ভারতের পতিতালয়ে বউকে বিক্রি করে টিকটকার সোহেল
প্রকাশিত হয়েছে : ২৪ মে ২০২২, ৯:৪৫:৪৪ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার : ফেসবুক ও টিকটকের মাধ্যমে নবীগঞ্জের সোহেল মিয়ার সাথে পাবনা সাঁথিয়া উপজেলার এক তরুণীর পরিচয় হয়। এ থেকে প্রায়ই অডিও-ভিডিও কলে দু’জনের কথাবার্তা হতো। এভাবে চলে যায় তিন বছর। একপর্যায়ে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। সেই সুবাদে নানা প্রলোভন দেখিয়ে ওই তরুণীকে কালকাতায় নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর সেখানে তাকে দিয়ে করানো হয় দেহ ব্যবসা। এর কিছুদিন পর ভারত থেকে আবার দেশে ফিরে দু’জন বিয়ে করে। কয়েকদিন সংসার করলেও ফের তরুণীকে কৌশলে ভারত পাচার করে দেয়া হয়। সেখানে শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়ে কৌশলে দেশে পালিয়ে এসে ওই তরুণী পাঁচ যুবকের বিরুদ্ধে মামলা করে।
মঙ্গলবার সকালে মামলার প্রধান আসামীকে ও ঘটনার মূলহোতা সোহেল মিয়া (২৫) কে মৌলভীবাজার থেকে গ্রেফতার করে র্যাব-৯ হবিগঞ্জ ক্যাম্পের সদস্যরা। সে নবীগঞ্জ উপজেলার বেতাপুর গ্রামের কিবরিয়া মিয়ার ছেলে। দুপুরে বিষয়টি নিয়ে গণমাধ্যমের কাছে ব্রিফ করে র্যাব-৯।
র্যাব-৯ হবিগঞ্জ ক্যাম্পের অধিনায়ক লে. নাহিদ হাসান জানান, টিকটক ভিডিও তৈরি করার সুবাদে সোহেল মিয়ার সঙ্গে ওই তরুণীর ফেসবুকে পরিচয় হয়। তিন বছর আগে পরিচয় থেকে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে তাদের। একপর্যায়ে মেয়েটিকে নিয়ে সাতক্ষীরার সীমান্ত পথে অবৈধভাবে ভারতে পাড়ি জমায় সোহেল। সেখানে কলকাতা শহরে প্রেমিক সোহেল তার প্রেমিকাকে দিয়ে পতিতাবৃত্তিতে বাধ্য করে। আট থেকে নয় মাস অবস্থানের পর একই সীমান্ত দিয়ে কৌশলে দেশে পালিয়ে আসে মেয়েটি। প্রেমিক সোহেলও কিছু দিন পর ভারত থেকে দেশে ফেরে। এরপর চলতি বছরের ১৩ ফেব্রæয়ারি হবিগঞ্জ আদালতে সোহেল তার প্রেমিকাকে বিয়ে করেন। কিছুদিন স্ত্রীকে নিয়ে হবিগঞ্জে নিজ বাড়িতে অবস্থান করে সোহেল। এরই মধ্যে অন্তঃসত্ত¡া হয়ে পড়ে তরুণী। এরপর আবার স্ত্রীকে ভারতে পাচার করতে পাচারকারীদের সঙ্গে যোগাযোগ করে চলতি বছরের ১৩ মে কৌশলে পাটগ্রামের দহগ্রামে পাঠায় সোহেল। দহগ্রাম থেকে ভারতে পাঠানোর সময় পাচারকারীদের একজন মোকছেদুল ইসলাম ওই নারীকে ধর্ষণ করে। ভারতে পাচারের পর ওই তরুণী বুঝতে পারেন, স্বামী তাকে আবার পাচারকারীদের কাছে বিক্রি করেছে। সেখানে শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়ে ১৫ মে পুনরায় দেশে ফিরে আসে ওই তরুণী। ফেরার পথে অপর পাচারকারী আশরাফুল ইসলামসহ পাচারকারী চক্রের সদস্যরা টাকার জন্য তরুণীকে আটক রেখে ধর্ষণ করে। অবশেষে ২১ মে সকালে সেখান থেকে কৌশলে পালিয়ে এসে লালমনিরহাট জেলার পাটগ্রাম থানায় পাঁচ যুবকের বিরুদ্ধে মামলা করেন। এরপর মামলার ছায়া তদন্তে নামে র্যাব। মঙ্গলবার গোপন তথ্যের ভিত্তিতে মৌলভীবাজার জেলা সদরে অভিযান চালিয়ে প্রধান আসামী সোহেল মিয়াকে গ্রেফতার করে র্যাব। এর আগে তিন আসামীকে গ্রেফতার করে পাটগ্রাম থানা পুলিশ।