দেশে প্রথম ‘মাদক বিজ্ঞানী’ গ্রেফতার
প্রকাশিত হয়েছে : ০৩ আগস্ট ২০২২, ৭:৫৯:০৬ অপরাহ্ন
জালালাবাদ ডেস্ক : বিদেশে লেখাপড়া করে দেশে ফিরে মাদক নিয়ে গবেষণা করছিলেন ওনাইসী সাঈদ ওরফে রেয়ার সাঈদ (৩৮)। কুশ, হেম্প, মলি, ফেন্টানলের মতো মাদকের চাষ ও বাণিজ্যিকভাবে বাজারজাতকরণের উদ্দেশ্যে তাপ নিয়ন্ত্রণ গ্রো-টেন্টও তৈরি করেছিলেন তিনি। গোপন তথ্যের ভিত্তিতে ‘মাদক বিজ্ঞানী’ সাঈদকে আটক করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। সোমবার রাতে রাজধানীর গুলশান এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করা হয়। মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ানবাজার র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান বাহিনীর লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, সাঈদ নিজে শুধুমাত্র ধূমপান ও মদে আসক্ত। কিন্তু গবেষণা করতেন বিভিন্ন নতুন প্রজাতির মাদক নিয়ে। নিজের বাসায় মাদক উৎপাদনের প্ল্যান্ট তৈরি করেন। তার ইচ্ছা ছিল নিত্যনতুন মাদক নিয়ে গবেষণার মাধ্যমে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করা। হতে চেয়েছিলেন মাদক বিজ্ঞানী হিসেবে। কীভাবে নতুন ধরনের মাদক সেবন করা যায়, তার জিনিসপত্র কী হবে সেটিও পরিকল্পনা করতেন সাঈদ। সোমবার রাতের অভিযানে সাঈদের গুলশানের বাসা থেকে ১০১ গ্রাম কুশ, ৬ গ্রাম হেম্প, ০.০৫ গ্রাম মলি, ১ গ্রাম ফেন্টানল, ১৮ গ্রাম কোকেন, ১২৩ পিচ এক্সট্যাসি, ২৮ পিচ এডারল ট্যাবলেট জব্দ করে র্যাব। পাওয়া যায় ২ কোটি ৪০ লাখ টাকা ও অন্তত ৫০ লাখ টাকার মার্কিন ডলার।
সাঈদের কাছ থেকে তথ্য পেয়ে তার মোহাম্মদপুরের একটি ফ্ল্যাটেও অভিযান চালায় র্যাব। এ সময় সেখান থেকে তাপ নিয়ন্ত্রণ গ্রো-টেন্টের মাধ্যমে বিদেশি প্রজাতির কুশ তৈরির প্ল্যান্ট ও সেটআপ জব্দ করা হয়। বাণিজ্যিকভাবে বাজারজাতকরণের উদ্দেশ্যে প্ল্যান্টটি স্থাপন করেছিলেন তিনি।
কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, আটক ওনাইসী সাঈদ ২০১৪ সাল থেকে বাংলাদেশে অবস্থান করছিলেন। কিন্তু বিদেশে তার নিয়মিত যাতায়াত ছিল। বাংলাদেশে জনপ্রিয়তা বাড়াতে নতুন ধরনের মাদক নিয়ে আসতেন। বিভিন্ন পার্টিতে ও নিজ সার্কেলে এসব মাদক ছড়িয়ে দিতেন তিনি। আমরা ফয়সাল নামে একজনের নাম জানতে পেরেছি। তিনি এলিফ্যান্ট রোডের বাসিন্দা। ২০১৬ সাল থেকে তিনি বিদেশে অবস্থান করছেন। প্রথমে থাইল্যান্ডে বসবাস করলেও বর্তমানে কানাডায় অবস্থান করছেন। তিনিই মূলত সাঈদকে বিভিন্ন ধরণের অপ্রচলিত মাদক সরবরাহ করে আসছেন।
র্যাবের এ কর্মকর্তা আরও বলেন, বাংলাদেশে নতুন মাদক এক্সট্যাসির অন্যতম মূলহোতা সাঈদ। তিনি গত প্রায় ৪ বছর ধরে এক্সট্যাসিসহ অন্যান্য উচ্চমূল্যের মাদকের কারবারের সঙ্গে জড়িত। বাংলাদেশে বেশ কয়েকজন তার সহযোগী হিসেবে কাজ করতেন। এসব মাদক তিনি পার্সেলের মাধ্যমে বিভিন্ন দেশ থেকে সংগ্রহ করতেন। পার্সেলগুলো তিনি নিকটাত্মীয়, বন্ধু-বান্ধবের নামে নিয়ে আসতেন। অবশ্য তারা কেউ এ সম্পর্কে জানতেন না। ঢাকার বিভিন্ন পার্টিতে যখন এসব মাদক সরবরাহ করতেন, যাদের মাধ্যমে পাঠাতেন তারাও জানতেন না প্যাকেটের ভেতরে কী আছে। এসব মাদকের মূল্য হুন্ডির মাধ্যমে পরিশোধ করতেন সাঈদ। দেশে তার ক্রেতা বিভিন্ন অভিজাত পরিবারের সদস্য।