ক্ষমতা অনুযায়ী সিলেটবাসীর জন্য বরাদ্দ দিব – ভারতের অর্থায়নে ৩ প্রকল্পের উদ্বোধনকালে এলজিআরডি মন্ত্রী
প্রকাশিত হয়েছে : ১২ জুন ২০২২, ১:৪৪:৩৫ অপরাহ্ন
পুরনো কারাগারকে উদ্যান করতে সহযোগিতা চাইলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী
স্টাফ রিপোর্টার : পর্দা উঠলো ভারত সরকারের অর্থায়নে ও সিলেট সিটি কর্পোরেশন বাস্তবায়িত নান্দনিক ধোপাদিঘী ওয়াকওয়ে’র। একইসাথে উন্মোচিত হলো ভারতের অর্থায়নে নগরের কাষ্টঘরে ৬ তলা বিশিষ্ট ক্লিনার কলোনী ও চারাদীঘির পাড় মজলিস আমীন স্কুলের ৬ তলা বিশিষ্ট ভবনের।
শনিবার আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এসব প্রকল্পের উদ্বোধন করেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম। এসময় উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন, ঢাকাস্থ ভারতীয় হাই কমিশনার বিক্রম কুমার দোরাইস্বামী, স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মিসবাহ উদ্দিন চৌধুরী ও সিলেট সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে এলজিআরডি মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেন, সরকারের ধারাবাহিক ও সমতার উন্নয়নে সিলেট সিটি কর্পোরেশন যথাযথ ভূমিকা রাখছে। সময়মতো প্রকল্প কাজ বাস্তবায়ন, দূরদর্শিতা, টেকসই উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণের ফলে সিলেট মহানগরবাসি নানা সুবিধা পাচ্ছেন।
মন্ত্রী বলেন, সরকার উন্নয়ন-অগ্রযাত্রায় রাজনৈতিক বিবেচনা করে না। সারা দেশে সমতা ও অগ্রাধিকার ভিত্তিতে উন্নয়ন ধারাবাহিকতা চলমান রয়েছে।
স্থানীয় সরকার মন্ত্রী বলেন, ‘সিলেট আমাকে আকৃষ্ট করে। এই সিলেটের সার্বিক উন্নয়নে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন খুবই আন্তরিক। তিনিই খুবই চমৎকার মানুষ। তার ভাই (মরহুম আবুল মাল আব্দুল মুহিত) যেভাবে একজন আলোকিত মানুষ ছিলেন। দেশের গর্ব ছিলেন, ঠিক তেমনভাবে মোমেন সাহেবও একজন গুণী মানুষ। আমার ক্ষমতা অনুযায়ী সিলেটবাসীর জন্য বরাদ্দ দিব।’ তিনি বলেন, ‘সিলেট সিটি করপোরেশনের বর্ধিত এলাকার উন্নয়নের জন্য একটা বরাদ্ধ দেওয়া হবে। এ বিষয়ে আমি মেয়র আরিফুল হক ও মন্ত্রী মোমেন এর সঙ্গে কথা বলবো। এছাড়াও বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তাঘাট মেরামতে উদ্যোগ দ্রæত নেওয়া হবে।’
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ.কে আব্দুল মোমেন এমপি বলেন, সিলেটে ভারত সরকারের এই প্রকল্পগুলো সফলভাবে বাস্তবায়ন হওয়ায় দুই দেশের সম্পর্ক আরো গভীর হয়েছে। তিনি বলেন, প্রতিবেশি রাষ্ট্র হিসেবে ভারতের সাথে বাংলাদেশে ঐতিহাসিক বন্ধুত্ব আরো এক ধাপ এগিয়ে গেল।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ভারত-মিয়ানমার-থাইল্যান্ডের মধ্যে আন্তর্জাতিক মহাসড়ক হচ্ছে। স¤প্রতি ভারত সফরকালে তিনি এ প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার কথা বলেছেন। তাদের পক্ষ থেকেও সেটি অনুমোদন দেওয়ার কথা রয়েছে। এটি হয়ে গেলে সিলেটের তামাবিল দিয়ে তিন দেশের সঙ্গে যোগাযোগ করা যাবে। এতে ব্যবসার উন্নতি হবে।
