এবারো ভিন্ন আবহে ঈদুল আযহা
প্রকাশিত হয়েছে : ০৮ জুলাই ২০২২, ৬:৪৫:৪৯ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার : মুসলিম উম্মাহর দ্বিতীয় বৃহৎ ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল আজহা কাল রাত পোহালেই অর্থাৎ আগামী রোববার বাংলাদেশে উদযাপিত হবে। ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের ত্যাগের মহিমায় ভাস্বর এই ঈদ। এই ঈদ উৎসব করোনার গত বছর ছিলো অনেকটা ম্রিয়মান। তবে এবার করোনার ভয়াবহতা না থাকলেও বন্যার ভয়াবহতার মাঝে সিলেটে উদযাপিত হবে ঈদ।
গতবারের মতো এবারও একেবারে ভিন্ন মাত্রা ও আবহে পালিত হবে ঈদুল আজহা। বন্যার ঘাত প্রতিঘাতে ঈদ পালনের অনুষঙ্গগুলোতে ইতোমধ্যে নিদারুণ ছন্দপতন ঘটেছে। কোরবানির পশুর বাজার থেকে শুরু করে ঈদের কেনাকাটা পর্যন্ত কোথাও উৎসব নেই।
ঈদুল আজহা মুসলিম জাতির পিতা হজরত ইব্রাহিম (আ.) ও তাঁর পুত্র হজরত ইসমাইল (আ.) এর সঙ্গে সম্পর্কিত। হজরত ইব্রাহিম (আ.) স্বপ্নে আদিষ্ট হয়ে নিজের অতি প্রিয় পুত্র ইসমাইলকে (আ.) আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য কোরবানি করতে নিয়ে গিয়েছিলেন। আল্লাহর পক্ষ থেকে এই আদেশ ছিল হজরত ইব্রাহিমের জন্য পরীক্ষা। তিনি পুত্র ইসমাইলকে (আ.) আল্লাহর নির্দেশে জবাই করার সব প্রস্তুতি নিয়ে সেই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। ইসলামে বর্ণিত আছে, নিজের চোখ বেঁধে পুত্র ইসমাইলকে ভেবে যখন জবেহ সম্পন্ন করেন তখন চোখ খুলে দেখেন ইসমাইলের পরিবর্তে একটি দুম্বা (পশু) কোরবানি হয়েছে। আল্লাহর পক্ষ থেকে গায়েবিভাবে এই দুম্বা দেয়া হয়েছিল। সেই ঐতিহাসিক ঘটনার স্মৃতি ধারণ করেই পশু জবাইয়ের মধ্য দিয়ে কোরবানির বিধান এসেছে ইসলামী শরিয়তে। প্রত্যেক সামর্থ্যবান মুসলমানের জন্য পশু কোরবানি করা ওয়াজিব।
সুরা হজ্জে বলা হয়েছে, ‘এগুলোর (কোরবানির পশুর) গোশত ও রক্ত আল্লাহর কাছে পৌঁছায় না, কিন্তু তোমাদের তাকওয়া পৌঁছে যায়।’ আল্লাহর বান্দারা কে কতটুকু ত্যাগ ও খোদাভীতির পরিচয় দিতে প্রস্তুত এবং আল্লাহপাকের নির্দেশ পালন করেন তিনি তা-ই প্রত্যক্ষ করেন কেবল। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি সামর্থ্য থাকার পরও কোরবানি দিল না, সে যেন আমার ঈদগাহে না আসে (মুসনাদে আহমদ)। আল কোরআনের সুরা কাউসারে বলা হয়েছে, ‘অতএব, তোমার পালনকর্তার উদ্দেশে নামাজ পড়ো এবং কোরবানি করো।’ সুরা হজ্জে আরো বলা হয়েছে, ‘কোরবানি করার পশু মানুষের জন্য কল্যাণের নির্দেশনা।’
জিলহজ মাসের ১০, ১১ ও ১২ তারিখের যে কোনো এক দিন কোরবানি করা যায়। কোরবানিকৃত পশুর তিন ভাগের এক ভাগ গরিব-মিসকিন, এক ভাগ আত্মীয়স্বজনের মধ্যে বিলিয়ে দেওয়ার বিধান আছে। আবার পুরোটাই বিলিয়ে দেওয়া যায়। এদিকে ৯ জিলহজ ফজরের নামাজের পর থেকে ১৩ জিলহজ আসর পর্যন্ত প্রত্যেক ফরজ নামাজের পর তাকবিরে তালবিয়াহ পাঠ করা ওয়াজিব। তালবিয়াহ হলো, ‘আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, ওয়ালিল্লাহিল হামদ।’