আশ্রয়কেন্দ্রে মানুষের ঢল, খাদ্য ও পানির তীব্র সংকট
প্রকাশিত হয়েছে : ২১ জুন ২০২২, ৮:২৩:১৭ অপরাহ্ন
বজলুর রহমান, দোয়ারাবাজার : অতিবৃষ্টি আর ভারতের মেঘালয় থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে পানিবন্দি পুরো দোয়ারাবাজার উপজেলা। এতে বন্যার পানিতে সবকিছু একাকার হয়ে গেছে। এমন ভয়াবহ বন্যা এর আগে দেখেননি দোয়ারাবাজারের মানুষ। পানিতে সবকিছু তলিয়ে যাওয়ায় বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে পুরো উপজেলা। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, উপজেলা পরিষদ, ইউনিয়ন পরিষদ ভবন, মহাসড়কসহ উঁচু জায়গায় অবস্থান নিয়েছেন মানুষজন। শুকনো খাবার, বিশুদ্ধ পানি আর একটু আশ্রয়ের অভাবে পানিবন্দি মানুষ চরম বিপর্যয়ে পড়েছেন। ত্রাণ আর গোখাদ্যের তীব্র সংকট চলছে দুর্গত এলাকায়।
জানা যায়, ইতিমধ্যেই কমতে শুরু করেছে বন্যার পানি। তবে পানি কমলেও সহায়তা না পেলে বাড়িতে ওঠারও সুযোগ নেই অনেক মানুষের। কারণ কিছুই আর অবশিষ্ট নেই ঘরের। বন্যায় কাচাঘর-টিনের ঘর বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। নতুন করে আবারও সবকিছু শুরু করতে হবে, সেই চিন্তায় ঘুম নেই বন্যার্ত পরিবারের। সড়ক ও আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে হাজার হাজার মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন। খেয়ে না খেয়ে একেকটি দিন পার করছেন তারা। একেকটি কক্ষে নারী, শিশু, বৃদ্ধ হাঁসফাঁস করছেন, ক্ষুধায় কাঁদছে শিশুরা। মানুষ আর পশুতে মিলেমিশে একাকার। গাদাগাদি করে বাস সবার। অনেকে বাড়ির ছাদেও গবাদি পশু রেখেছেন। দেখা দিয়েছে গোখাদ্যেরও সঙ্কট।
প্রগতি হাইস্কুল এন্ড কলেজে আশ্রয় নিয়েছেন দুই শতাধিক পরিবার। সেখানে কথা হলে একাধিক মানুষ বলেন, এখানে মানুষ পশু একসাথে বাস করছি। এক রুমে আশ্রয়কেন্দ্রে মানুষের ঢল, খাদ্য ও নিরাপদ পানির তীব্র সংকট। খেয়ে না খেয়ে আছি, এখনো কোন খাদ্য সহায়তা পাইনি আমরা। পানি কমতে শুরু করলেও আমাদের ঘরবাড়ি এখনো ডুবে আছে। মনে হয়না আর ঘরে উঠতে পারব। ঢেউয়ে সবকিছু ভেঙে চুরমার হয়ে গেছে।
এদিকে, বন্যা পরিস্থিতিতে ইতিমধ্যে দোয়ারাবাজার উপজেলা প্রত্যেকটি ইউনিয়নে ৪ টন করে চাল ও শুকনো খাবার বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। সেগুলো সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মেম্বারদের মাধ্যমে বিতরণ কার্যক্রম চলমান আছে। এছাড়াও প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিভিন্ন জায়গায় ত্রাণ বিতরণ করা হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন দোয়ারাবাজার উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফারজানা প্রিয়াঙ্কা। তিনি বলেন, আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতেও আমাদের শুকনো খাবার, খাবার স্যালাইন, পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট বিতরণ অব্যাহত আছে।