সিলেটে হেক্টরপ্রতি ২ দশমিক ৬৫ টন চাল উৎপাদন
প্রকাশিত হয়েছে : ০৬ ডিসেম্বর ২০২২, ১১:২৭:২২ অপরাহ্ন
জালালাবাদ রিপোর্ট : অনাবৃষ্টির কারণে মৌসুমের শুরুতেই বাধাগ্রস্ত হয় আমনের আবাদ। এরপর এ নিয়ে বড় ধরনের আশঙ্কা তৈরি করে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং। তবে সে শঙ্কা কাটিয়ে সম্ভাবনা দেখাচ্ছে এবারের ফলন। এরই মধ্যে দেশের প্রায় সাড়ে ৬৩ শতাংশ জমির আমন ধান কাটা হয়েছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানিয়েছে, অনুকূল আবহাওয়া ও আলো বেশি থাকায় এবার হেক্টরপ্রতি চালের গড় ফলন পাওয়া গেছে ৩ দশমিক ১০ টন, যা প্রত্যাশার চেয়েও বেশি। সিলেটে এ হার ২ দশমিক ৬৫।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, এবার আমন মৌসুমে ধানের আবাদ হয়েছে ৫৬ লাখ ৫৭ হাজার ৪৪৭ হেক্টর জমিতে। এখান থেকে উৎপাদনের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছিল ১ কোটি ৫৯ লাখ ৮৬ হাজার টন। এর মধ্যে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ে মোট ৩১ জেলার ৮০ হাজার ৭৭৭ হেক্টর আমন মৌসুমের ধান আবাদি জমি আক্রান্ত হয়েছে। এর মধ্যে ৫ হাজার ৬০০ হেক্টর জমির ধান পুরোপুরি নষ্ট হয়ে যায়। অনাবৃষ্টির কারণে সব জায়গায় একই সময়ে আবাদ শুরু করা যায়নি। সব মিলিয়ে এবার উৎপাদন কমার বড় শঙ্কা তৈরি হলেও রৌদ্রোজ্জ্বল ও অনুকূল আবহাওয়ার কারণে ফলনে আগের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে যাওয়ার প্রত্যাশা করছেন কৃষিখাতসংশ্লিষ্টরা।
চাল উৎপাদনের তথ্য নিয়ে যৌথ পরিসংখ্যান করে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো ও ডিএই। সে তথ্য অনুযায়ী, ২০২১-২২ অর্থবছরে আমন মৌসুমে হেক্টরপ্রতি ফলনের হার ছিল প্রায় ২ দশমিক ৬২ টন। এর আগে ২০১৮-১৯ থেকে ২০২০-২১ অর্থবছর পর্যন্ত ফলন মোটামুটি আড়াই টনের ঘরেই ছিল।
ডিএইর ৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত হালনাগাদকৃত তথ্য অনুযায়ী, চলতি রোপা আমন মৌসুমে এ পর্যন্ত ৩৫ লাখ ৮৮ হাজার ৫৮ হেক্টর জমির ফসল কাটা হয়েছে, যা মোট জমির প্রায় ৬৩ দশমিক ৪২ শতাংশ। এসব জমিতে চাল উৎপাদন হয়েছে ১ কোটি ১১ লাখ ৩১ হাজার ৯৮০ টন। হেক্টরপ্রতি ফলনের হার ৩ দশমিক ১০ টন। এছাড়া ধানের হেক্টরপ্রতি ফলন পাওয়া গিয়েছে ৪ দশমিক ৬৫ টন। আর রোপা ও বোনা আমন মিলে হেক্টরপ্রতি চালের গড় ফলন দাঁড়ায় তিন টনের কিছু বেশি।
সিলেট ছাড়াও অন্য অঞ্চলগুলোর মধ্যে যশোরে গড় ফলন হয়েছে হেক্টরপ্রতি ৩ দশমিক ২৯ টন, ঢাকায় ২ দশমিক ৯৭ টন, ময়মনসিংহে ৩ দশমিক শূন্য ৪, কুমিল্লায় ৩ দশমিক শূন্য ৮, চট্টগ্রামে ২ দশমিক ৭৫, রাঙ্গামাটিতে ২ দশমিক ৮৩, বগুড়ায় ৩ দশমিক ২৩, রংপুরে ২ দশমিক ৯৯, খুলনায় ২ দশমিক ৯৫, বরিশালে ৩ দশমিক ২৩ ও ফরিদপুরে হেক্টরপতি ৩ দশমিক ১০ টন চাল পাওয়া যাচ্ছে।
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সাইদুর রহমান বলেন, ‘শুরুতে অনাবৃষ্টির কারণে আমন নিয়ে এক ধরনের শঙ্কা তৈরি হয়েছিল। এরপর ডিজেল ও সারের মূল্যবৃদ্ধি কৃষকদের মাঝে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। তবে শেষের দিকে আবহাওয়া ভালো থাকায় প্রত্যাশিত ফলন হয়েছে। এখন ফলনের হার বেশি থাকলেও সাধারণত সুগন্ধিযুক্ত চাল বা চিকন চাল মৌসুমের শেষের দিকে কাটা হয়। এগুলোর ফলন কম হয়। এ কারণে গড় ফলনের হার সামনে আরো কমতে পারে।’