রাজনগরে কুশিয়ারা পাড়ের ২৮ গ্রামের ৩০ হাজার মানুষ পানিবন্দি
প্রকাশিত হয়েছে : ২২ জুন ২০২২, ৭:২২:০৬ অপরাহ্ন
শংকর দুলাল দেব, রাজনগর : মৌলভীবাজারের রাজনগরে সপ্তাহব্যাপী বন্যায় ৩০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। গত ১৬ জুন উজান থেকে পাহাড়ী ঢল ও কুশিয়ারা নদীর পানি উপচে এসব এলাকা প্লাবিত হয়। এতে উপজেলার উত্তরভাগ ও ফতেহপুর ইউনিয়নের ২৮টি গ্রামের মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েন। উপজেলার প্রধান নদী মনুর পানি কিছুটা হ্রাস পাওয়ায় কয়েকেটি গ্রাম অশংকামুক্ত হলেও কুশিয়ারা নদীর পানি অব্যাহতভাবে বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে। এতে কুশিয়ারার আব্দুল্লাহপুরসহ বিভিন্নস্থানে ভাঙনের আশংকা রয়েছে। ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে সহস্রাধিক পরিবার।
সরেজমিনে ঘুরে ও স্থানীয় লোকজনের সাথে কথা বলে জানা গেছে, গত ১৬ জুন রাজনগরের উত্তরাঞ্চলের উত্তরভাগ ও ফতেহপুর ইউনিয়নের ২৮টি গ্রাম প্লাবিত হয়। কুশিয়ারা নদীর পানি উপচে বন্যা প্রতিরক্ষা বাঁধের বাইরে নদী তীরবর্তী এসব গ্রামে পানি ঢুকে পড়ে। এতে পানিবন্দি হয়ে পড়ে ৩০ হাজার মানুষ। টানা ৭ দিনের বন্যায় এসব এলাকার মানুষের মধ্যে খাদ্য সংকটসহ দেখা দিয়েছে পানিবাহিত নানা রোগের প্রাদুর্ভাব। দুর্গত এলাকায় রয়েছে গোখাদ্য সংকট। রামপুর গ্রামের লাল মিয়া (৫৫) ও সুনামপুর গ্রামের আলী হোসেন (৫২) জানান, তাদের মতো অনেক কৃষক নিজেদের গরু-ছাগল নিয়ে বিপাকে পড়েছেন। গোখাদ্য সংকট দেখা দেয়ায় গবাদিপশু আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে পাঠিয়ে দিচ্ছেন। অনেকে কমমূল্যে গবাদি পশু বিক্রি করে দিতে বাধ্য হচ্ছেন।
এদিকে, অব্যাহত বন্যায় মানুষের বাড়িঘর ছাড়াও প্লাবিত হয়েছে ৯টি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ২৫টি মসজিদ, ৫টি মন্দির, একাধিক কবরস্থান। দুর্গত ৪শ পরিবারের প্রায় ২ হাজার মানুষকে ৮টি আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় দেয়া হয়েছে। দুর্গত মানুষের জন্য বিভিন্ন খাদ্য সহায়তা, ওষুধ, স্যালাইনসহ বিভিন্নভাবে সহায়তা করছে উপজেলা প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ ও সামাজিক সংগঠন। এছাড়াও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের পক্ষ হতে খাদ্য সহায়তা দেয়া হচ্ছে। ৮টি আশ্রয় কেন্দ্রে এখন পর্যন্ত ৪’শ পরিবারের মধ্যে ৮’শ প্যাকেট শুকনো খাবার ও ৩০ মেট্রিক টন চাল বিতরণ করা হয়েছে। বন্যা নিরসন না হওয়া পর্যন্ত এ প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছে উপজেলা প্রশাসন।
রাজনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) বাবলু সূত্রধর জানান, এ পর্যন্ত ৪’শ পরিবারের মধ্যে ৮’শ প্যাকেট শুকনো খাবার ও ৩০ মেট্রিক টন চাল বিতরণ করা হয়েছে। বন্যা না কমা পর্যন্ত খাদ্যসহ বিভিন্ন সহায়তা অব্যাহত থাকবে। জেলা প্রশাসক দুর্গত এলাকা পরিদর্শন করেছেন এবং এ ব্যাপারে সার্বক্ষণিক খোঁজখবর নিচ্ছেন।