পাহাড়ি ঢলে ভেঙে যাওয়া রাস্তায় বাঁশের সাকুই ভরসা
প্রকাশিত হয়েছে : ২৩ জুলাই ২০২২, ৭:৫১:৩৯ অপরাহ্ন
আব্দুর রব, বড়লেখা :
মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলার জনবহুল একটি এলাকার এলজিইডি রাস্তার শতাধিক ফুট স্থান ভারি বর্ষণ আর পাহাড়ি ঢলে ভেঙে গেছে। ভাঙা স্থানে বাঁশের সাকু বানিয়ে মারাত্মক দুর্ভোগ নিয়ে এলাকাবাসি চলাচল করছেন। ওই রাস্তায় চলছে না কোন যানবাহন। বন্ধ রয়েছে বিয়ে-সাদিসহ সামাজিক আচার অনুষ্ঠান। বাঁশের সাকুই এখন এলাকার ২০-২৫ হাজার মানুষের একমাত্র ভরসা।
সরেজিমেন জানা গেছে, গত ১৭ জুন ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে বড়লেখা উপজেলার বিভিন্ন এলাকা বন্যার পানিতে তলিয়ে যায়। এ সময় উপজেলার সদর ইউনিয়নের আরএইচডি বরইতলি-বড়লেখা জিসি ভায়া মুছেগুল হিনাইনগর সড়কের দক্ষিণ হিনাইনগরের বালিছড়া নামক স্থানের প্রায় ১৩০ ফুট সড়ক পানি স্রোতে সম্পূর্ণ ভেসে গেছে। এই স্থানটির পাশেই উজানের পানি নেমে যাওয়ার জন্য একটি কালভার্ট আছে। কিন্তু এই কালভার্টটি পানি টানতে পারেনি। এক সময় ঢলের পানি সড়ক ডুবিয়ে নিচের দিকে প্রবাহিত হতে থাকে। একপর্যায়ে ঢল কালভার্টের কাছে পাকা সড়কটির অংশ ধুয়েমুছে ভাসিয়ে নিয়েছে। এতে করে এই এলাকার কেরামতনগর চা-বাগান, মুছেগুল, হিনাইনগর ও কুতুবনগর এলাকার মানুষ উপজেলা সদরসহ বাইরের সাথে সড়কপথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন। এই সড়ক দিয়ে উপজেলা সদরের স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী ছাড়াও স্থানীয় বড়খলা মাদ্রাসা, মুছেগুল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও হিনাইনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা আসা যাওয়া করে। ভাঙনের অংশটি পড়েছে হিনাইনগর ও মুছেগুলের সংযোগস্থলে। সকলপ্রকার যানবাহন ভাঙনস্থলে গিয়ে আটকে যাচ্ছে।
এদিকে পানি নামার কয়েকদিন পর সাময়িক চলাচলের সুবিধার্থে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ গ্রামবাসী ভাঙনের অংশে একটি বাঁশের সাঁকো নির্মাণ করেছেন। এই সাঁকোই এখন তাদের যোগাযোগের অন্যতম ভরসা। নতুন করে স্থানটি সংস্কার না হওয়া পর্যন্ত সাঁকোই চলাচলের উপায়। এছাড়া ঢলে সড়কের পূর্ব মুছেগুল অংশে লাল মিয়ার বাড়ির কাছে একটি স্থানেরও পিচ উঠে গেছে। হিনাইনগর গ্রামের বাসিন্দা ও বড়লেখা উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক জুনেদ আহমদ বলেন, ‘সেদিন (১৭ জুন) এযাবতকালের সবচেয়ে বড় ঢল নেমেছিল। আমরা কল্পনাও করিনি ঢলে এরকম ভাঙবে। দুবছর আগেও একবার ভেঙেছিল। কিন্তু অল্প ভেঙেছিল। এবার পাহাড়ি ঢল এলাকাকে একেবারে ক্ষতবিক্ষত করেছে। মুছেগুল, হিনাইনগর, কুতুবনগর ও কেরামতনগর চা-বাগানকে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে ফেলেছে। এটি একটি দীর্ঘদিনের পাকা সড়ক। এই সড়ক দিয়ে ২০ থেকে ২৫ হাজার মানুষ চলাচল করেন।’
উপজেলা প্রকৌশলী প্রীথম সিকদার জয় জানান, দীর্ঘ বন্যায় উপজেলার ব্যাপক রাস্তাঘাট, ব্রিজ কালভার্ট ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। সংস্কারের জন্য ইতিমধ্যে ক্ষতিগ্রস্থ রাস্তা ও ব্রিজ কালভার্টের তালিকা তৈরী করে অধিদপ্তরে প্রেরণ করা হয়েছে।