয়ার কারসাজি চালু করে দুর্নীতি, তথা রাষ্ট্রের সব অঙ্গে এর ভয়াল বিস্তার যে প্রলয়ঙ্কারী বাঁধ ভাঙা জলোচ্ছ্বাসের রুপ নিয়েছে তা নিয়ে এইসব মহান কলম সৈনিক কেন যে কালির ফোঁটায় আঁচড় কাটেন না, তাই নিয়ে আমার আফসোস।
যদি-বা কালির আঁচড় কেটে থাকেন কোন বিদগ্ধজন কিন্তু তাই নিয়ে পত্রিকার সম্পাদক তাঁর কাগজে কেন যে চিত্রটি ব্যাপকভাবে তুলে ধরেন না তা আমার অন্তরে কষ্ট বাড়ায়। এবং নেহায়েত কতেক সম্পাদক মহোদয়কে সাম্পান ওয়ালা ছাড়া আর কিছুই ভাবতে পারছিনা বলে আমার প্রাণ নিজেই নিজের প্রতি চরম মতদ্বৈধতা সৃষ্টি করে। সাম্পানওয়ালা যেমন ঘাটে ঘাটে তরী ভেড়ায় ও ফেরি করে হাটবাজারে, তেমনি তাঁদের কেউ আজ বিক্রিত পণ্যসামগ্রী কি-না তা ভেবে উৎকন্ঠিত মন। বিশেষ করে জাতীয় ক’টি আলোচিত দৈনিক যাদের প্রতি মানুষের প্রত্যাশা বিস্তর। হ্যাঁ মতদ্বৈধতা হয়-আছে-থাকবে, কারণ ঐ সকল গুরুত্বপূর্ণ স্থানে একসময় কালজয়ী মানিক মিয়া যিনি মুসাফির নামে লিখতেন সেই তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া একুশে পদক প্রাপ্ত হন ১৯৭৬ সালে পদক দেয়া শুরুর প্রাক্কালে। মঞ্চ নেপথ্যে কলামের স্পষ্ঠভাষী নামে কলাম লেখক যিনি ১৯৭৭ সালে একুশে পদক প্রাপ্ত হন তিনি খন্দকার আবদুল হামিদ, ১৯৭৮ সালে একুশে পদক প্রাপ্ত শহিদ সিরাজউদ্দীন হোসেন, মাওলানা আকরাম খাঁ, মাহবুবুল আলম চৌধুরী, ভাষা সৈনিক শিক্ষক প্রাবন্ধিক একুশে পদক প্রাপ্ত আবদুল গফুর, ১৯৯১ সালে একুশে পদক প্রাপ্ত ফয়েজ আহমেদ( মধ্যে রাতের অশ্বারোহী), এ বি এম মুসা ( একুশে পদক ১৯৯৯) বা আশি নব্বই দশকে গেদু চাচার কলাম, কবি সম্পাদক আল-মাহমুদ, শফিক রেহমানের যায়যায়দিনে মিলা-মঈনের টেলি কথন সহ বহু ছদ্মনামের দেশপ্রেমিক সম্পাদক-কলামিস্ট পত্রিকার উপসম্পাদকীয় কলামে কিংবা সাপ্তাহিক পত্রিকা ম্যাগাজিনে আগুন ছড়াতেন।
স্বর্ণালি বর্ণালী ও রক্তাক্ত একাত্তর পূর্বে অগনতান্ত্রিক ও ব্যাসিক ডেমোক্রেসির পাকিস্তানি সরকার ছিল, হাল আমলের তথাকথিত গণতান্ত্রিক সরকার ছিলো না, তাহলে স্বাধীনতার পর অবনমন কার হলো! অথবা বিক্ষুব্ধ মন জানতে চায় কেন হলো!
