বিশ্বনাথে প্রবাসী পরিবারে এমপির বরাদ্দ নিয়ে তোলপাড়
প্রকাশিত হয়েছে : ১১ ডিসেম্বর ২০২২, ৮:১৩:১০ অপরাহ্ন
বিশ্বনাথ প্রতিনিধি : অসহায়, গরীব অসচ্ছল পরিবারকে সরকারি টিউবওয়েল (গভীর নলকূপ) বরাদ্দ দেওয়ার কথা থাকলেও বিশ্বনাথে ঘটছে এর উল্টোটা। বিশ্বনাথের এক যুক্তরাজ্য প্রবাসী পরিবারকে এক সঙ্গে দুটি ডিপটিউবওয়েল উপহার হিসেবে দিয়েছেন সিলেট ২ আসনের সংসদ সদস্য মোকাব্বির খান। এনিয়ে গত কয়েক দিন ধরে সচেতন মহলে চলছে আলোচনা-সমালোচনা। তবে, ওই প্রবাসী পরিবারকে কোন টিউবওয়েল বরাদ্দ দেয়া হয়নি এমনটাই দাবি করেছেন স্থানীয় সংসদ সদস্য মোকাব্বির খান।
মোকাব্বির খান সাংবাদিকদের বলেন, আমি কোন প্রবাসীকে টিউবওয়েল বরাদ্দ দেইনি। একজন মহিলা ও ১০/১২জন কলোনীর অসহায় মানুষ নিয়ে আমার কাছে আসলে আমি টিউবওয়েল বরাদ্দ দেই।
জানা গেছে, মুফতিরগাঁও গ্রামের যুক্তরাজ্য প্রবাসী আবিদ আলী উরফে আকদ্দুছ আলীর চাচী আমিরুন নেছা ও তার কলোনীর ভাড়াটি মনোয়ারা বেগমের নামে দুটি টিউবওয়েল (গভীর নলকূপ) বরাদ্দ হয়। আমিরুরন নেছার নামে বরাদ্দকৃত টিউবওয়েলটি স্থাপন করা হয়েছে পৌরশহরের টিএনটি রোডস্থ প্রবাসী আবিদ আলী গংদের ৩য় তলা বাসার সামনে এবং মনোয়ারা বেগমের নামে রাদ্দকৃত টিউবওয়েলটি স্থাপন করা হয়েছে মুফতিরগাঁও গ্রামস্থ আবিদ আলীর মালিকানাধিন কলোনীতে। ওই দুটি টিউবওয়েল উৎকোচের বিনিময়ে স্থাপন করা হয়েছে এমনটাই অভিযোগ করেন আবিদ আলীর ভাগিনা ছাত্রলীগ নেতা জাকির হোসেন।
তিনি বলেন,‘স্থানীয় এক দালালের মাধ্যমে টাকার বিনিময়ে দুটি টিউবওয়েল স্থাপন করেন আবিদ আলী। এতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সরকারের ইমেজ ক্ষুন্ন হচ্ছে। বিষয়টি তদন্তপূর্ব প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে আমি এমপি সাহেবের কাছে লিখিত আবেদন করেছি।’
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, আমিরুন নেছার নামের বরাদ্দকৃত টিউবওয়েলটি প্রবাসী আবিদ আলী গংদের বাসায় স্থাপন করা হয়েছে। আর টিউবওয়েলের পানি ব্যবহার করছেন আবিদ আলীর ৩য় স্ত্রী স্বপ্না বেগম ও বাসার ভাড়াটিয়া পরিবারের লোকজন। আর মনোয়ারা বেগমের নামে রাদ্দকৃত টিউবওয়েলটি আবিদ আলীর মালিকানাধিন কলোনিতে স্থাপন কাজ চলমান রয়েছে।
এ বিষয়ে আমিনরুন নেছা জানান, তিনি এমপির কাছে একটি টিউবওয়েল চাইলে তাকে টিউবওয়েল বরাদ্দ দেওয়া হয়। কিন্ত তার বাড়িতে টিউবওয়েল এর প্রয়োজন না থাকায় তিনি টিএনটি রোডস্থ আবিদ আলী গংদের বাসায় স্থাপন করেন। আবিদ আলীর বাসায় টিউবওয়েলটি স্থাপন করার কারণ জানতে চাইলে আমিরুন নেছা বলেন, ‘তাদের বাসার পাশেই আমার দোকান ঘর রয়েছে। ভবিষ্যতে আমার ছেলেরা ওই দোকান ঘরের উপরে বাসা তৈরী করলে টিউবওয়েলের পানি আমরাও ব্যবহার করবো।’
মনোয়ারা বেগম বলেন, ‘আমি দীর্ঘদিন ধরে আবিদ আলী কলোনীতে বসবাস করে আসছি। এখানে তিনি আমাকে স্থায়ীভাবে কিছু জায়গাও দেওয়ার কথা রয়েছে। তাই আমি এমপির কাছ থেকে টিউবওয়েল বরাদ্দ পেয়েছি। এজন্য কাউকে কোন টাকা দিতে হয়নি।’
এ ব্যাপারে আবিদ আলীর ৩য় স্ত্রী স্বপ্না বেগম কোন মন্তব্য করতে অপারগতা প্রকাশ করেন।
সিলেট-২ আসনের সংসদ সদস্য মোকাব্বির খান বলেন, বিষয়টি আমি গুরুত্ব সহকারে খতিয়ে দেখব। এখানে টাকা হাতিয়ে নেয়ার কোন সুযোগ নেই। তারপরেও কেউ টাকা নিয়ে থাকলে আমি আইনীভাবে ব্যবস্থা নিব।