বন্যার্তদের ১ হাজার ঘর নির্মাণ করে দিবে সেইফ হোম গ্রেটার সিলেট প্রজেক্ট
প্রকাশিত হয়েছে : ৩০ জুলাই ২০২২, ৭:৩৮:৫৬ অপরাহ্ন
সংবাদদাতা: সেইফ হোম গ্রেটার সিলেট প্রজেক্টের আওতায় সিলেটের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের ১ হাজার ঘর নির্মাণ করা হবে। বুধবার লন্ডনবাংলা প্রেসক্লাবে বেলা আড়াইটায় এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে আরো বলা হয়, এ প্রকল্পের আওতায় প্রাথমিকভাবে মোট চার ধাপে ২৫০টি করে নির্মিত হবে ১হাজার ঘর। পাকা বা ইটের তৈরী দেয়াল এবং চাল (ছাদ) নির্মাণ করা হবে মজবুত টিন দিয়ে। দুই রুম বিশিষ্ট আধা পাকা এ ঘরের প্রতিটি রুম এর দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ হবে ১৩ ফুট করে। আর প্রত্যেকটি বাড়িতে থাকবে বারান্দা। প্রত্যেকটি ঘরের আয়তন হবে ৪২৯ বর্গফুট। যা হবে ছোট একটি পরিবারের জন্য নিরাপদ এবং টেকসই স্থায়ী মাথা গোঁজার ঠিকানা। সেইফ হোম এর এমন একটি ঘর নির্মাণ করতে প্রয়োজন হবে মাত্র ২ হাজার পাউন্ড।
সংবাদ সম্মেলনে আরো বলা হয়, সিলেটে এ বছরের বন্যায় যে ভয়াবহ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। সরকারের নানা বিভাগ, অধিদপ্তর, জাতিসংঘের নানা সহযোগি সংস্থ্যা এবং নানা বেসরকারী দাতব্য সংস্থার তথ্য ও গবেষণা মতে সিলেট বিভাগের ৭৫% এলাকা কোন না কোনভাবে বন্যায় প্লাবিত হয়েছে। তার মধ্যে সিলেট জেলার ৮০% এবং সুনামগঞ্জ জেলার ৯০% অঞ্চল সম্পূর্ণ প্লাবিত হয়েছে। এ বছর বন্যায় ১৮টি জেলায় মোট আনুমানিক আর্থিক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে প্রায় ৮৬ হাজার ৮১১ কোটি ৬৫ লাখ ৫৯ হাজার ৮৭২ টাকা। যার ৮৫% ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে শুধু মাত্র সিলেট বিভাগে। প্রাণ হারিয়েছে ৬৫ জন। প্রায় ৭ লাখ ৭ হাজার একরের ফসল নষ্ট হয়েছে। গবাদি পশু মারা গেছে প্রায় ৩ হাজার। ৬ শতাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পাঠদানের অনুপযোগী হয়েছে। শত শত মসজিদ এবং মাদ্রাসাও সম্পূর্ণ বা আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এখনো প্রায় ১১৮টি গ্রামের অধিকাংশ মানুষ নিজ ঘরে অবস্থান করতে পারে না। আর সিলেট বিভাগে সম্পূর্ণ বা আংশিক ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে প্রায় ১০০ হাজারেরও বেশি।
তবে সংখ্যার এ হিসাব দিয়ে বৃহত্তর সিলেটে ঘটে যাওয়া এবারের ভয়াবহ বন্যার ক্ষয়ক্ষতি নিরূপন কোনভাবেই সম্ভব নয়। বহু গ্রাম বা গ্রামের অধিকাংশ নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ফলে হাজার হাজার পরিবার এমনও আছে যে তারা শুধু মাত্র ঘর হারিয়েছে এমন নয় পাশাপাশি হারিয়েছে ভিটা মাটিও ।
বৃহত্তর সিলেটের এ বছরের বন্যার ক্ষয়ক্ষতির চিত্র থেকে স্পষ্টত বুঝা যায় যে বন্যা পরবর্তী একটি কঠিন সময় পার করছে সিলেট বিভাগের প্রায় ১ কোটি মানুষ। বন্যার শুরু থেকেই টিভি ওয়ান বৃটেনের নানা বিশ্বস্ত মানবিক ও চ্যারিট্যাবল সংস্থ্যার মাধ্যমে জরুরী ত্রাণ সরবরাহ ও তা তাৎক্ষণিকভাবে ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে বিতরণের ব্যবস্থা করেছে। বর্তমানে বন্যার পানি নেমে গেলেও আকস্মিক বন্যা যে ভয়াবহ ক্ষতি করেছে তা অনুধাবন করে টিভি চ্যানেল টিভি ওয়ান এ সংকটের পুরো সময় সিলেটবাসীর পাশে থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যার ধারাবাহিতায় জমজম চ্যারিট্যাবল ট্রাস্ট এবং টিভি ওয়ান এর যৌথ উদ্যোগ ‘সেইফ হোম গ্রেটার সিলেট’।
সংবাদ সম্মেলনে জমজম চ্যারিট্যাবল ট্রাস্ট এর চেয়ারম্যান মঈন উদ্দিন চৌধুরী সভাপতিত্বে ও তৌহিদুল করিম মুজাহিদ এর পরিচালনায় কি নোট উপস্থাপন করেন টিভি ওয়ানের অপারেশন ডিরেক্টর গোলাম রাসুল। প্রকল্প বিশ্লেষণ করেন টিভি ওয়ানের ডাইরেক্টর শায়খ আব্দুর রহমান মাদানী। এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন জমজম চ্যারিটেবল ট্রাস্ট এর নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ ইউসুফ সেলিম ও মোহাম্মদ আব্দুল মুনিম জাহেদী ক্যারল।