এখনো কাটেনি বন্যার ভয়াবহতা
প্রকাশিত হয়েছে : ০২ জুন ২০২২, ৩:২৪:১০ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার : সিলেটের নিম্নাঞ্চলে এখনো কাটেনি বন্যার ভয়াবহতা। এখনো পানিতে তলিয়ে আছে হাজার হাজার একর জমি, ফসলের মাঠ ও চারণভূমি। এখনো ডুবে আছে কয়েক হাজার চাষযোগ্য পুকুর। এ অবস্থায় অনেকটা দিশেহারা প্রান্তি এলাকার মানুষ ও খামারিরা।
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্র জানিয়েছে, সিলেট জেলায় বন্যায় ২ হাজার ১২৮ দশমিক ১৫ একর চারণভূমি প্লাবিত হয়েছে। এখনো এর বেশির ভাগ পানিতে তলিয়ে আছে। বন্যায় জেলায় ১ হাজার ৭৩৪ মেট্রিক টন খড় বিনষ্ট হয়েছে। টাকার অঙ্কে এ ক্ষতির পরিমাণ ৮৪ লাখ ৭৭ হাজার ৫০০ টাকা। বন্যায় জেলায় ২৫৮ মেট্রিক টন ঘাস বিনষ্ট হয়েছে। টাকার অঙ্কে এ ক্ষতির পরিমাণ ১২ লাখ ৯০ হাজার টাকা। বন্যায় পানিতে ডুবে এবং রোগাক্রান্ত হয়ে মারা গেছে ১৮টি গরু, ১২টি মহিষ, ৪৯টি ছাগল ও ২৬টি ভেড়া।
জেলায় মোট গরু আছে প্রায় ১২ লাখ। এর বাইরে প্রায় ২ লাখ ছাগল, ৬০ থেকে ৭০ হাজার মহিষ এবং ৬০ থেকে ৬৫ হাজার ভেড়া আছে। এর মধ্যে বন্যাকবলিত হয়েছে ১ লাখ ৬১ হাজার ২৯৫টি গরু, ৮ হাজার ৪৫৬টি মহিষ, ৩৮ হাজার ৮৮৮টি ছাগল এবং ১৬ হাজার ৯৩৭টি ভেড়া। বন্যাকবলিত হয়ে অসুস্থ হয়ে পড়া ১২ হাজার ৯৮৬টি গবাদিপশুকে প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের পক্ষ থেকে টিকা দেওয়া হয়েছে। এর বাইরে ৫ হাজার ৩০৪টি গবাদিপশুকে চিকিৎসাও দেওয়া হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, এখনো পানিতে ডুবে থাকায় জেলার নিম্নাঞ্চলে গোখাদ্যের তীব্র সংকট চলছে। কৃষক ও খামারিরা গরুসহ গবাদিপশু নিয়ে বিপাকে পড়েছেন। বন্যায় এখনো নিম্নাঞ্চল তলিয়ে থাকায় গোখাদ্য শিগগিরই সহজলভ্য হওয়ার সুযোগ তেমন নেই। তাই গোখাদ্য সংকট মোকাবিলায় স্থানীয় প্রশাসনের উচিত কৃষক ও খামারিদের সহায়তা করা।
কৃষকেরা জানিয়েছেন, গ্রামে গ্রামে কৃষকেরা শুধু কচুরিপানা খাইয়ে গরু-ছাগল বাঁচানোর চেষ্টা করছেন। তাই বন্যার পানির সঙ্গে ভেসে আসা কচুরিপানা এখন সংগ্রহ করছেন কৃষকেরা। অনেক কৃষক নিজেদের গবাদিপশু বাঁচাতে ধারকর্জ করে টাকা এনে অন্য জায়গা থেকে খড় কিনে আনছেন। গোখাদ্যের সংকটে অনেকে গরু-ছাগল বিক্রিও করে দিচ্ছেন। এ অবস্থায় গবাদিপশুর জন্য দানাদার খাবার ও খড় সরবরাহের জন্য স্থানীয় প্রশাসনের কাছে কৃষকেরা দাবি জানিয়েছেন।
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা বলেন, ‘বন্যাকবলিত এলাকায় বিস্তীর্ণ গো-চারণ ভূমি আর গবাদিপশুর আবাসস্থল তলিয়ে যাওয়ায় পর্যাপ্ত ঘাস পাওয়া যাচ্ছে না। অনেক জায়গায় খড়ও বিনষ্ট হয়েছে। তাই সংকট দেখা দিয়েছে।