আল বিদা মাহে রমজান
প্রকাশিত হয়েছে : ২৭ এপ্রিল ২০২২, ১২:৩৬:৫২ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার: রহমত, মাগফিরাত ও নাজাতের এই পবিত্রতম দিনগুলো শেষ হয়ে যাচ্ছে কিন্তু আমরা কী অর্জন করলাম। তা-ই এখন হিসাব নিকাশের পালা। রাসূল (সা:) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি রমজান মাস পেল অথচ নিজের গুনাহগুলো মাফ করাতে পারলো না তার চেয়ে হতভাগা আর কেউ নাই।’ রমজানের শেষ পর্যায়ে এসে তাই আমাদের পর্যালোচনা করা দরকার ঈমান ও ইহতিসাবের সাথে রোজা রাখতে পেরেছি কি না। রোজা থেকে কতটুকু ফায়দা আমি নিতে পেরেছি।
মানুষ অপরাধ করলে শাস্তি দেয়া হয়। উদ্দেশ্য এ শাস্তিকে ভয় করে সে যেন আর এরকম অপরাধ না করে। অনুরূপভাবে তাকওয়ার গুণ শিখানোর জন্য আল্লাহ রোজা ফরয করেছেন। দীর্ঘ এক মাস আমরাও প্রচেষ্টা চালিয়েছি, রোজা রেখেছি। এখন প্রশ্ন হলো: পানাহার ইত্যাদি ত্যাগ করে দীর্ঘ একটি মাস রোজা রাখার পরও যদি তাকওয়ার গুণাবলী তৈরি না হয় তাহলে ঐ রোজা কতটুকু কাজে আসবে।
আল্লাহ বলেছেন, ‘আমি কুরআনকে বুঝা সহজ করে দিয়েছি, আছো কি কোন গবেষক?’ এ রমজান মাসের মর্যাদা, শবে কদরের মর্যাদা আল কুরআনের কারণেই। আমরা অনেক চেষ্টা সাধনা করে জীবনের সফলতার জন্য অনেক কিছু করে থাকি। কিন্তু পবিত্র কুরআন বুঝার জন্য কোন প্রকার চেষ্টাই করি না। এই কুরআন নাযিলের পবিত্র মাসে পবিত্র কুরআন শিক্ষা ও বুঝার জন্য সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হবে।
আল্লাহ রাব্বুল আলামীন সূরা আল বাকারাতে বলেছেন, এই কুরআন মুত্তাকীদের জন্য হেদায়াত। মুত্তাকী তারাই যারা কুরআন থেকে হেদায়ত পেতে চায় এবং এ আকাঙ্খা থেকেই তারা কুরআন অধ্যয়ন করে। কুরআন নিশ্চয়ই তাদেরকে সঠিক ও সত্য পথ সিরাতাল মুসতাকীমের পথ প্রদর্শন করবে। কিন্তু যারা হেদায়াত পাবার উদ্দেশ্যে পড়বে না তারা হেদায়াত পাবে না। যেমন পাশ্চাত্য জগতে অনেক পন্ডিত ব্যক্তি মুসলমানদের সম্পর্কে জানা, কুরআন সম্পর্কে জানা অথবা কোন গবেষণার জন্য অথবা মুসলমানদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের কৌশল তৈরির জন্য কুরআন পড়লে নিঃসন্দেহে কুরআন তাদের হেদায়াত দিবে না, সত্য পথের সন্ধান পাবে না।
এই রমজান মাস কুরআন নাযিলের মাস। কুরআনের কারণেই এ মাসের মর্যাদা হাজার মাসের চেয়েও উত্তম হয়েছে। আর কুরআনকে যতদিন মুসলমানরা আঁকড়ে ধরেছিল ততদিন তারা সফল হয়েছিল। কেউ তাদের পদানত করতে পারেনি। এজন্য কুরআন মুসলিম জাতির বেঁচে থাকার দলীল। এ রমজানে আমরা কুরআনকে যেভাবে পড়েছি, রমযান শেষে বাকী দিনগুলোতে কুরআনকে বুঝা, মানা ও প্রতিষ্ঠার জন্য প্রচেষ্টা চালাতে হবে।
কুরআন শিক্ষার মাধ্যমে দুনিয়া ও আখেরাতে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করা যায়। উসমান রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসূলুল্লাহ সা. আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘তোমাদের মধ্যে সর্বোত্তম ব্যক্তি সেই যে নিজে কুরআন শিক্ষা করে ও অপরকে শিক্ষা দেয় ’ [বুখারী: ৫০২৭]।
কিয়ামতের ভয়াবহ অবস্থায় কুরআন তিলাওয়াতকারীর পক্ষে সুপারিশ করবে। এটা বিরাট সৌভাগ্যের বিষয়। আবু উমামাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত হাদীসে রাসূলুল্লাহ সা. আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘তোমরা কুরআন তিলাওয়াত কর, কারণ, কুরআন কেয়ামতের দিন তিলাওয়াতকারীর জন্য সুপারিশ করবে’ [মুসলিম: ১৯১০]।