সিলেট নগরের পুরোনো কেন্দ্রীয় কারাগারকে জাদুঘরের পাশাপাশি ভেঙে উদ্যান করার জন্য স্থানীয় সরকারমন্ত্রীর সহযোগিতা কামনা করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এটি মরহুম অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের স্বপ্ন ছিল। সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারটি ঐতিহাসিক জানিয়ে তিনি বলেন, এ কারাগারে বঙ্গবন্ধু কারাবাস করে গেছেন। সিলেটের পাশাপাশি ঢাকা কারাগারকে উন্মুক্ত পার্ক করার প্রয়োজন বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ভারতীয় হাইকমিশনার বিক্রম কুমার দোরাইস্বামী বলেন, প্রতিবেশী দেশ হিসেবে বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সুসম্পর্ক রয়েছে। সিলেট ভারতের শিলং শহরের পাশাপাশি এলাকা। সিলেটের এ প্রকল্পগুলোতে ভারত অংশীদার হতে পেরে গর্ববোধ করছে। তিনি সময়মতো প্রকল্প সমূহের বাস্তবায়ন হওয়ায় সিলেট সিটি কর্পোরেশনকে ধন্যবাদ জানান।
সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী সভাপতির বক্তব্যে বলেন, সিলেটের উন্নয়নে ভারত সরকারের এই প্রকল্পসমূহ মাইলফলক হয়ে থাকবে। ধোপাদীঘি উদ্ধার ও সংরক্ষণ সংস্কারের ফলে সিলেট মহানগরের দীঘির শহরের অন্যতম স্মারক রক্ষা পেল। সিলেটের উন্নয়নে অংশীদার হওয়া ভারত সরকারকে ধন্যবাদ জানান তিনি।
কাশমির রেজা ও ফাতেমা রশিদ সাবা’র উপস্থাপনায় অনুষ্ঠানের শুরুতেই কোরআন তেলাওয়াত করেন শেখঘাট সমজিদের ইমাম ও খতিব মাওলানা মো. ছাদিকুর রহমান, গীতা পাঠ করেন শ্রী সুধাময় চক্রবর্তী, বাইবেল পাঠ করেন ফাদার ডিকন নিঝুম সাংমা এবং ত্রিপিটক পাঠ করেন শ্রী সংঘানন্দ থেরো। অনুষ্ঠানের শুরুতেই প্রকল্প সংক্ষেপ তুলে ধরেন সিসিকের প্রধান প্রকৌশলী নূর আজিজুর রহমান।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ভারতের সহকারী হাই কমিশনার নিরাজ কুমার জয়সওয়াল, সিলেট মহানগর আওয়ামীলীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মাসুক উদ্দিন আহমদ, সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক জাকির হোসেন, স্থানীয় সরকার বিভাগের যুগ্ম সচিব নূরে আলম সিদ্দীকি, সিসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বিধায়ক রায় চৌধুরী, সিলেট বিভাগীয় কমিশনার ড. মোশারফ হোসেন, সিলেট জেলা প্রশাসক মো. মজিবর রহমান ও ডিআইজি প্রিজন কামাল হোসেন প্রমুখ।
সিলেট সিটি কর্পোরেশনের কাউন্সিলরদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, কাউন্সিলর মোহাম্মদ তৌফিক বকস, কাউন্সিলর সালেহ আহমদ সেলিম, কাউন্সিলর মখলিছুর রহমান কামরান, কাউন্সিলর আজম খান, কাউন্সিলর ইলিয়াসুর রহমান, কাউন্সিলর আফতাব হোসেন খান, কাউন্সিলর রাশেদ আহমদ, কাউন্সিলর রকিবুল ইসলাম ঝলক, কাউন্সিলর আব্দুল মোনিম, কাউন্সিলর সিকন্দর আলী, কাউন্সিলর আব্দুল মুহিত জাবেদ. কাউন্সিলর তারেক উদ্দিন তাজ, এসএম শওকত আমীন তৌহিদ প্রমুখ।