পাঞ্জাবী বা পশ্চিমা স্বৈরশাসনে শাসিত দেশের মানুষ সেই একাত্তর পূর্বে হাঁপিয়ে ওঠে। কিন্তু সেইসময় বলতে তেমন শোনা যায়নি যে, দুর্নীতি দুর্নিবার হয়ে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান ঋণের বোঝায় জর্জরিত হয়েছে! হতে পারে তথ্য সমৃদ্ধ আজকের দুনিয়ার মতো এতোটা হাতের মুঠোয় ছিলোনা পৃথিবী যে, হুট করে জেনে যাওয়া যেত কোথায় কি হচ্ছে। কিন্তু বাজার অর্থনীতিতে দুর্নীতির প্রভাব তেমন ছিলোনা বলেই মানুষের পেট পুরে খাবারের অভাব থাকতো না, কাজের খোঁজে হন্যে হয়ে এধারওধার ছুটোছুটি করতে হয়নি সাধারণের। তাই বলে একেবারেই অভাব ছিলোনা বলতে গেলে সত্যের অপলাপ হবে। এদেশে ছয়ত্রিশের মন্বন্তর যেমন হয়েছে ষাটের মঙ্গা পীড়িত দক্ষিণাঞ্চলও নাড়িয়ে দিয়েছে তৎকালীন রাষ্ট্রের অনুভূতি। তাই রাষ্ট্রকে তাঁর দায়িত্ব পালন করতে দেখেছে মানুষ এবং ধনাঢ্য পরিবারের অধিকাংশ অসহায়দের পাশে দেখা গেছে। সেইদিন পেঁয়াজের বাজার চকবাজারে অস্থির হয়েছে বলে ‘অনলে পুড়ে ছাই হচ্ছে মানুষ’ এই বলে শিরোনাম করেছে পত্রিকার পাতা। শুধু তাই নয় এর যোগসূত্র বের করে আড়াই টাকার অস্থির বাজারকে আবার চার পয়সায় নামিয়ে তবে ক্ষান্ত হয়েছেন সেই বীর কলামিস্ট গন। ( সুত্র ঃ তৎকালীন দৈনিক সংবাদ ও দৈনিক ইত্তেফাক) সেদিনের সম্পাদক মহোদয় গন পাকিস্তানের রক্ত চক্ষু উপেক্ষা করতে মোটেও কুণ্ঠিত হন নি।
আবার স্বাধীনতার অব্যবহিত পরেই তেমনি দেখেছি বাসন্তীর গতর ঢাকা জাল। চুয়াত্তরের দুর্ভিক্ষের চিত্র-সে নিজের চোখেই দেখেছি, অনুভব করেছি পরতে পরতে। লবনের কেজি দু’শ পঞ্চাশ হতে তিন শতো টাকা ছাড়িয়ে গেছে, চাল কেনা দুঃসাধ্য ছিলো, মাছমাংস সবুজ সবজি কল্পনার ফানুস উড়াবারও ফুরসৎ মেলেনি তখন। তাই ভয় হয়, অনাকাঙ্ক্ষিত চিত্র আবার না পেয়ে বসে প্রিয় স্বদেশ জুড়ে। না হলে আমার কী দায় পড়েছে এসব নিয়ে লিখতে! কারণ এই সেদিন প্রথম আলো লিখেছে দেশে গত চৌদ্দ বছরে এক লক্ষ সাত হাজারের মতো নতুন কোটিপতি হয়েছেন, তখনও অমন কোটিপতি সদ্য স্বাধীন দেশে জন্ম নিয়েছিল। বঙ্গবন্ধুকে বলতে শুনেছি -“গাজী গোলাম মোস্তফা, সাড়ে সাত কোটি বাঙালির কম্বল আমি এনেছি, আমারটা কোথায়! ডানে চোর বায়ে চোর, মানুষ পায় সোনার খনি, আমি পেয়েছি চোরের খনি”। কোটিপতি হবেন-হোক সকলে, সেখানে কোন প্রশ্ন নেই। জিজ্ঞাসা সেখানে যে, কি পরিমাণ অর্থ নিলেন আমাদের বুক চিরে আপনারা ক’জন