প্রবাসী আয়ে বড় ‘ধাক্কা’
প্রকাশিত হয়েছে : ০১ জুন ২০২২, ৯:২৭:২১ অপরাহ্ন
এপ্রিলের তুলনায় মে মাসে রেমিটেন্স কমেছে ১৩ শতাংশ
জালালাবাদ ডেস্ক : ডলারের দাম বেঁধে দেওয়ার পর প্রবাসী আয়ে বড় ধাক্কা লেগেছে। বিদায়ী মে মাসে প্রবাসীরা ১৮৮ কোটি ডলার পাঠিয়েছেন, যা এ বছরের এপ্রিল ও গত বছরের মে মাসের তুলনায় কম। গত বছরের মে মাসে আয় এসেছিল ২১৭ কোটি ডলার। ফলে প্রবাসী আয় কমেছে প্রায় ১৩ শতাংশ।
দেশের ডলার বাজারে লাগামহীন দর বেড়ে যাওয়ার মধ্যেই বুধবার বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদনে রেমিট্যান্স প্রবাহ কমার খবর দেওয়া হলো।
জানা যায়, বিদায়ী মাসে কিছু ব্যাংক প্রবাসীদের কাছ থেকে প্রতি ডলার ৯৫ টাকার বেশি দামে কিনেছে। আর এই ডলার দেশে বিক্রি করেছে আরও বেশি দামে। এতে চাপে পড়েছে মানুষ কারণ, ডলারের দাম বেড়ে যাওয়ায় বেড়েছে ভোগ্যপণ্যের দাম। এ অবস্থায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক গত রোববার (২৯ মে) প্রবাসী আয়ে সর্বোচ্চ ৮৯ টাকা ৮০ পয়সা দর বেঁধে দেয় ব্যাংকগুলোকে। ফলে বৈধ পথে প্রবাসী আয় মাসের শেষ তিন দিনে কমে যায়।
খোলাবাজারে এখন ডলার বিক্রি হচ্ছে ৯৬-৯৭ টাকায়। বিদেশে হুন্ডিতেও ৯২-৯৩ টাকা দরে প্রবাসী আয় সংগ্রহ করা হচ্ছে। আর ৮৯ টাকা ৮০ পয়সা দর দিচ্ছে ব্যাংকগুলো। এতে বৈধ পথে প্রবাসী আয় আসা কমে গেছে।
ব্যাংকাররা বলছেন, দামের বড় ধরনের তারতম্যের কারণে বৈধ পথের চেয়ে হুন্ডিতে চলে যাচ্ছে প্রবাসী আয়। কারণ, হুন্ডিতে পাঠালে প্রতি ডলারের বিপরীতে ৯৫ টাকার কাছাকাছি দাম দেওয়া হয়। ফলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বেঁধে দেওয়া দাম আবারও পুনর্বিবেচনার সময় এসেছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, মে মাসে দেশে ১৮৮ কোটি ৫৩ লাখ মার্কিন ডলারের রেমিট্যান্স এসেছে। বাংলাদেশি মুদ্রায় বর্তমান বিনিময় হার অনুযায়ী (প্রতি ডলার ৮৯ টাকা ধরে) এই অর্থের পরিমাণ ১৬ হাজার ৭৭৯ কোটি টাকা। এ অঙ্ক আগের মাসের চেয়ে প্রায় ১২ কোটি ৫৫ লাখ ডলার কম।
এপ্রিলে রেমিট্যান্স এসেছিল ২০১ কোটি ৮ লাখ ডলার। আর আগের বছরের মে মাসের তুলনায় এবার ২৮ কোটি ৫৭ লাখ ডলার কম এসেছে। গত বছর মে মাসে প্রবাসীরা পাঠিয়েছিল ২১৭ কোটি ১০ লাখ ডলার।
চলতি বছরের জানুয়ারিতে রেমিট্যান্স আসে ১৭০ কোটি ৪৬ লাখ ডলার, ফেব্রুয়ারি ১৪৯ কোটি ৪৪ লাখ ডলার, মার্চে ১৮৫ কোটি ৮৭ লাখ ডলার এবং এপ্রিলে আসে ২০১ কোটি ৮ লাখ ডলার।
২০২১ সালের মে মাসে ২১৭ কোটি ১০ লাখ ডলার বা দুই বিলিয়ন ডলারের বেশি রেমিট্যান্স পাঠিয়েছিলেন বিভিন্ন দেশে কর্মরত প্রবাসীরা। এরপর গত ১২ মাসের মধ্যে কোনো মাসেই দুই বিলিয়ন ডলারের বেশি রেমিট্যান্স আসেনি।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সবশেষ তথ্য বলছে, মে মাসে ১৮৮ কোটি ৫৩ লাখ ডলারের মধ্যে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন পাঁচ বাণিজ্যিক ব্যাংকের মাধ্যমে রেমিট্যান্স এসেছে ২৮ কোটি ৩৪ লাখ মার্কিন ডলার। বেসরকারি ব্যাংকের মাধ্যমে রেমিট্যান্স এসেছে ১৫৬ কোটি ৮৪ লাখ মার্কিন ডলার। বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৮৪ লাখ মার্কিন ডলার। দুটি বিশেষায়িত ব্যাংকের মধ্যে একটিতে এসেছে ২ কোটি ৪৫ লাখ ৮০ হাজার মার্কিন ডলার।