অক্টোবরে ধর্ষণ ৯১ : বেশি ঢাকায়
প্রকাশিত হয়েছে : ২৭ নভেম্বর ২০২২, ৭:৫৮:১৪ অপরাহ্ন
জালালাবাদ ডেস্ক : ২০২২ সালের জানুয়ারি থেকে অক্টোবর পর্যন্ত ১০ মাসে মোট ৩ হাজার ৬৭ নারী ও কন্যা নির্যাতনের শিকার হয়েছেন বলে জানিয়েছে নারী অধিকার সংগঠন জেন্ডার প্ল্যাটফর্ম বাংলাদেশ। বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের তথ্য অনুযায়ী তারা একথা বলেন। এছাড়াও আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) বরাত দিয়ে সংগঠনটি জানায়, সবচেয়ে বেশি ধর্ষণের ঘটনা ঘটছে রাজধানীতে।
রোববার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানায় সংগঠনটি।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজ-বিলস্ এর পরিচালক নাজমা ইসলাম বলেন, শুধুমাত্র অক্টোবর মাসেই দেশে ৩৭১ জন নারী ও কন্যা নির্যাতনের শিকার হয়েছে- এর মধ্যে ধর্ষণের শিকার হয়েছে ৬২ জন কন্যাসহ ৯১ জন; তার মধ্যে ১২ জন কন্যা ও ১০ জন নারীসহ ২২ জন দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছে, ২ জন কন্যাকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে এছাড়াও ৫ জন কন্যাসহ ১০ জনকে ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়েছে। নারী ও কন্যা পাচারের ঘটনা ঘটেছে ৬৩টি- এর মধ্যে ১৮ জন কন্যা।
আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) বরাত দিয়ে নাজমা ইসলাম বলেন, ২০২২ সালের জানুয়ারি থেকে অক্টোবর পর্যন্ত এই দশ মাসে সারা দেশে ধর্ষণের শিকার হয়েছেন ৮৩০ নারী। ধর্ষণের পর হত্যার শিকার হয়েছেন ৩৯ নারী, আর এ কারণে আত্মহত্যা করেছেন ৭ জন। এ ছাড়া আর ১৪১ নারীকে ধর্ষণের চেষ্টা চালানো হয়েছে। বিশ্লেষণ অনুযায়ী, ঢাকা জেলায় সর্বাধিক ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। এরপর নারায়ণগঞ্জ, চট্টগ্রাম, গাজীপুর ও নোয়াখালী জেলায় ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে সবচেয়ে বেশি।
তিনি আরও বলেন, নারীর প্রতি সহিংসতা-নারীর মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠায় অন্যতম বাধা। এটা কোনো একক সমস্যা না। এটা বৈশ্বিক সমস্যা। পুরুষতান্ত্রিক মন-মানসিকতা পরিবর্তনের মাধ্যমে নারীর প্রতি সহিংসতা রোধ করতে হবে। নারীর প্রতি এ সহিংসতা রোধে নতুন আইন প্রণয়ন ও পুরাতন আইনগুলোকে সংস্কার করতে হবে এবং সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে। নারীদের প্রতি সমাজের নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি নারী নির্যাতনের একটি উল্লেখযোগ্য কারণ।
এখনো সমাজের চোখে নারীদের অবজ্ঞার চোখে দেখা হয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, নারীরা নির্যাতনের শিকার হলেও তা কারও কাছে প্রকাশ করতে পারে না। এমনকি অনেকে নিজের পরিবারেও বলতে পারে না। আবার কখনো কোনো নারী তার প্রতি করা সহিংসতামূলক আচরণের প্রতিবাদ করলে, বেশিরভাগ মানুষ উল্টো ভুক্তভোগী নারীকেই দোষারোপ করে বা করার চেষ্টা করে। নারী সহিংসতা হয়রানি ও নির্যাতন রোধে ৭ দফা দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন- আওয়াজ ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক নাজমা আক্তার, বাংলাদেশ লেবার ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক আশরাফ উদ্দিন মুকুট, বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতি’র সহ-সভাপতি এডভোকেট সীমা জহুর, ফেয়ারওয়্যার ফাউন্ডেশনের কান্ট্রি ম্যানেজার মো. বাবলুর রহমান প্রমুখ।