বিত্তশালী হবেন বলে! প্রশ্ন ও দায় ওখানেই, তাই কোন বিদুষী কলম চালান আর না-ই চালান আমার মতো বিদ্রোহী মন কলমের কালি দিয়ে রঙের দ্রোহ যদি না ছড়িয়ে দেই তবে আমি স্বদেশীও নই, নিদেনপক্ষে এ মাটির কেউ বলে দাবি করি কী করে! কলম আমার, ছাপানো না ছাপানোর দায় আপনার। এবং ছাপার পরে যদি আক্রমণ আসে তবে মোকাবেলা আমার, হ্যা একেবারেই দায়িত্ব আমার।
ক’দিন আগে এক সুজন সাংবাদিক আমাকে তাঁর আম্বরখানা বাজারে হৃদয় বিদারক অভিজ্ঞতার কথা বলছিলেন। এক মাঝ বয়সী মহিলা এসে তাকে কিছু সাহায্যে করতে বলেন। সঙ্গত কারণেই হোক আর নিদেন অবহেলায় হোক তিনি না বোধক ভুমিকা নিলেন। অত:পর মহিলা বললেন- না, আমি টাকা চাইছিনা, আমাকে সামান্য চাউল কিনে দিন, আজ তিন দিন সন্তানসন্ততি নিয়ে না খেয়ে আছি- আমার টাকা লাগবে না। অশ্রু নদী তখন মহিলার চোখে কেমন বাণ ডেকেছিল জানিনা- আমার শুনে ও লিখতে গিয়ে নিষ্ঠুর রাষ্ট্রের কথা মনে হয়েছে। তখন অনুজ প্রতিম সাংবাদিক ভাই আর থেমে থাকেন নি, বরং চাল কিনে দিয়ে কিছু স্বস্তি ও দুঃখ নিয়ে বাসায় ফেরেন। তিনি তাঁর পত্রিকার পাতায় সেই দুঃখ নানান কারণে ছাপতে অপারগ সেটি ইনিয়েবিনিয়ে আমায় বুঝিয়েছেন। সেদিন ছিলো বাসন্তী, আজ হয় শ্রাবন্তি নচেৎ রহিমা বা কুলসুমা ছিলো হয়তো সে বোনের নাম। কিন্তু বিশ্বাস করুন এই বর্ণনা দিতে গিয়ে আমার অশ্রু নদী নয় বরং রক্ত নদী বইয়ে দিতে ইচ্ছে হয়! ডাকতে মন চায় – জাগো বাহে জাগো, কুন্ঠে বাহে!!? এবং একই সময়ে এই সিলেটের বাজারে কতো বাহারি ঝলমলে আলোর মাঝে চলছে কতেক কোটিপতি বা লক্ষপতির কেনাকাটার ধুমধাম ড্রামের বিট, কোনটা আমার বাংলাদেশ!? আম্বরখানার অশ্রু নদী না-কি শপিংমলের আলোর ফোয়ারা!? দার্শনিক ড. সলিমুল্লাহ খান বলেছেন- “আমাদের দেশ শুধু নব্বই ভাগ মুসলমানের দেশ নয়,বরং নব্বই ভাগ গরীবেরও দেশ এবং সে কথাও কেউ বলছেনা” তাঁর এই একটি দার্শনিক মন্তব্যে নিয়ে শতাধিক পৃষ্ঠা লেখা যায়, তাই সেটি আজ নয় অন্য কোনদিন। এবং তা নিয়ে লিখতে হলে পত্রিকার পাতায় ঠাঁই যেমন হবে না, একইভাবে স্থান সংকুলানও হবে না।
