গ্যাস-বিদ্যুতের দাম নির্ধারণ করবে সরকার: গেজেট প্রকাশ
প্রকাশিত হয়েছে : ০২ ডিসেম্বর ২০২২, ৯:২৩:২৪ অপরাহ্ন
জালালাবাদ ডেস্ক : কোনো ধরনের গণশুনানি ছাড়াই বিশেষ ক্ষেত্রে গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম নির্ধারণ করবে সরকার। ‘বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (সংশোধন), অধ্যাদেশ, ২০২২’ সংশোধন করে এ ক্ষমতা নিজের কাছে নেয় সরকার। বৃহস্পতিবার অধ্যাদেশটি গেজেট আকারে জারি করা হয়। এটি অধ্যাদেশ আকারে জারি করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। এর আগে গত ২৬ নভেম্বর অধ্যাদেশের খসড়া মন্ত্রিসভায় অনুমোদন দেয়া হয়।
বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি আইন, ২০০৩-এর ৩৪-এর ক ধারা সংশোধন করে এ অধ্যাদেশ জারি করা হয়।
আইনের মূল সংশোধনে বলা হয়েছে, ‘এ আইনের অন্যান্য বিধানে যা কিছু থাকুক না কেন, বিশেষ ক্ষেত্রে সরকার প্রজ্ঞাপন দিয়ে ভর্তুকি সমন্বয়ের জন্য জনস্বার্থে কৃষি, শিল্প, সার, ব্যবসা-বাণিজ্য ও গৃহস্থালি কাজের চাহিদা অনুযায়ী এনার্জির নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ নিশ্চিত করতে এসবের উৎপাদন, এনার্জি সঞ্চালন, মজুদকরণ, বিপণন, সরবরাহ, বিতরণ এবং ভোক্তা ট্যারিফ নির্ধারণ, পুনর্র্নিধারণ বা সমন্বয় করতে পারবে।’
এর আগে বিইআরসি গণশুনানি করে বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম নির্ধারণ করত। এ অধ্যাদেশ গেজেট আকারে প্রকাশের মাধ্যমে এখন গ্যাস-বিদ্যুতের মূল্য নির্ধারণে শুনানির দরকার হবে না।
বিদ্যুৎ-জ্বালানির দাম নির্ধারণে সরকার এ ধরনের ক্ষমতা নিজে নেয়ায় ভোক্তার কাছে জবাবদিহিতার জায়গা রইল না বলে মনে করেন জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা।
জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ও বুয়েটের অধ্যাপক ম তামিম বলেন, বিইআরসির মাধ্যমে গ্যাস-বিদ্যুতের মূল্য নির্ধারণে ভোক্তার কথা বলার সুযোগ ছিল। বিইআরসি প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল মূলত ভোক্তার অধিকার রক্ষায়। এখন সরকার এ কাজের দায়িত্ব নিয়ে সরকারের জবাবদিহিতার জায়গাকে তুলে নিল। এ ধরনের আইন সংশোধনের মাধ্যমে মূলত পেছনে ফিরে যাওয়া হলো।
এর আগে বিইআরসি আইন, ২০০৩ সংশোধনে মন্ত্রিসভার অনুমোদনের জন্য পাঠানো এ-সংক্রান্ত সারসংক্ষেপে বলা হয়, বৈশ্বিক পরিস্থিতির কারণে সৃষ্ট বর্তমান বাস্তবতার নিরিখে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ ও জ্বালানির সরবরাহ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে বিদ্যুৎ, গ্যাস ও তেলের মূল্য সমন্বয় করা প্রয়োজন। অর্থনীতির গতিকে চলমান রাখার সঙ্গে নিয়মিত ও দ্রুততম সময়ে মূল্য সমন্বয়ের লক্ষ্যে বিইআরসির পাশাপাশি সরকারেরও ক্ষমতা সংরক্ষণের জন্য আইনটি সংশোধনের প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে। এ লক্ষ্যে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন আইন, ২০০৩-এর ধারা ৩৪-এর উপ-ধারা (৩) সংশোধন এবং ধারা এক সন্নিবেশিত করার প্রস্তাব করা হয়।
আগের আইনে বিদ্যুৎ, গ্যাস ও জ্বালানির দাম বিইআরসি ৯০ দিন সময় নিয়ে নির্ধারণ করত। এ প্রক্রিয়া দীর্ঘমেয়াদি উল্লেখ করে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, বিইআরসিকে একটা প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হয়, সেটি দীর্ঘমেয়াদি। সেই প্রক্রিয়াগুলোতে না গিয়ে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো পরিস্থিতি ঘটলে সরকার যেন বিশেষ পরিস্থিতিতে পদক্ষেপ নিতে পারে, সেজন্য এটি করা হলো।