রাইড শেয়ারিং নিয়ে সাধারণ বাইকাররা বিড়ম্বনায়!
প্রকাশিত হয়েছে : ৩১ মে ২০২২, ১১:০০:০০ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার : ব্যবসায়ী সজল আহমদ জরুরী কাজে নগরের বন্দরবাজারে যাবেন। এজন্য বাসা থেকে নিজের মোটরসাইকেল নিয়ে বের হয়েছেন। একটু দেরি হয়ে যাওয়ায় তিনি তড়িঘড়ি করছিলেন। কিছু দূর যেতেই উপশহর পয়েন্টে প্যান্ট-শার্ট পরা ভদ্রলোক এক হাত উঁচু করে তার সামনে দাঁড়ালেন। কোনো কিছু না শুনেই বলে বসলেন, ‘জিন্দাবাজার যাব। দ্রæত চলেন’, বলেই এক পা উঁচু করে সজলের পেছনের সিটে বসার চেষ্টা করলেন। সজল বললেন, আমি ‘জিন্দাবাজার যাব না, আপনি কে? এ কথা শুনে ওই ভদ্রলোক বলে বসলেন, ‘আরে ভাই আপনারাও কি সিএনজি অটোরিকশা চালকদের মতো হয়েছেন। জায়গা পছন্দ না হলে যেতে চান না।’ উত্তর বাইকচালক সজল বললেন, না জেনে হুট করে রেগে গেলেন। আমি রাইড শেয়ার করি না।
শুধু সজলই নয়, প্রতিদিন এ ধরনের বিড়ম্বনার শিকার হতে হচ্ছে নগরের সাধারণ বাইকারদের। পেছনে যাত্রী না থাকলেই রাইড শেয়ারিংয়ের বাইক ভেবে চলন্ত অবস্থায় হাত উঁচু করে দাঁড় করানো হচ্ছে তাদের। এরপর এখানে যাবেন, সেখানে যাবেন, নানা কথা বলছেন যাত্রীরা। এমন বিড়ম্বনা থেকে রক্ষা পেতে সিএনজি অটোরিকশা চালকদের মতো রাইড শেয়ারের বাইকারদের পোশাক চালু করা জরুরি বলে মনে করছেন সাধারণ বাইকাররা।
এদিকে অদক্ষ চালকদের হাতে জিম্মি দেশের রাইড শেয়ার। মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় প্রতিদিন বাড়ছে হতাহতের সংখ্যা, হুমকিতে যাত্রীনিরাপত্তা। তবে চালক অদক্ষ হলেও বেশির ভাগের হাতেই রয়েছে বৈধ লাইসেন্স। তাই বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি- বিআরটিএর কার্যক্রম নিয়েও উঠেছে প্রশ্ন।
বদরুল ইসলাম নামের এক ব্যাংক কর্মকর্তা বলেন, প্রতিদিনই অফিসে যেতে মোটরসাইকেলে চলাফেরা করেন। তিনি বলেন, রাইড শেয়ারিং অত্যন্ত প্রয়োজনীয় একটি বিষয়। রাইড শেয়ারিংয়ের কারণে অনেক মানুষ রিকশা, সিএনজি অটোরিকশা, টাউন বাসের ঝামেলা থেকে মুক্তি পেয়েছে। কিন্তু রাইড শেয়ারিং যে অর্থে ব্যবহার হচ্ছে সেটি ঠিক নয়। তার মতে, রাইড শেয়ারিং মানে আমি যেখানে যাচ্ছি, সুযোগ থাকলে অ্যাপের মাধ্যমে কাউকে নিয়ে যাব। তবে সেটা আমার ইচ্ছা ও প্রয়োজনের ওপর নির্ভর করবে। এতে কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। কিন্তু বাস্তবে দেখা যাচ্ছেÑ রাইড শেয়ারিংয়ের আওতাভুক্ত মোটরসাইকেল চালকদের বেশির ভাগই সিএনজিচালিত অটোরিকশার মতো, ফুল টাইম রাস্তায় থাকেন, মোড়ে মোড়ে দাঁড়িয়ে থাকেন, অনেকে অ্যাপ ব্যবহারও করেন না। এ অবস্থায় রাইড শেয়ারিং আর থাকল কোথায়? যদি তারা সিএনজিচালিত অটোরিকশার পদ্ধতিতেই চলতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন, তাহলে তাদের মতো নির্ধারিত পোশাক দেয়া বাঞ্ছনীয় বলে মনে করেন তিনি।
একাধিক মোটরবাইক চালক জানান, একসময়ের সিএনজি অটোরিকশা-লেগুনা চালক, বাসের হেল্পার, এখন চালায় পাঠাওয়ের বাইক। তারা সেসময় যাত্রীদের সাথে যে রুঢ় আচরণ করত, সেটা পাঠাও-উবার যাত্রীদের সাথেও করে। এতে যাত্রীরা মনে করেন, মোটরসাইকেল চালকমাত্রই এমন দুর্ব্যবহার করেন। যেটা সাধারণ শৌখিন মোটরসাইকেল চালক বা যারা মোটরসাইকেল দিয়ে রাইড শেয়ার করেন না, তাদের জন্য মানহানিকর ও অপমানজনক। যদি নির্ধারিত পোশাক থাকত, তাহলে বিষয়টি আসত না।