রমজান মাসে সিলেটের বাজারে গরু মাংস ৭০০-৫০ টাকা,সোনালী মোরগ ২৯০-৩২০, তেল ১৬০-৬৫,সবুজ সবজি ৬০/৭০ টাকার নীচে নয়, আলুর কেজি বিশের বিষ ছড়াচ্ছে, পেঁয়াজের অনলে পুড়ে ইতিমধ্যেই ছারখার মানুষ। ত্রিশের নীচে যায়না পেঁয়াজ, কতদিন দম ধরে শ্বাস নিয়ে আবার লাফ দিয়ে পঞ্চাশ পেরুতে ছটফট করে-এরমধ্যে ডাবল সেঞ্চুরি করেছে ক’বার। এই ছটফটানি মানুষের হৃদরোগ বাড়িয়ে দেয় বলেই কি-না ইদানীং ডাক্তার মশাইয়ের চেম্বার যতোখানি না ব্যস্ত তারচেয়ে অনেক বেশি লাইন দেখা যায় ফার্মেসী নামক ফার্মে সাধারণের লাইন। খোঁজ নিয়ে জানি – বুকের ব্যাথাকে গ্যাস্ট্রিকের ব্যাথা মনে করে লোকজন ফার্মেসীতে গিয়ে বলে- ডাক্তর সাব, না খাওয়া পেটে হয়তো গ্যাস জমে বিষ ছড়াচ্ছে, দিন না একটু গ্যাস্ট্রিকের ট্যাবলেট! তা-ও পুরো এক পাতা নয়, পাঁচ কি’বা ছয়টি বড়ি কেনেন, ব্যাথা উপশম হবে কি-না তা নিশ্চিত না হয়ে বরং আগামীকাল বাজারে কোন্ আগুনের লেলিহান শিখা জ্বলবে সেই বেদনার আগাম আশঙ্কায় ধুকতে ধুকতে বাড়ি যান। কেউ যদিবা প্রেসক্রিপশন নিয়ে আসেন তবে তাঁর অধিকাংশ এক সপ্তাহের ঔষধ নিয়ে ভাবতে থাকেন আপাতত বাঁচা গেল। না, ঐ ফার্মেসিতে ঔষধের আকাল নয় বরং ঔষধের দামের লাগামহীন ঘোড়া যেন দাপিয়ে বেড়াচ্ছে মানুষের জীবন-মরণ।
শুরু করেছিলাম পাকিস্তান শ্রীলঙ্কা নিয়ে অন্য দুই বিদগ্ধ কলামিস্টের কলমের সুত্র ধরে। তাঁদের সাথে দ্বিমত যেমন আছে, তেমনি বহু বিষয় বিবেচনা করলে একমত না হয়ে যাই কোথা! উপমহাদেশের সুখদুঃখ আমাকে এড়িয়ে যায় না এবং তাইতো অভিমানে হোক আর মতদ্বৈধতা সৃষ্টি হয়েছে বলে হোক আমার কলমতো কালি ছড়াতে চাইবে, দেশ নিয়ে মানুষ নিয়ে।
এ-ও বুঝতে অক্ষম নই, এই কালির ফোঁটা অসুরের স্বর্গধারনকারী মসনদে কোন দাগ কাটবে সেই আশা আমি অন্তত করছিনা। কিন্তু এক ফোঁটা দু’ফোটা করে একদিন প্লাবন হবে সেই আশাবাদ হতেই লিখি এবং এই প্রয়াস জাগিয়ে তুলুক সকল প্রাণ সেই আকাঙ্খা আমার তীব্র।
তাইতো যাদের দিকে তাকিয়ে রই আমার মতো ষাটোর্ধ তরুণ, সেই অবিনাশী তারুণ্যে দেখি না।
মাঝেমধ্যে চোখ পড়ে, আবার যেন তিমিরে হারায়। তবে কি বাঁশিওয়ালার ডাক নেই, অথবা সেই বংশীবাদক আজও তৈরি হয়নি! বড় সাধ জাগে মনে আমি যেন কোন নিশুতি তাঁরা ভরা রাতে সেই বাঁশি শুনে ঘর হতে কদম ফেলি একটি ভোরের পানে, এ আমার সাধ এ আমার অভিলাষ।
ফার্মেসির ‘ডাক্তর’ সাহেবের ব্যাথার উপশমের বড়ি যেন মানুষের মন ও দেহে কোন অনাহুত উপসর্গ তৈরি না করে বরং প্রিয় স্বদেশ তাঁর নতুন প্রজন্মের হাত দিয়ে যেন নতুন দিগন্ত উন্মোচিত করে সেই কাফেলায় শরীক হতে উন্মুখ সাদামাটা মানুষ।
ফুটুক আলো মুছে যাক অমানিশার ঘোর অন্ধকার, সকলের জন্যে একটি সুন্দর সাবলীল জীবন তেমন দিনের অপেক্ষায় বাংলাদেশ।