মালয়েশিয়ায় প্রণোদনা বাড়িয়েও বাড়ছেনা প্রবাসী আয়
প্রকাশিত হয়েছে : ০১ জুলাই ২০২২, ৭:১৯:২৪ অপরাহ্ন
মালয়েশিয়া প্রতিনিধি: বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের অন্যতম খাত রেমিট্যান্স। চার বছর ধরেই টানা বাড়ছিল রেমিট্যান্স বা প্রবাসী আয়। গত অর্থ বছরে রেকর্ড পরিমান আয় আসলেও বাস্তবে আগের বছরের চেয়ে আয় কমে গেছে। কারণ, বৈধ পথে আয় পাঠাতে খরচ আছে। আর অনানুষ্ঠানিক বা হুন্ডিতে (অবৈধ লেনদেন) আয় পাঠালে প্রতি ডলারে ৫ থেকে ৬ টাকা বেশি দেওয়া হচ্ছে। এ কারণে হুন্ডির পথে ঝুঁকছেন প্রবাসীরা। এ ছাড়া চলমান ডলারে ভিন্নতার কারণে বেড়েছে হুন্ডির দাপট। আর এ দাপটে প্রণোদনা বাড়িয়েও বাড়ছেনা প্রবাসী আয়। ২০২০-২১ অর্থবছরে দেশে ২ হাজার ৪৭৭ কোটি মার্কিন ডলার প্রবাসী আয় এসেছিল। চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরে প্রবাসী আয় কমতে পারে প্রায় ৪০০ কোটি ডলার।
বিশ্বের শীর্ষ ৩০ টি দেশ থেকে রেমিটেন্স আসা দেশের মধ্যে মালয়েশিয়া ছিল ৫ম স্থানে। মালয়েশিয়া থেকে বৈধপথে ২০২০-২১ অর্থ বছরে দেশে এসেছে ২ হাজার ২ দশমিক ৩৬ মিলিয়ন ডলার।
বর্তমানে সপ্তমে নেমে এসেছে মালয়েশিয়া। চলতি অর্থ বছরের জুলাই মাসে ১১০.৭০ মিলিয়ন, আগস্টে ৯৬.২৪ মিলিয়ন, সেপ্টেম্বরে ৮৩.৮৪ মিলিয়ন ডলার, যা গত অর্থ বছরে গড়ে পাঠানো রেমিটেন্সের তুলনায় ৪২ শতাংশ কমেছে।
সংশ্লিষ্ট খাতের বিশ্লেষকরা বলছেন, মহামারি শুরুর পর উড়োজাহাজ যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। বাণিজ্যের লেনদেন কমতে থাকে। বন্ধ হয়ে যাওয়ায় অনানুষ্ঠানিক লেনদেন। প্রবাসীরা বাধ্য হয়ে ব্যাংকে টাকা পাঠানো শুরু করেন। যার ফলে রেকর্ড পরিমাণ প্রবাসী আয় এসেছে। এখন যোগাযোগ ব্যবস্থা চালু হয়েছে, কর্মী যাওয়া বাড়ছে। ডলার আর আগের মতো সীমান্ত অতিক্রম করছে না। তাই দেশের রিজার্ভও বাড়ছে না। ব্যাংকিং চ্যানেলে পাঠানো প্রবাসী আয়ে সরকার আগে ২ শতাংশ নগদ প্রণোদনা দিত। গত ১ জানুয়ারি থেকে প্রণোদনার হার বাড়িয়ে ২ দশমিক ৫ শতাংশ করা হয়। যদিও এটি ৪ শতাংশ করার প্রস্তাব ছিল প্রবাসী মন্ত্রণালয়ের।
এদিকে সরকারি প্রণোদনা বাড়িয়েও প্রবাসী আয় বাড়ানো যাচ্ছে না। এতে দেশে তৈরি হয়েছে ডলার সংকট। ডলারের আনুষ্ঠানিক দাম ৮৬ থেকে বেড়ে ৯৩ টাকা ৫০, ৯৯ টাকা ৫০ পয়সায় উঠেছে। এর ফলে বেড়ে গেছে আমদানি পণ্যের দাম। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত অগ্রণী রেমিটেন্স হাইজের মাধ্যমে প্রবাসীরা দেশে অর্থ প্রেরণ করেছে ১৬৮.২০ কোটি টাকা।
অগ্রণী রেমিটেন্স হাউজের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও পরিচালক খালেদ মোর্শেদ রিজভী বলেন, বতর্মানে ডলারের বিনিময় হারের ব্যাপক তারতম্যের কারণে আমরা গ্রাহকদেরকে উপযুক্ত বিনিময় রেইট প্রদান করতে পারছিনা। মালয়েশিয়া থেকে গত অর্থ বছরের তুলনায় বর্তমান অর্থ বছরের এপ্রিল পর্যন্ত প্রায় ৪৯.২৮% রেমিট্যান্স কমে গেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্রবাসী বলছেন, প্রণোদনার চেয়েও বেশি টাকা পাওয়া যায় হুন্ডির মাধ্যমে। করোনার প্রভাবে টাকা লেনদেনের অনানুষ্ঠানিক সব খাত প্রায় বন্ধ হয়ে যাওয়ায় প্রবাসী আয় অনেক বেড়েছিল। ভিসা বাণিজ্য, আন্ডার ইনভয়েসের (প্রকৃত ম‚ল্য কম দেখানো) মতো অবৈধ পথ আবার চালু হয়ে গেছে। এতে এখন বেড়েছে হুন্ডি।